অনলাইন ডেস্ক : একটি সুশাসিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাষ্ট্রকাঠামো সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজাতে সুনির্দিষ্ট কৌশলনির্ভর পথরেখা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এ কথা জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যমুক্ত, সুশাসিত, দুর্নীতিমুক্ত, বাক্ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারভিত্তিক, জনকল্যাণমূলক, অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে টিআইবি এই সরকারকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের ধারাবাহিকতায় ‘নবীন-প্রবীণের’ সমন্বয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী এই সরকারকে অভিনন্দনও জানিয়েছে টিআইবি। বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বৈষম্যমুক্ত ও মানবাধিকারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ধূলিসাৎকারী, জবাবদিহিহীন ও ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ অপশক্তিকে অকুতোভয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে পরাভূত করেছে। এর মাধ্যমে স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পর নতুন করে স্বাধীনতার চেতনার বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের যে সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে নতুন সরকার সর্বশক্তি নিয়োগ করবে—এমনটাই প্রত্যাশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাষ্ট্রকাঠামো সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কৌশলনির্ভর পথরেখা ঘোষণা ও তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাই।’
জরুরি বিবেচনায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি একটি জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী তৈরিতে এর ব্যবস্থাপনা ও কর্মকাঠামো পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ এখনই শুরু করতে হবে বলেও মনে করে টিআইবি। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশের মতো একটি রাষ্ট্রীয় বাহিনী কীভাবে এমন জনরোষের শিকার হলো, এর অন্তর্নিহিত কারণ চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাহিনীটির কাঙ্ক্ষিত পেশাগত উৎকর্ষ এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি-কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।’
পরাজিত সরকার ক্ষমতার স্বার্থে পুলিশ বাহিনীসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধারাবাহিকভাবে অপব্যবহার করেছে বলে উল্লেখ করে টিআইবি বলেছে, তারপরও নির্বিচার পুলিশ তথা কোনো সরকারি কর্মচারীকে হত্যা বা তাঁদের প্রতি কোনো ধরনের সহিংস আচরণ করা গর্হিত অপরাধ। অবিলম্বে এসব বন্ধ করতে হবে।
অনেক জায়গায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ রাত জেগে পাহারা দেওয়া সত্ত্বেও সংখ্যালঘুদের বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, উপসনালয় ও মন্দিরে এখনো হামলার ঘটনা ঘটছে বলেও উল্লেখ করেছে টিআইবি। বিবৃতিতে তারা বলেছে, একই সঙ্গে জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার ও অনুপ্রেরণার উৎস মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত অনেক নির্দশন ও স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ‘মুক্তিযুদ্ধের সরকার’ নামধারী স্বৈরতন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অবমাননা করেছে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় তার বিচার হতে হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।