অনলাইন ডেস্ক : হংকংয়ের বিজনেস টাইকুন বা ব্যবসায়ী ধনকুবের জিমি লাই’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নেক্সট ডিজিটাল মিডিয়ায় কর্মরত নির্বাহী মার্ক সিমন বলেছেন, বিদেশি শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হংকংয়ের ওপর জুনে চীন যে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দিয়েছে তার অধীনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্ক সিমন। গত বছর হংকংয়ে যে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভ হয় তাতে সমর্থনকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন জিমি লাই। ৭১ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর রয়েছে বৃটিশ নাগরিকত্বও। তার বিরুদ্ধে বেআইনি সমাবেশ এবং ভীতিপ্রদর্শনের অভিযোগ গঠন করা হয় গত ফেব্রুয়ারিতে। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। তবে এবার তাকে বিদেশি শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয় মিডিয়ার মতে, তার কোম্পানিতে পুলিশ প্রবেশ করে সেখানে তল্লাশি চালিয়েছে। এরপর পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭ জনকে। তবে তাতে জিমি লাইয়ের নাম উল্লেখ করা হয় নি। বিতর্কিত নিরাপত্তা আইনের অধীনে সোমবার তৃতীয় দফা গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করা হয়। এখন পর্যন্ত এই আইনে যেসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মধ্যে জিমি লাই হাইপ্রোফাইল। একই সঙ্গে বিদেশি নাগরিকত্ব আছে এমন প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জিমি লাইয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। তিনি কাপড়ের ব্যবসা করে প্রথমে তার যাত্রা শুরু করেছিলেন। পরে তিনি মিডিয়া হাউজ খোলেন। অ্যাপল ডেইলি নামের একটি পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন। এই পত্রিকায় ঘন ঘন হংকং ও চীনের নেতাদের সমালোচনা করা হয়। হংকংয়ে বেইজিং ক্রমাগত তার থাবা বসাচ্ছে, এর বিরুদ্ধে তিনি নিজেই ছিলেন একজন কর্মী। ২০১৯ সালে তিনি সংস্কারবাদী বিক্ষোভ সমর্থন করেন এবং এতে অংশ নেন।
এ বছরের শুরুর দিকে ওইসব বিক্ষোভে জড়িত থাকার জন্য তিনি অভিযুক্ত হন। চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া তাকে ‘দাঙ্গা সৃষ্টির মূলহোতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। বলা হয়, দিনরাত সারাক্ষণ তিনি চীনের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও নেতিবাচক তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ৩০ শে জুন চীন পাস করে নিরাপত্তা আইন। এরপর জিমি লাই বিবিসিকে বলেন, এটা হলো হংকংয়ের কফিনে শেষ পেরেক। তিনি সতর্কতা উচ্ছারণ করে বলেন, মূল চীন ভূখন্ডের মতো হংকং হবে দুর্নীতিপরায়ণ। কারণ, থাকবে না আইনের শাসন। মানুষ নিরাপত্তা না পাওয়ায় ব্যবসা করতে পারবে না। অন্যদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আমি জেলে যেতে প্রস্তুত। যদি এমন সুযোগ আসে, তাহলে আমি সেখানে ওইসব বই পড়বো, যা পড়া হয় নি। আমি যা করবো তা হবে ইতিবাচক।