সোনা কান্তি বড়ুয়া : বিশ্ববৌদ্ধ স¤প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা! “কালের কপোল তলে শুভ্র সমুজ্জ্বল! জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক, অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করুক। বিশ্বব্যাপী সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনাই বৌদ্ধদের মৈত্রী ভাবনা। মনে মৈত্রী করুণ রস, বাণী অমৃত পদ। জনে জনে হিতের তরেপড়েন সত্যের সন্ধানে বৌদ্ধ সাহিত্য! বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বৈশাখ মাসের এই পূর্ণিমা দিবসে মহামানব বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের এ দিনে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন, ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে জগতে বুদ্ধ নামে খ্যাত হন এবং ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়।
২৬০০ বছর পূর্বে বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাস জুড়ে গৌতমবুদ্ধ বিরাজমান। আশি বছর বয়সে পরম পূজনীয় গৌতমবুদ্ধ মহাপরিনির্বান লাভ করলেন। পূজনীয় বুদ্ধের ভাষায়, ‘অতএব, আনন্দ, তোমরা আত্মদ্বীপ হয়ে, আত্মশরণ হয়ে, অনন্যশরণ হয়ে বিহার (জীবন যাপন) কর, ধর্মদ্বীপ, ধর্মশরণ, অনন্যশরণ হও। আনন্দ, (The Great Buddhist Monk) কিরূপে ভিক্ষু আত্মদ্বীপ, আত্মশরণ, অনন্যশরণ; ধর্মদ্বীপ, ধর্মশরণ, অনন্যশরণ হয়ে বিহার করেন? ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মেডিটেশন (বৌদ্ধধ্যান প্রনালী) আজ মানব চিত্তের একমাত্র ঔষধ।
সোনা কান্তি বড়ুয়ার জীবনসঙ্গিনী যুথিকা বড়ুয়ার সংঘদান, উপলক্ষে ২৫৬৭তম বুদ্ধ পূর্ণিমা TORONTO BUDDHHIST MONASTERY (বুদ্ধ বিহার) AND MEDITATION সেন্টারে HARROW STREET, MISSISSAUGA Ontario LAT 1J3 PHONE 37 771 5217 & 437 484 0913 . সোনা কান্তি বড়ুয়া ও পরিবার (DAUGHTER INDIRA BARUA) কতৃক আয়োজিত সংঘদান, অষ্ট পরিষ্কার দান ও জ্ঞাতি সন্মেলন! বুদ্ধভ‚মি পুন্ড্রবর্দ্ধনে (বগুড়া) গৌতমবুদ্ধের বাংলাদেশ! প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ববিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী মিসেস যুথিকা বড়ুয়ার মৃত্যুতে সোনা কান্তি বড়ুয়ার কত শোকদহন! বুদ্ধ পূর্ণিমার বিশ্বমানবতায় উদ্ভাসিত ধরনীতল! যুথিকা বড়ুয়ার স্মৃতির সাগরে তীরে বুদ্ধজয়ন্তির ২৫৬৭তম বুদ্ধ পূর্ণিমায় যুথিকা বড়ুয়ার মহাসংঘদান, 6 MAY 2023 সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত সকল কে আহবান করি! কমিউনিটির HIGHLY RESPECTABLE BUDDHIST MONKS, LEARDERS & শুভকামী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। জীবনসঙ্গিনী যুথিকার মৃত্যুতে সোনা কান্তি বড়ুয়ার জীবনপথ, কত দুঃখতাপ, কত শোকদহন! জীবনসঙ্গিনী যুথিকা বড়ুয়ার কথা খুব মনে পরছে। প্রতিবার দেশের বাহিরে যাওয়ার সময়ে যুথিকাকে দেখে যেতাম। তাড়াতাড়ি ফিরে আসার জন্য বলতেন। আজ যুথিকা নেই, এই শূণ্যতা আমায় ভাবিত করছে। বার বার যুথিকার স্মৃতির পাতায় বহুকথা মনে পরছে। এইভাবে জগতে সব হারাতে হয়, বাচঁতে হয় আপন কর্মের পূর্ণতা সাধনে। এই তো জীবন! কমিউনিটি BUDDHIST MONKS, FRIENDS ও দায়করা শুভ কামনা জানাতে FUNERAL HOME এসেছিল, DATED 27 APRIL AT 8 : 25 A. M. তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ধর্মীয় কর্মের ব্যস্ততার কারণে অনেক শুভানুধ্যায়ীদের বলতে পারি নাই তাই সবার শুভদৃষ্টি কামনা করছি!
TORONTO BUDDHHIST MONASTERY (বুদ্ধ বিহার) অঘউ AND MEDITATION সেন্টারে (বিহারে) প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরেও ত্রি-স্মৃতি বিজরিত শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা-২৫৬৭ বুদ্ধাব্দ অর্থাৎ সিদ্ধার্থের জন্ম, বুদ্ধের বুদ্ধত্বলাভ ও বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ দিবস উপলক্ষে MOST VENERALE SARANAPALA একক সদ্ধর্মদেশনা ও বৈকালিক অষ্টপরিষ্কারসহ সংঘদান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে একক সদ্ধর্মদেশনা প্রদান করবেন পরম পূজ্য MOST VENERALE SARANAPAL BHIKKHU. উক্ত অনুষ্ঠানে আপনাদের উপস্থিতি একান্ত-ভাবে কামনা করছি।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাবে বাংলা বছরের প্রথম মাস পাল্টে গিয়ে স্থান নেয় ‘বৈশাখ।’ এ মাসের পূর্ণিমায় (৬২৩ খৃষ্টপূর্ব) বুদ্ধের জন্ম। বৌদ্ধ প্রভাবিত বাঙ্গালীরা তাই বুদ্ধের জন্মমাসকে অগ্রাধিকার দিতে ‘বৈশাখ’ মাসকে বছরের প্রথম মাস রূপে স্বীকৃতি প্রদান করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলা ভাষার (চর্যাপদ) স্রষ্টারা হলেন বৌদ্ধ।’ (কোলকাতা হতে প্রকাশিত ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ নামক সর্বাধিক প্রচারিত খবরের কাগজে ১৫ই এপ্রিল ২০১৫ তারিখে উল্লিখিত হয়েছে)! বর্তমান ক্যালেণ্ডার বাংলা বছরের প্রথম মাস বৈশাখ। এক সময় প্রথম মাসের নাম ছিল ‘অগ্রহায়ণ।’ অগ্র- আগে, হায়ণ-বছর। বছরের প্রথমভাগ। এ সময় নতুন ধান ফলত, নবান্ন হত। বিউ পরবের শুভেচ্ছা ও নতুন বছরের সকলের মঙ্গল কামনা।
বুদ্ধ পূর্ণিমার বিশ্বমানবতায় উদ্ভাসিত ধরনীতল! পরম পূজনীয় বুদ্ধের বুদ্ধজয়ন্তি, বোধি লাভ, এবং মহা পরিনির্বানসহ ত্রিস্মৃতি বিজরিত বৌদ্ধজগতের পরম পবিত্র বুদ্ধপূর্ণিমা (৬ মে ২০২৩) বৌদ্ধদের মৈত্রী ভাবনা সমারোহে সমাপ্ত হয়েছে। তোমার কীর্তির চেযে তুমি যে মহৎ, / তাই তব জীবনের রথ,/ পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমারে,/ বারম্বার। / তাই চিহ্ন তব পড়ে আছে,/ তুমি হেথা নাই।” বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ভাষায় : বিদ্যা সহজ, শিক্ষা কঠিন। বিদ্যা আবরণে, শিক্ষা আচরণে।
পৃথিবীর এই পথে পথে কত অজানারে জানা যায়, অচেনা নারে চেনা যায়, অদেখারে দেখা যায়, বিশাল পৃথিবী, বিশাল জ্ঞানভান্ডার এই বিশ্বময়, কত রূপের মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজিয়েছে এই বাংলাদেশে!
বাংলাদেশে ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান- এ চারটিই প্রধান ধর্ম। আমাদের দেশে মসজিদের পাশে মন্দির, ঈদ ও পূজা উদ্যাপন হয়; একই সঙ্গে আজানের ধ্বনির পাশাপাশি মন্দিরে বাজে বাঁশরির সুর। আধুনিক বাংলাদেশের সব্যসাচী লেখক ও কবি সৈয়দ শামসুল হক বলেছেন, ‘একসাথে আছি, একসাথে বাঁচি,/ আজো একসাথে থাকবোই/ সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে সাম্যের ছবি আঁকবোই।’ বড় সাধ জাগে একবার ঈদ ও পূজায় মানবতাই হোক প্রকৃত ধর্ম দেখি!
বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান কোথায় জানেন কী? নেপালের লুম্বিনিতে। আর সেখানেই এক প্রাচীন মন্দিরে খননকার্য চালানোর সময়ে প্রত্নতাত্তি¡করা আবিষ্কার করে ফেলেছেন খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের আরেকটি অজানা কাঠামো। তাদের দাবি অনুযায়ী, এটা পৃথিবীর প্রাচীনতম বৌদ্ধমন্দির বা প্যাগোডা। ইতোপূর্বে আবিষ্কৃত প্রাচীনতম বৌদ্ধমন্দির ছিলো সম্রাট অশোকের সময়কালের। তবে এখন জানা গেছে যে সেটা এই মন্দিরের অনেক পরে তৈরি হয়, মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে- যখন সম্রাট অশোক আফগানিস্তান থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পর্যন্ত বৌদ্ধধর্ম ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন।
খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের মত বৌদ্ধ ধর্মানুসারে, বুদ্ধের বোধি লাভ হয় একটি বৃক্ষের নিচে এবং গবেষকেরাও একটি বৃক্ষকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মন্দির খুঁজে পেয়েছেন যা প্রাচীন সময়ে তৈরি হয়। আরও বলা হয়, এর আগে ওই এলাকায় (নেপালে) বৃক্ষ কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কোনও মন্দিরের খোঁজ পাওয়া যায়নি। সুতরাং সম্ভাবনা আছে যে এটাই হতে পারে সেই বৃক্ষ যার ডাল ধরে মহামায়া দেবী জন্ম দিয়েছিলেন গৌতম বুদ্ধকে। একটি প্রেস কনফারেন্সে কনিংহ্যাম বলেন, (Priya. Com) এটা এমন এক দুর্লভ মুহূর্ত যেখানে ধর্ম এবং বিজ্ঞান পাশাপাশি অবস্থান করছে। বৌদ্ধ ধর্মানুসারে, রানী মহামায়া দেবী লুম্বিনি বাগানের একটি গাছের ডাল ধরে থাকা অবস্থায় বুদ্ধের জন্ম দেন। গৌতম বুদ্ধ বেড়ে ওঠেন বিলাস ও প্রাচুর্যের মাঝে, কিন্তু ২৯ বছর বয়সে গৃহত্যাগী হয়ে তিনি বোধনের সন্ধান শুরু করেন।
বৈশাখী পূর্ণিমা। নিশি অবসান প্রায়। পূর্ণচন্দ্র পশ্চিম গগনে হেলিয়া পড়িয়াছে। তাহার অমল ধবল স্নিগ্ধ কিরণমালা নিদাঘ ক্লিষ্ট প্রকৃতির উপর শেষ অমিয়ধারা বর্ষণ করিতেছে। অদূরে হিরণ্যবতী নদী, স্বাভাবিক ধীর মন্থর গতিতে প্রবাহিত হইয়া গতিশীল জীবনের অনিত্যতা ঘোষণা করিতেছে। প্রস্ফুটিত কুসুম সুবাস বহন করিয়া মৃদুমন্দ মলয়হিল্লোল সমস্ত শালকুঞ্জকে আমোদিত করিতেছে। নির্ব্বাণোম্মুখ দীপশিখাগুলি মিঠিমিঠি জ্বলিতেছে। সমবেত জনতা এক চরম মূহুর্ত্তের অপেক্ষায় উৎসুক নেত্রে সমাসীন। নিস্তব্ধ ধরণী। সহসা নিস্তব্ধ প্রকৃতির নীরবতা ভঙ্গ করিয়া ধ্বনিত হইল, “আনন্দ, তথাগতের অর্বত্তমানে তোমরা মনে করিওনা- ‘আমাদের শাস্তা নাই, আমাদের শিক্ষাগুরু অন্তর্হত হইয়াছেন।’ তথাগত যে ধর্ম্ম বিনয় তোমাদিগকে উপদেশ করিয়াছেন, ইহাই তোমাদের শিক্ষাগুরু। তথাগতকে তোমরা যেরূপে সম্মান ও সম্বোধন করিতে, অতঃপর কনিষ্ঠ ভিক্ষু জ্যেষ্ঠ ভিক্ষুকে সেরূপ করিবে।সম্মিলিত ভিক্ষুসঙ্ঘ প্রয়োজন বোধে ক্ষুদ্রাদি ক্ষুদ্র শিক্ষাপদ পরিবর্ত্তন করিতে পারিবে। বুদ্ধ, ধর্ম্ম, সঙ্ঘ অথবা আর্য্যমার্গ সম্বন্ধে কাহারো কোন সংশয় থাকিলে এখন জিজ্ঞাসা করিতে পার।” সকলেই নীরব রহিলেন। কারণ তাঁহাদের সর্ব্ব কনিষ্ঠও স্রোতাপন্ন ছিলেন। ভগবান্ পুনরায় বলিলেন, “ভিক্ষুগণ। যৌগিক পদার্থ মাত্রেই ভঙ্গুর, ক্ষয়শীল।অপ্রমত্তভাবেই স্বকার্য্য সম্পাদনা কর।” ইহাই তথাগতের অন্তিমবাণী।
(অসমাপ্ত। সূত্র : মহাপরিনিব্বান সুত্তং – রাজগুরু শ্রী ধর্ন্মরত্ন মহাস্থবির।)!
গৌতমবুদ্ধের অহিংস নীতিতে দীক্ষা নিয়ে সম্রাট অশোকের (After three hundred years of Lord Buddha) মানবাধিকারের ঘোষণা ছিল “অহিংসা পরম ধর্ম” শিলালিপিতে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ভাষায়, “জগতের মধ্যে শ্রেষ্ট সম্রাট অশোক আপনার যে কথাগুলিকে চিরকালের শ্রুতিগোচর করিতে চাহিয়া ছিলেন, তাহাদিগকে পাহাড়ের গায়ে খুদিয়া দিয়াছিলেন। ভাবিয়া ছিলেন, পাহাড় কোনকালে মরিবে না, সরিবে না, অনন্তকালের পথের ধারে অচল হইয়া দাঁড়াইয়া নব নব যুগের পথিকদের কাছে এক কথা প্রতিদিন ধরিয়া আবৃত্তি করিতেই থাকিবে। পাহাড়কে তিনি কথা কইবার ভার দিয়াছিলেন। তোমার কীর্তির চেযে তুমি যে মহৎ, / তাই তব জীবনের রথ,/ পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমারে,/ বারম্বার। / তাই চিহ্ন তব পড়ে আছে,/ তুমি হেথা নাই।”
মহামতি সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারত গোলেমালে হিন্দু ইন্ডিয়া এবং মুসলমান পাকিস্তান হল কেন? সারা দিন রাত জুড়ে বৌদ্ধধর্মের বিরুদ্ধে হিন্দুরাজনীতি অসংখ্য ষড়যন্ত্র করে চলেছে। মনস্তত্বের দৃশ্যকাব্যের মতো মানব সভ্যতা বা মানব জাতির জীবন নদী স্থির নয়, সদা অনিত্য পরিবেশে চল ও চলমান। বিশ্বপ্রবাহের নির্মমতা আজ প্রাচীন হিন্দুরাজনীতির বৈদিক সভ্যতার মানবাধিকারহীন জাতিভেদ প্রথাকে কাঁধে চাপড়িয়ে একবিংশ শতাব্দীর মহাকালের মোহনায় দাঁড় করায়। বিশ্বকোষ (১৩শ ভাগ, পৃষ্ঠা ৬৫) থেকে একটি ঐতিহাসিক উদ্ধৃতি উল্লেখ করা গেল, “কিয়ৎকাল পরে সিদ্ধার্থ গুরুগৃহে গমনের পূবেই তিনি ব্রাহ্মী বঙ্গলিপিসহ ৬৪ প্রকার লিপি অবগত ছিলেন।”
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব এন্টোনিও গোতরেস সমগ্র পৃথিবীকে বুদ্ধের প্রদত্ত শিক্ষা পালন করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন (বুদ্ধ পূর্ণিমার ঠিক আগে)! তিনি বলেছেন যে, আজ হতে আড়াই হাজার বছর পূর্বে ভগবান বুদ্ধ ‘সঙ্ঘং সরণং গচ্ছামি’ বা একতাবদ্ধ হয়ে থাকার কথা বলেছিলেন। একতাবদ্ধ থেকে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ বৈষম্য ভুলে একে অপরকে সাহায্য করতে, সহানুভ‚তি প্রদর্শন করতে এবং মানব তথা সমস্ত জীবকে সেবা করতে শিক্ষা দিয়েছিলেন। এজন্য আজ বুদ্ধের বার্তা অতীব মহত্বপূর্ণ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোবিড-১৯ এর কারণে আজ মানবতা বিপন্ন হতে চলেছে।’
জাতি সঙ্ঘের মহাসচিব বলেছেন- ‘যখন আমরা ভগবান বুদ্ধের জন্ম, তাঁর বুদ্ধত্ব লাভ এবং তাঁর মহাপরিনির্বাণ স্মরণ করছি, তখন তাঁর শিক্ষা হতেই আমাদেরকে অধিকতর প্রেরণা নেওয়া উচিত। মানবতা আজ কোবিদ-১৯ বৈশ্বিক মহামারী দ্বারা পীড়িত। এরকম পরিস্থিতিতে বুদ্ধ বলেছেন- ‘শরীরধারী সকল মনুষ্যই রোগগ্রস্থ।’ এজন্য আমিও রোগগ্রস্থ। গোতরেস তাই বলেছেন- ‘ভগবান বুদ্ধের একতাবদ্ধ হয়ে একে অন্যের সেবা করা, পাশে থাকার শিক্ষা পূর্ব হতেও; বর্তমানেও অধিকতর মহত্বপূর্ণ প্রমাণিত হচ্ছে। সেজন্য আমরা সবাই মিলেই কোরোনা ভাইরাসকে নির্মূল করতে পারব এবং এ সঙ্কটের সমাধান করতে সক্ষম হব। পবিত্র এ বেশাখ দিবসে সমগ্র বিশ্ববাসীর প্রতি আমার এ আবেদন রইল।’ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে গৌতমবুদ্ধকে সশ্রদ্ধ বন্দনা নিবেদনের নৈবেদ্য সাঁজিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ভাষায় :
“হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বি নিত্য নিঠুর দ্ব›দ্ব
ঘোর কুটিল পন্থ তার লোভ জটিল বন্ধ।
নতুন তব জন্ম লাগি কাতর যত প্রাণী
কর ত্রান মহাপ্রাণ আন অমৃত বাণী
বিকশিত করো প্রেম প্রদ্ম চিরমধু নিষ্যন্দ
শান্ত হে মুক্ত হে, হে অনন্ত পুণ্য
করুণাঘন ধরণীতল করহ কলংক শূন্য
এস দানবীর দাও ত্যাগ কঠিন দীক্ষা
মহাভিক্ষু লও সবার অহংকার ভিক্ষা।
দেশ দেশ পরিল তিলক রক্ত কলুষ গ্লানি
তব মঙ্গল শঙ্খ আন, তব দক্ষিন পাণি
তব শুভ সঙ্গীতরাগ, তব সুন্দর ছন্দ।
শান্ত হে মুক্ত হে, হে অনন্ত পুণ্য
করুণাঘন ধরনীতল করহ’ কলঙ্ক শূন্য। ”
অহিংসা মানবতার পথ এবং হিংসা মানুষজাতির সর্বনাশের পথ। সেবা, ভালবাসা বা বিশ্বমৈত্রী দিয়ে মানুষের মনের অন্ধকার ধ্বংস করে প্রতিটি মানব মনে মানবতার আলোই আলোকিত বিশ্ব গড়ে তুলবে। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বৌদ্ধ তিরুপতি মহাবিহার দখল করে হিন্দু মন্দিরে রুপান্তরিত করেছে! ভারতবর্ষে বৌদ্ধ বিহার ভেঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে পুরীর হিন্দু মন্দির! ব্রাহ্মণ্যবাদী প্রতারণার রাজনীতিতে বৌদ্ধদের ভারত ভ‚মি ও দেশ দখল করার নাম হিন্দু ধর্ম! বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বুদ্ধদেব সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেছেন, “ভারতবর্ষে বুদ্ধদেব, মানবকে বড় করিয়াছিলেন। তিনি জাতি মানেন নাই, যাগযজ্ঞের অবলম্বন হইতে মানুষকে মুক্তি দিয়াছিলেন, দেবতাকে মানুষের লক্ষ্য হইতে অপসৃত করিয়াছিলেন। তিনি মানুষের আত্মশক্তি প্রচার করিয়াছিলেন। দয়া এবং করুণা তিনি স্বর্গ হইতে প্রার্থনা করেন নাই, মানুষের অন্তর হইতেই তাহা তিনি আহ্বান করিয়াছিলেন। এমনি করিয়া শ্রদ্ধার দ্বারা, ভক্তির দ্বারা, মানুষের অন্তরের জ্ঞানশক্তি ও উদ্যমকে তিনি মহীয়ান করিয়া তুলিলেন। মানুষ যে দীন দৈবাধীন হীন পদার্থ নহে, তাহা তিনি ঘোষণা করিলেন।”
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The Author’s World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি