অনলাইন ডেস্ক : মসজিদ সহ ইংল্যান্ডের উপাসনালয়গুলো ১৫ই জুন সোমবার থেকে খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এ সময় থেকে সামাজিক দূরত্বের গাইডলাইন্স অনুসরণ করে প্রার্থনা করতে পারবে লোকজন। প্লেসেস অব ওরশিপ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে সরকার ও বৃহৎ ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্লেসেস অব ওরশিফ টাস্কফোর্সে সভাপতিত্ব করেন কমিউনিটি সেক্রেটারি রবার্ট জেনরিক এমপি। এই টাস্কফোর্সে একজন মুসলিম সদস্য আছেন। তিনি হলেন বৃটিশ বোর্ড অব স্কলার্স অ্যান্ড ইমামস-এর শায়ক ড. অসিম ইউসুফ। করোনা ভাইরাস সঙ্কটের কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে বৃটেনে মসজিদগুলো বন্ধ রয়েছে। সরকার বলছে, উপাসনালয়গুলোতে প্রার্থনা করার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ও মানসিক সুবিধা অর্জনে সক্ষম হবে লোকজন।
বাড়িতে বসে প্রার্থনা করে এমন প্রশান্তি অর্জন করতে পারেন না অনেকে। এক্ষেত্রে উপাসনালয় খুলে দেয়ার আগে শর্ত দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, উপাসনালয় পরিষ্কার থাকতে হবে। প্রবেশ ও বহির্গমন পথে হাত পরিষ্কারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। উপাসনাকারীদের নিজস্ব জায়নামাজ বা ম্যাট বহন করতে হবে। প্রয়োজন হলে নিজস্ব ধর্মীয় গ্রন্থ বা এর অংশ বিশেষ সঙ্গে নিতে হবে। তবে বর্তমান প্রেক্ষিতে দলবদ্ধভাবে নামাজ বা প্রার্থনা করা যাবে না। রবার্ট জেনরিক এমপি বলেন, উপাসনা আবার শুরু নিশ্চিত করতে আমার অগ্রাধিকার হলো ব্যক্তিগতভাবে উপাসনা করা। স্বাচ্ছন্দ্য, সান্ত¡না, স্থিতিশীলতা ও মর্যাদার জায়গা হিসেবে আমাদের দেশে মঙ্গলার্থে তাদের অবদান পরিষ্কার। এ সময়ে এসব খুবই প্রয়োজন, যেহেতু করোনা মহামারি অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড গ্রিনহাফ বলেছেন, আমাদের বিশ্বাস যে, আমাদের উপাসনাগুলো পুরোপুরি খুলে দেয়ার এটাই প্রথম পদক্ষেপ। সামনের দিনগুলোতে কিভাবে নিরাপত্তা চর্চা করা যায় তা নিয়ে আমি টাস্কফোর্সের সঙ্গে অব্যাহত আলোচনা চালিয়ে যাবো। তারা মনে করলে এগুলো আবার বন্ধ বা খুলে দিতে পারেন।

বৃটিশ বোর্ড অব স্কলার্স অ্যান্ড ইমামস এক বিবৃতিতে বলেছে, এটা স্মরণ রাখা উচিত যে, অনেক চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে এসব ইতিবাচক পদক্ষেপ সামনে এসেছে। এর মধ্যে সর্বাগ্রে মসজিদে উপস্থিতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মসজিদকে নিরাপদে ব্যবহারের অনুমতি সম্বলিত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক রেগুলেশন ইস্যুতে সরকারের কাছ থেকে আমরা ক্লারিফিকেশন চাইছি। এটা এজন্যই যে, এর ফলে মসজিদ এবং বিভিন্ন কমিউনিটি সেই রেগুলেশন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ পরিকল্পনা করতে পারবে। তবে মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেন (এমসিবি) বলেছে, সরকারের নির্দেশনায় মুসলিমদের ক্লিয়ারিটির বিষয়ে ঘাটতি আছে। এমসিবির সেক্রেটারি জেনারেল হারুন খান বলেছেন, প্রাথমিকভাবে মসজিদ হলো একত্রে নামাজ আদায় করার স্থান। ফলে বর্তমান নতুন রেগুলেশন কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে সে বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ রয়েছে। এ নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহে আঞ্চলিক ও জাতীয় মুসলিম বিষয়ক কয়েক ডজন এসোসিয়েশন এবং কয়েক শত মসজিদের নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ ও আলোচনা করেছে এমসিবি। এতে আরো বলা হয়, আমরা সরকারের কাছে সুস্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীন গাইডলাইন চাই, যাতে মসজিদের ট্রাস্টি, স্টাফ, স্বেচ্ছাসেবী ও অন্যরা যার যার জায়গায় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন।