সোনা কান্তি বড়ুয়া : বাংলাদেশের স্বাধীনতায় হিন্দু বৌদ্ধ, পাহাড়ী সহ খৃস্টানদের ধর্মীয় নিপীড়ন কেন? বাংলাদেশের স্বাধীনতা কি শুধু মুসলমানদের ইসলাম ধর্মের জন্য? যুগান্তর পত্রিকার প্রতিবেদনে “বাংলাদেশে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা চালু করার দাবিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে (যুগান্তর প্রতিবেদন, ১৭ আগস্ট ২০২০)। নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের পর পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ, নির্যাতন এবং বেআইনি কার্যকলাপের প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খৃস্টানসহ অন্যান্য নাগরিকরা এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ভারত-রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সার্বিক সহযোগিতায় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বাংলাদেশে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ইসলাম ধর্মের পাঠ্য বইতে (Class Five Pages 16 & 17) বলছে “অমুসলিমরা ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’ – শেখাচ্ছে সরকারি পাঠ্যবইয়ে! অমুসলিমদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও বটে।

নোটিশে এই চারজন ছাড়াও বিএনপি মহাসচিব, জাতীয় পার্টির মহাসচিব, গণফোরামের ড. কামাল হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননকে বিবাদী করা হয়েছে (যুগান্তর প্রতিবেদন, ১৭ আগস্ট ২০২০)! নোটিশে আরও বলা হয়, জাতীয় সংসদে বিষয়টি বিল আকারে উত্থাপনসহ বিলটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য দ্বারা পাস করাও আবশ্যক। অন্যথায় বাংলাদেশ চিরতরে সা¤প্রদায়িক দেশ হিসেবে বিশ্ববাসীর নিকট স্বীকৃতি পাবে। তাছাড়া জাতির পিতা ও বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না।

‘স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূলনীতিসমূহ পরিবর্তন করা হয়। যা স্বাধীন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী স¤প্রদায় এবং সংখ্যালঘু জনগণ মনেপ্রাণে গ্রহণ করেনি। সংবিধানে ২ক অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রধর্ম সংযোজনের ফলে অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ এখন সা¤প্রদায়িক বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।’ আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর অভ‚তপূর্ব বিজয় অর্জনে এককভাবে যে উপাদানটি সবচেয়ে বড় ভ‚মিকা রেখেছে তা হলো বাঙালি সংস্কৃতির শক্তি। সত্য কখনো চাপা থাকে না! ইতিহাস কিন্তু বড় নির্মম! ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রজ্বলিত ধ্রæবতারা বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমান!

রোববার নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। তিনি নিজেই সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার সাহার পক্ষে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশটি পাওয়ার দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা শুরু করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের অসা¤প্রদায়িক জনগণের পক্ষে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে। ‘বর্তমানে ভারত সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সাংবিধানিকভাবে হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। সুতরাং বিশ্ববাসীকে অসা¤প্রদায়িক চেতনার জন্য বাংলাদেশকে অসা¤প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিগণিত করা আবশ্যক। সেজন্য পবিত্র সংবিধানে অর্থাৎ মূলনীতি ৮ম আর্টিকেলে ধর্ম নিরপেক্ষতা থাকবে। কিন্তু কোনোক্রমেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে না।’

সব রক্তচক্ষু ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের পরও সাহসিকতার সঙ্গে জাতিকে দেয়া ওয়াদা রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে শীর্ষ প্রায় সব ঘাতকের বিচারের রায় ঘোষিত হয়েছে। দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। দেরিতে হলেও বুদ্ধিজীবীদের শীর্ষ ঘাতকদের বিচারে দণ্ডিত হওয়া খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। একাত্তরে আমরা যে সূর্যসন্তানদের হারিয়েছি তাদের আর ফিরে পাওয়া যাবে না, কিন্তু তাদের ঘাতকদের বিচার ও শাস্তি সেই শোক, সেই কলঙ্ক কিছুটা হলেও মোচন করবে!
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কেন? আমাদের ১৯৭২ সালের পবিত্র সংবিধানে স্বাধীনতার চেতনাসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতি ছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ধর্মান্ধদের ধর্ম কেন? বঙ্গবন্ধু কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিলেন! জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির (বর্তমানে প্রয়াত) গোলাম আযমের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার দলকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে উল্লেখ করে। ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই ঐতিহাসিক এ রায়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের পথ উন্মুক্ত হয়।

পাকিস্তান ও সাতচল্লিশের ধর্মান্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনিবার্য অভ্যুত্থান! ঝড়ের মতো আর্তি আছড়ে পড়ে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুকে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা বাংলাদেশে এক অভ‚তপূর্ব রক্তাক্ত বিষাদ সিন্ধু। বেয়াদপ অকৃতজ্ঞ সেনা প্রশাসকগন বঙ্গবন্ধুকে কাফনের ভালো কাপড় দিল না! এবং ৩ নভেম্বর জেলের মধ্যে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা ও ৭ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ’৭৫ এর হাতিয়ার বলতে মূলত এসব নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও নাশকতার কুশীলবদেরই বোঝানো হয়।

বাংলাদেশ বহুজন হিতায় বহুজন সুখায়! বাংলাদেশের স্বাধীনতা কি শুধু মুসলমানদের ইসলাম ধর্মের জন্য? ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সাথে হিন্দু বৌদ্ধ রাষ্ঠ্রদ্বয় (ভারতও ভুটান) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশের বিজয় হয়! কোরাণের নামে বাংলাদেশে ধর্মান্ধতার শেষ কোথায়? বাংলাদেশের স্বাধীনতায় MAJORITY মুসলমান রাজনীতিতে সকলের জন্য সমান সুযোগ এবং সমান আচরণ। দেশের স্বাধীনতায় সামাজিক ন্যায়বিচারে ইসলাম ধর্ম ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম হিন্দুধর্ম কি ধর্ম নয়? ধর্ম অবমাননা কি শুধু হিন্দুদের বেলায়!

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট সেনা প্রশাসকগন জানোয়ারের মতো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করল কেন? ধর্মীয় রসের ধর্মান্ধ হাঁড়িতে রাজনীতিকে মজাদার করতে দেশদ্রোহীদের রাজনীতির ষড়যন্ত্র আজ বাংলাদেশে সা¤প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, ১৯৭২ সালের সংবিধান বাংলাদেশেপ্রজ্বলিত ধ্রæবতারা! ধর্মান্ধদের ধর্ম নামে বাংলাদেশে কি চলছে? ধর্মান্ধদের ধর্ম অসা¤প্রদায?িক বাংলাদেশ এখন সা¤প্রদায়িক বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।’ বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীন বিবেকের ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্ধভাবে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা।

বাংলাদেশে ধারাবাহিক ভাবে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে হওয়া আক্রমণ ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে আজ বাংলাদেশের কাছে উদ্বেগ জানাল নরেন্দ্র মোদী সরকার থেকে (আনন্দবাজার পত্রিকা 19 NOVEMBER 2022)! মানবাধিকারের আলোকে জামায়াতের উগ্র সা¤প্রদায়িকতার বাহক শক্তিটি ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে জনগণের সম্পদ হরিলুট করেছে ! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত লিখেছেন, “জামায়াতের উগ্র সা¤প্রদায়িকতার বাহক শক্তিটি ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে জনগণের সম্পদ হরিলুট করেছে! “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে বিচারহীনতা ও ভয়ের সংস্কৃতির কারণে এই পরিস্থিতি এখন ভয়ংকর ও অসহনীয় হয়ে উঠছে।

পাকিস্তানের ধর্মান্ধ ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষা আন্দোলন বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমান! বিশ্বষসঘাতক পাকিস্তান সাতচল্লিশের ধর্মান্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে বাংলাদেশে রক্তাক্ত ভাষা আন্দোলনের অনিবার্য অভ্যুত্থান! উদাহরণ হিসেবে আমরা দেখেছি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বেয়াদপ অকৃতজ্ঞ সেনা প্রশাসকগণ জানোয়ারের মতো হিংস্রতায় সেনা নামিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা!

ফেসবুকে কোরাণ অবমাননার দুর্নীতি বধে বাহাত্তরের সংবিধান! আল্লার গজব ইউরোপের কোরান পোড়ানোর ঘটনা ও কোরাণের নামে রামু বৌদ্ধ বিহার ধ্বংস কেন? মুসলমান যেই মানব, হিন্দু ও সেই মানব। ২০১২ সালে ২৯ শে সেপ্টেম্বর ইসলামি জঙ্গীরা রামু, উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধ জনপদে আগুন দিয়ে তান্ডব দাহন করেছে। আজ ইউরোপের সুইডেন, নেদারল্যান্ডের পর এবার পবিত্র কোরান পোড়ানো হলো ইউরোপের আরেক দেশ ডেনমার্কে! একের পর এক কোরান পোড়ানোর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ গোটা মুসলিম বিশ্ব। যে ইউরোপকে বলা হয় সভ্যতার মানদণ্ড, রাজনীতির নামে সে ইউরোপেই চলছে সা¤প্রদায়িক উস্কানি? (PROTHOM ALO 28 JANUARY 2023)!

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ আমাদের স্বাধীনতার মূলমন্ত্র এবং বাংলাদেশের হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্ঠানদের জন্য সমান সুযোগ! সত্য কখনো চাপা থাকে না! ইতিহাস কিন্তু বড় নির্মম! ইউরোপে কোরান পোড়ানোর ঘটনায় বাংলাদেশে ১০ বছরে ও রামু বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ বিচার কাজ শেষ হয়নি! রামুর বৌদ্ধপল্লী ট্র্যাজেডির ১০ বছর! কোরাণের নামে বাংলাদেশে ধর্মান্ধতার শেষ কোথায়? মানবাধিকারের আলোকে ফেসবুকে কোরাণ অবমাননার অভিশপ্ত নির্লজ্জতর দুর্নীতি বধে বাহাত্তরের সংবিধান! মানুষের দেশ মানুষের মনেরই সৃষ্টি! ইসলাম ধর্ম অবমাননায় হিন্দু বৌদ্ধ হত্যায় ফেক আইডিতে কোরাণ অবমাননা কেন? ধর্মান্ধ মুসলমানগণ ইসলাম ধর্মের নাম দিয়ে দিনকে রাত এবং রাত কে দিন করে!

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠক করে ভারতের ওই উদ্বেগ জানান। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার শিকার হচ্ছেন সে দেশের হিন্দু স¤প্রদায়। বিষয়টি নিয়ে যাতে সরকার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কথা বলে, তা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়ে আসা হচ্ছিল। আজ বিষয়টি বৈঠকে ওঠায় আশা করা যায় আগামী দিনে বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা কমবে। বাংলাদেশ সূত্রে বলা হচ্ছে, এই ধরনের ঘটনা সামনে এলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। প্রতি বছর পুজোর সংখ্যাও বাংলাদেশে বাড়ছে। কাজেই উদ্বেগ অমূলক।

দুর্নীতি দমন কমিশন শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ নিয়ে রাজাকার ভন্ডদের ‘ইসলামধর্ম অপব্যবহারের’ বীজ আজ মহীরূহ হয়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর এতো উলঙ্গ দর্প বাংলাদেশে কেন? সকল ধর্মের বিশ্বমৈত্রীতে মুসলমান রাজনীতির বিদ্বেষটাই ধর্মান্ধদের অধর্ম! পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ‚মির সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে মুসলমান রাজনীতির ভীতির কবলে হিন্দু, বৌদ্ধ ও চাকমা, মারমাসহ ১৪ উপজাতি! পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ করতে হবে।

২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাংক জামায়াত-শিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়েছে, “যেখানে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইউএসএইডকে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে- জামায়াত-শিবিরসহ সমমনা দলগুলোকে যেন কোনো রকম প্রশ্রয় দেওয়া না হয়। এতে আরও বলা হয়েছে- ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। স্বাধীনতার মূল্য দিতে গিয়ে ৩০ লাখ মৃত্যু, ২ লাখ নারী ধর্ষণ এবং ১ কোটি মানুষের দেশান্তরিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যার অধিকাংশের সঙ্গে জামায়াতের জঙ্গিরা জড়িত।’

‘মার্কিন আইনপ্রণেতার এই বিলে আরও বলা হয়েছে- ‘বিগত নির্বাচনগুলোতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের হামলার শিকার হয়েছে, যার ফলে নভেম্বর ২০১৩ থেকে জানুয়ারি ২০১৪-এর ভেতর ৪৯৫টি হিন্দু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৫৮৫টি দোকান আক্রান্ত ও লুণ্ঠিত হয়েছে এবং ১৬৯টি মন্দির ধ্বংস হয়েছে।’ ‘জিম ব্যাংকের এই বিলকে স্বাগত জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘মিডলইস্ট ফোরাম’ বলেছে, জামায়াতে ইসলামী একটি ভয়ঙ্কর প্রভাবশালী গোষ্ঠী, যাদের সন্ত্রাসের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।’

বাংলাদেশের অপাপবিদ্ধ শান্তিকামী বৌদ্ধদের ধর্মীয় অনুভ‚তিতে চরম আঘাত করতে বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বাংলাদেশে মুসলমান লেখকগণ গৌতমবুদ্ধকে ব্যঙ্গরুপদানে অত্যন্ত নোংরা ও কুরুচিপূর্ণতথ্য বিভ্রাট ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ’ শীর্ষক বই লিখেছেন! এই বিষয়টার মধ্যে যে সা¤প্রদায়িক বিদ্বেষের মশলা আছে তা জনমানসের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত! মূলের (TRIPATAKA & Buddhist Text) সাথে মিল না রেখে- মুসলমান লেখকগণ তাদের ইচ্ছে মতো – গ্রন্থটির অভ্যান্তরের বেশ কিছু চিত্র দেখা মাত্রই যেকোনো বৌদ্ধ ধর্মবিশ্বাসীর মনে বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মকে নিয়ে বিরূপ ও বিকৃত ধারনা উদিত হতে বাধ্য! এই যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরা! শিশু কিশোর বা অবৌদ্ধ পাঠকের কথা বাদই দিলাম! বাংলাদেশে মুসলমান লেখকগণ যৌনতায় ভরপুর কুরুচি ও অমার্জিত ছবি/চিত্র সম্পাদনা করে- বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্মকে কামসূত্রের ছায়াপটে উপস্থাপন করেছেন! বাংলাদেশে আক্রমণের শিকার বৌদ্ধধর্ম কেন? যৌনতায় ভরপুর কুরুচি ও অমার্জিত ছবি/চিত্র সম্পাদনা করে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ’ শীর্ষক বই বই লিখেছেন!

১৯৭১ সালের এ দিনে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় যখন দ্বারপ্রান্তে, ঠিক সেই সময় পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী দেশের প্রথিতযশা সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও চিকিৎসকদের হত্যা করে বাঙালি জাতির ওপর চরম আঘাত হানে। জাতিকে মেধাশূন্য করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবী মানুষকে বাড়ি থেকে ধরে এনে ঢাকার রায়েরবাজার, কাটাসুর ও মিরপুরসহ দেশের অসংখ্য বধ্যভ‚মিতে নিয়ে গিয়ে নির্মম পৈশাচিকতার সঙ্গে হত্যা করে। আজকের দিনে আমরা ওই সব বুদ্ধিজীবীকে স্মরণ করি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায়। দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শাসক চক্রের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে দিকনির্দেশক এবং সোচ্চার কণ্ঠ।

অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মতে “ধর্মহীন বিজ্ঞান খোঁড়া, বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ।” বুদ্ধভ‚মি পুন্ড্রবর্দ্ধনে (বগুড়া) গৌতমবুদ্ধের বাংলাদেশ! সেইদিনের (2600 years ago) বাংলাদেশের বগুড়ায় মহাস্থানগড়ে ঐতিহাসিক স্মৃতিখন্ড পবিত্র বুদ্ধ তীর্থভ‚মি যেখানে গৌতমবুদ্ধ তাঁর অমৃতময় ধর্ম প্রচার করেছিলেন। সম্রাট অশোক সেই মহান পুণ্যভ‚মিকে স্মরনীয় করার জন্যে বৌদ্ধবিহার (বামু রাংকুট বিহার) ও বুদ্ধচৈত্য নির্মান করেন এবং আজ ও সম্্রাট অশোকের “প্রাচীন বাংলা ভাষায়” (ব্রাহ্মী লিপিতে) শিলালিপিটা কলকাতা জাদুঘরে বিরাজমান। WORLD সমাজ সুখী হও সুখী হও / এ মৈত্রী ভাবনা। দিবা নিশি হিত সুখ করিনু প্রার্থনা।
ধর্মান্ধরা বৌদ্ধ ভিক্ষু হত্যা বাংলাদেশকে মুসলমান রাষ্ট্র বানষনোর ভয়ঙ্কর ষড়য়ন্ত্র করছে!

পৃথিবীতে ১৩% লোক নাস্তিক। চীনের ১৫০ কোটি লোকের মধ্যে দুই কোটি মুসলমান। কে আস্তিক বা নাস্তিক তা আল্লাহ ভাল করে জানে। আল্লাহ সবাইকে সৃষ্টি করে খাওয়ায়, সংরক্ষণ করে। বরং যারা নাস্তিক তারা পৃথিবীর সভ্যতা সমৃদ্ধশালি করেছে। আধুনিক সভ্যতার যত ইন্সট্রুমেন্ট ডিজিটালাইজেশন মোবাইল, বিদ্যুৎ শক্তি, যানবাহন, সৌর শক্তি, উপগ্রহ তৈরি করে কখন বৃষ্টি হবে, অনাবৃষ্টি, ঝড়, তুফান, আকাশের কি আছে, না আছে সবই নাস্তিকেরা আবিষ্কার করেছে। বাবুনগরীর পকেটে নাস্তিকের মোবাইল। যে ফ্যানের নীচে বসে লম্বা লম্বা বয়ান মারে, বিদ্যুৎটাও আবিষ্কার করেছে কাফেরা, ইহুদিরা, (Hospital) হ্সপাতালে জম্মের সময় ডেলিভারির সব যন্ত্রপাতি নাস্তিক, কাফের, ইহুদিদের বানানো। কেন ব্যবহার করে নাসারা কাফেরদের আবিষ্কার?

বাংলাদেশে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ইসলাম ধর্মের পাঠ্য বইতে (Class Five Pages 16 & 17) বলছে “অমুসলিমরা ‘মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’ – শেখাচ্ছে বইসরকারি পাঠ্যবইয়ে অমুসলিমদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও বটে।’ মুক্তিযুদ্ধে ২ লক্ষ মা – বোনকে ধর্ষন জামায়াতে ইসলামী ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছিল! অথচ এই ধর্ষন অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করেছেন। বাংলাদেশে ২০১৯ সালে মুসলমান রচিত ইসলাম ধর্মের পাঠ্য বইতে (Class Five) বলছে “পঞ্চম শ্রেণির ‘ইসলাম ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষা’ বইয়ের ১৬ ও ১৭ নম্বর পৃষ্ঠায় এভাবেই অমুসলিমদেরকে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এই বিষয়টি মোটেও ভালো হয়নি। এগুলো পাল্টাতে হবে।

অমুসলিমরা‘ মিথ্যাবাদী’, ‘লোভী’, ‘পশুর অধম’! শেখাচ্ছে সরকারি পাঠ্যবইয়ে অমুসলিমদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও বটে। (২) বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বইতে আক্রমণের শিকার বৌদ্ধধর্ম কেন? অপরাধের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এবং মুসলমান না হলে কি বাংলাদেশের আদর্শবান নাগরিক হওয়া যায় না? ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বইতে বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধদেরকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তা নিতান্তই (A father made her daughter prostitute) আপত্তিকর এবং বিব্রতকরও (Buddhist family life is not good) বটে। (১) Mr. Azizul Hoq Khan (২) Mr. Mahamudul Ala (৩) Mr. Bilas Mallik and (৪) Mr. Ujjal Chakraborty “লেখকগণ “Gender, Society and Development শীর্ষক বইটি লিখেছেন (For B.A (Honours) Fourth Year Social Science students in Bengali“ গ্রন্থ লিখে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে, ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মের চেয়ে উন্নত, better! বাংলাদেশে জনঅরণ্যের নরদেহধারী বাঙালি হিন্দু ও মুসলমান লেখক মানুষের কি মা বোন নেই? বুদ্ধের দোষ খুঁজে বের করতে প্রথমে বুদ্ধকে নারী বিদ্বেষী বলার সাহস পেয়েছেন?

স্মরণ করি শহীদদের কুরবানি। মুসলিম রাজনীতির ভীতির কবলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে পাহাড়ীদের মনুষ্যত্ব কেড়ে নিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ীদের ভিটে-মটিতে পাঁচ লক্ষ মুসলমান সেটেলার! মুসলমান সেটেলাররা এবং জঙ্গিরা পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের ব্যাপক ভ‚মি অবৈধভাবে দখল করে চলেছে। কেন এত ধর্মান্ধদের ধর্মের অহংকার? কেন এত ধর্মান্ধ মুসলমান সেটেলারদের ধনের গৌরব? কেন এত ধর্মান্ধদের টাকার অহংকার? কেন এত ধর্মান্ধদের নের অহংকার? কেন এত ধর্মান্ধদের ডিগ্রীর অহংকার? কেন এত ধর্মান্ধদের যৌব নের অহংকার? কেন এত ধর্মান্ধদের জনপ্রিয়তার অহংকার?কেন এত ধর্মান্ধদের বংশ মর্যাদার গর্ব?কেন এত ধর্মান্ধদের পদ-পদবীর অহংকার? একদিন সব মাটির সাথে মিশে যাবে! আজকের আমি,আগামী দিনের আমি!

হিন্দু-মুসলমান রাজনীতিতে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিতে সাতচল্লিশে ধর্মান্ধ ধর্মের জন্য ভারত ও পাকিস্তান দ্বিখন্ডিত হয়েছে। আইনের শাসনে গরীব জনতা দলিত মিসকিন, মুরতাদ, কাফের, চন্ডাল ¤েøচ্ছ ডোম হলো কেন? ধর্মের অপব্যবহারের কারনে ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সরকারের গুলিতে ঢাকার রাজপথ সালাম, রফিক, বরকত সহ কত শত নাম না জানা শহীদদের রক্তে রক্ত্ক্তা হলো এবং সেই বাংলা ভাষার আন্দোলন আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার জন্মদাতা শহীদ মিনার হয়ে বিরাজমান।

হিন্দু মুসলমানদের হিংসা পুষে রাখা ভারত “ভাগ’ কথাটা এখানে রক্তে রাঙানো ১৯৪৭ সাল ১৪ আগস্ট এবং ১৫ আগস্ট! দেশভাগ’ এখানে সর্বাত্মক : দেশের ভাগ, মানচিত্রের ভাগ, আত্মা, সম্পর্ক, যোগাযোগ, এমন কি আমার লিখিত “আমি’টির ও ভাগ, পার্টিশন আমার সর্বস্ব; আমার সত্তাকেই বিভক্ত করে রেখেছে। একটি সোশাল নেটওয়ার্কিং গ্রুপ কিছু দিন আগে দুই বাংলার উদ্বাস্তুদের গৃহের খোঁজের জন্যে তৈরি হতেই সাড়া ফেলে দেয় গ্রুপটি।
আন্দামান থেকে মধ্য ভারত, বাঙালির ভিটার সন্ধানে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত, ভুল বানানে আবেগদীপ্ত চিঠি, ভাঙা পালঙ্ক, এমনকি কানের দুল, চুড়ির ছবি দিয়ে দেশকে খোঁজার, শিকড়ের সন্ধানের আকুতি দেখে মনে হয়, বস্তুবিশ্বের চেয়ে মানুষের কল্পনার বাস্তবতা কিছু কম নয়, বরং বেশি।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি