সহিদুল আলম স্বপন, জেনেভা, সুইজারল্যান্ড : সুইজারল্যান্ডজুড়ে গতকাল রোববার হাজারো নারী বৃহত্তর সমতার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এ বিক্ষোভে একত্র হয়েছিল। সমাজে শিশুদের যত্নের দায়িত্ব বণ্টন এবং সমান বেতনের বিষয়টি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক সুইজারল্যান্ডে বেশ কয়েক বছর ধরেই হাওয়া পেতে শুরু করেছে, যার পরিণতিই এই বিক্ষোভ।
নারীত্ববাদ ছিল এ বছরের প্রধান স্লোগান, যা নারীবাদীদের দাবির প্রতিফলন ঘটানোর মাধ্যমে জুরিখ, বার্ন, বাসেল, লুসান এবং বেলিনজোনায় নারীরা এই বছর একত্র হয়েছিলেন। আবার এদের মাঝে অন্যরা পরিবেশগত সমস্যা এবং বর্ণবাদের দিকে মনোনিবেশ করেছিল, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শেতাঙ্গ পুলিশের হাতে আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড মৃত্যুর প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে, বিক্ষোভগুলো বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ আকারে দিনজুড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানী বার্নে একটি নারীবাদী দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
লুসান শহরে, নারীরা শনিবার রাতে তাঁদের প্রথম সমাবেশ করেন। আবার রোববার দিনে প্রায় ১৫ জন শীর্ষস্থানীয় নারী অর্ধনগ্ন হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। একত্র হওয়া নারী-পুরুষ সবাই বিশ্বজুড়ে নারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে স্লোগান দেন।
দক্ষিণের বেলিনজোনা শহরে প্রায় ২০০ মানুষ পুরোনো শহরে প্যারেড করে এবং শহরের রাস্তায় শুয়ে ‘সম্মান’ শব্দটি তৈরি করেন, যা নারীদের প্রাপ্য অধিকারের প্রতীকের রূপ।
বড় ওষুধ কোম্পানিগুলোর সদর দপ্তর বাসেলে। সেখানে প্রায় দেড় শ–জন বিক্ষোভকারী ১৪ জুন স্থানীয় সময় ১৫টা ৩৪ মিনিটে রাইন নদীতে ডুবসাঁতার কেটে তাঁদের বিক্ষোভ শেষ করেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কেন্দ্রবিন্দু ফরাসিভাষী শহর জেনেভাতেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন নারীরা। আনুমানিক দুই হাজার বিক্ষোভকারী সেখানে ছিলেন।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীরা বলেন, অসম বেতন কাঠামোব্যবস্থা, নিম্ন বেতনসহ, পুরুষদের তুলনায় নারীরা গড়ে ২০ শতাংশ কম আয় করেন। বৈষম্য, কাজ এবং পরিবারের তথা সংসারের মাঝে সমন্বয়ের অসুবিধাও সুইস নারীদের বিক্ষুব্ধ করে তোলার অন্যতম কারণ।
১৯৯১ সালের ১৪ জুন, সুইজারল্যান্ডের অর্ধলক্ষ নারী প্রথম নারীদের ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন। আজ প্রায় ৩০ বছর পরে, তারা আবার একত্র হলেন।