অনলাইন ডেস্ক : অ্যালেক্সজান্ডার। এরপর তিনি চলাফেরার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। তবে বেঁচে আসেন এখনও। ৬০০ পাউন্ড ওজনের এক লোহার ফুসফুসের সহায়তা নিয়ে তিনি সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে বেঁচে আছেন।
১৯৫২ সালে পাওয়েল অ্যালেক্সজান্ডার ঘাড়ের নিচে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়। নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরপর তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য একটি মেশিন তৈরি করা হয়। মার্চে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অর্জন করেন তিনি। লোহার ফুসফুসের সহযোগিতায় দীর্ঘ ৭৭ বছর বেঁচে থাকার কারণে তাকে এ খেতাব দেওয়া হয়। কারণ তিনিই এ প্রক্রিয়ায় বেঁচে থাকা সবচেয়ে দীর্ঘ বছর বয়সী ব্যক্তি।
১৯৪৬ সালে জন্মের পর থেকেই অ্যালেক্সজান্ডার বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যান। তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি আকারে পোলিও ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় প্রায় ৫৮ হাজার শিশু পোলিওতে আক্রান্ত হয়।
সে সময়ে অ্যালেক্সজান্ডারও আক্রান্ত হন। পরে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে লোহার তৈরি ফুসফুস মেশিনের সহযোগিতা নেওয়া হয়।
ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে একে অন্যের দ্বারা পোলিওতে আক্রান্ত হয়। পোলিওতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে অ্যালেক্সজান্ডারের স্পাইরাল কর্ডে সমস্যা দেখা দেয়। এরপর আস্তে আস্তে তার শ্বাস প্রশ্বাসেও সমস্যা ধরা পড়ে।
যদিও ১৯৫৫ সালে মার্কিন প্রশাসন পোলিও ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেন। এছাড়া দেশটিতে ১৯৭৯ সালে পোলিও মুক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ায় তা হয়েছে।
এরপর থেকেই মেশিনের সহযোগিতা নিয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের কাজ চালাচ্ছেন পাওয়েল। তার গলা থেকে পা পর্যন্ত মেশিনটি দ্বারা ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এই মেশিনের কারণে তাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে তার দেখার পরিধিও সীমিত।
অবস্থার ফলে অ্যালেক্সজান্ডারের কোনো বন্ধু নেই। কেউ তার বন্ধুও হতে চায় না। ডাক্তাররা যখন বলে তার বেঁচে থাকা উচিত নয়, তার মরে যাওয়া উচিত। এতে তিনি অনেক দুঃখ পান।
এমন পরিস্থিতিতে তিনি লেখা পড়াও চালিয়ে গেছেন। স্কুল ডিগ্রি শেষ করে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিও নিয়েছেন। তিনি বলেন, তার বেঁচে থাকার মনোবলই তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।
সূত্র: এনডিটিভি