অনলাইন ডেস্ক : স্থানীয় সরকারকে ঢেলে সাজানোর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা দরকার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে ৪ হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১)’ প্রল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সরকারি তহবিল থেকে এ প্রকল্পের সব ব্যয় মেটানোর সুপারিশ করেন।
সরকারের তহবিল থেকে বরাদ্দ চেয়ে মেয়র বলেন, এবার আমাদের টাকা নেই। এ প্রকল্পের সব টাকা দিয়ে দেন। পরবর্তীতে আমাদের সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবো।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা (ডিএনসিসি) স্থানীয় সরকারের আওতায়। আপনারা নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। রাজস্ব আদায় করতে পারছেন না কেন? উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন- এগুলো স্থানীয় সরকারের আওতায়। এখন আমাদের সময় এসেছে এগুলো (স্থানীয় সরকার) ঢেলে সাজানোর। একদিকে এরা বলে, আমরা ( স্থানীয় সরকার) স্বাধীন, অন্যদিকে আবার টাকা ওঠাতে পারে না। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সহায়তা চায়। এই দুইটাতো একসঙ্গে চলতে পারে না। আপনি যদি স্বাধীন হন, তাহলে স্বাধীনভাবেই চলেন। স্থানীয় সরকারের চলমান পদ্ধতি দীর্ঘ দিনের, এটা এখন ঢেলে সাজাতে হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিডের কারণে টাকা শর্টেজ হবে, তারপরও প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে, ব্যয় সাশ্রয় করতে হবে। এমনকি গাড়ি কেনার বিষয়েও একটা বিধি-নিষেধ এসেছে। আগে আমরা সভা-সমিতি করতাম, চা-কেক খেতাম, কিন্তু (ব্যয় কমাতে) এখনতো আমরা সবাই এমনটি করি না। আমরাতো এখন সভা করি ডিজিটালি, যার যার ঘরে বসে। সুতরাং এখানেও অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। প্রকল্পের কাজে বিদেশে যেতে হতো, এখন প্রয়োজন হয় না। গাড়ি-ঘোড়া ক্রয়, বিদেশ ভ্রমণসহ সব ব্যাপারে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে।
এদিন বৈঠকে দেশের যত্রতত্র সেতু নির্মাণ না করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন এমন একটি পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, সবাই ঘরে ঘরে সেতু চান। কিন্তু এতে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দুই দিক থেকেই ক্ষতি হয়। তাই এখন থেকে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। সেতু এভাবে বানাতে থাকলে নদী মরে যাবে।
ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নত করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সভায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, জমির মালিকানা নিষ্কণ্টক হতে হবে। এ জন্য ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নত করা জরুরি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জমি সুরক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই। পার্বত্য চট্টগ্রাম, হাওর ও চরাঞ্চলসহ দেশের প্রত্যন্ত সব এলাকায় বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দিতে হবে।