অনলাইন ডেস্ক : কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী শিখ আন্দোলনকারীরা ক্রমাগত হুমকির মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন, তাদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে রয়টার্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে শিখদের জন্য খালিস্তান নামের স্বাধীন একটি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে সরব আছেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বসবাসরত ভারতীয় বংশদ্ভুত শিখ সমপ্রদায়ের অনেকে। তেমনই একজন শিখ অধিকার আন্দোলনকারী ভারতীয়-আমেরিকান চিকিত্সক ডা. জাসমিত বেইনস। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার আইন পরিষদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নানা ধরণের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
১৯৮৪ সালে পাঞ্জাবের অমৃতসরে শিখদের পবিত্র তীর্থস্থান স্বর্ণমন্দিরে অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাদের লক্ষ্যস্থল ছিল মন্দিরে অবস্থান নেওয়া সশস্ত্র শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ওই অভিযানে অনেক মানুষ নিহত হন। তাঁদের মধ্যে তীর্থযাত্রীরাও ছিলেন। এর চার মাস বাদে ভারতের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করেন তার দুই শিখ দেহরক্ষী। এরপর রাজধানী নয়াদিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শিখদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। নিহত হন হাজার হাজার শিখ। এই হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণার জন্য গত বছরের আগস্টে বেইনস ক্যালিফোর্নিয়ার আইন পরিষদে বিষয়টি তুললে তা গৃহীত হয়।
এর কিছুদিনের মধ্যেই চার ব্যক্তি তার দপ্তরে এসে তাকে হুমকি দিয়ে যায়। দেখতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মনে হওয়া ওই ব্যক্তিরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “তোমাকে হটানোর জন্য যা যা করা দরকার তাই করবো আমরা।”
বেইনস বলেন, এরপর থেকে তিনি ১০০টিরও বেশি হুমকিমূলক বার্তা পেয়েছেন। তিনি পার্ক করা ট্রাক থেকে কাউকে তার বেকার্সফিল্ডের বাড়ির ছবি তুলতে দেখেছেন এবং তার মেলবক্সের তালাটি বারবার ভাঙা হয়েছিল। বেইনস তার অফিসের ঘটনাটি স্থানীয় পুলিশকে জানান এবং তার বাড়ি পাহারা দেওয়ার জন্য অঙ্গরাজ্য আইনসভার সার্জেন্ট-অ্যাট-আর্মসকে অনুরোধ করেন।
২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় একটি শিখ মন্দিরের সামনে শিখ আন্দোলনকারী হারদীপ সিং নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দেশটির পার্লামেন্টে জানান, কানাডার গোয়েন্দারা এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে ভারত সরকারের যোগাযোগ থাকার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য পেয়েছেন। এরপর থেকে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী শিখ আন্দোলনকারীরা ক্রমাগত হুমকির মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।