অনলাইন ডেস্ক : দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) চেতনার পুনরুজ্জীবন হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আট জাতির এ জোট আঞ্চলিক অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। একটি মহৎ উদ্দেশ্যে সার্ক প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি এখন শুধু কাগজেই সীমাবদ্ধ এবং এটি এখন কাজ করছে না।
ঢাকায় নিজ সরকারি বাসভবনে ভারতের সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারটি শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করবেন তিনি। এ মাসের শেষ দিকে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে সার্ক রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও একটি ফটোসেশনে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান ড. ইউনূস।
সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করবেন তিনি। এ মাসের শেষ দিকে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নিশ্চয়ই, আমরা সাক্ষাতের চেষ্টা করব (ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি)। যদি সার্কের সব রাষ্ট্রপ্রধান একত্র হন ও ফটোসেশনে অংশ নেন, আমি চেষ্টা করব (তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের)। সার্ক এক মহৎ উদ্দেশ্যে গঠিত হলেও এটি এখন শুধু কাগজে সীমাবদ্ধ এবং এটি এখন কাজ করছে না। আমরা সার্কের নাম ভুলে গেছি; আমি সার্কের চেতনার পুনরুজ্জীবন ঘটানোর চেষ্টা করছি।
আঞ্চলিক এ জোটের সদস্যদেশগুলো হলো বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ের ৭৯তম এ অধিবেশন ২৪ সেপ্টেম্বর শুরু হবে। চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
ড. ইউনূস বলেন, দীর্ঘদিন সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হয়নি। আমরা যদি একত্র হতে পারি, তবে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
দীর্ঘদিন সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হয়নি। আমরা যদি একত্র হতে পারি, তবে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
২০১৬ সাল থেকেই খুব একটা কার্যকর নেই সার্ক। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক এ জোটকে সক্রিয় করতে চেষ্টা চালাচ্ছে নেপাল।
ওই বছর পাকিস্তানে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরের উরিতে ভারতীয় সেনা ফাঁড়িতে হামলার পর ভারত ওই সম্মেলনে যোগ দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে সম্মেলনটি বাতিল হয়ে যায়।
শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখ করেন, সার্কের অনুরূপ লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এ জোট অনেক কিছু অর্জন করেছে। একই রকম অর্জন এখনো করতে পারেনি সার্ক।
এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে ইউরোপের দেশগুলো অনেক কিছু অর্জন করেছে। সার্কের কাজ করার বিষয়টি আমাদেরও নিশ্চিত করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিকে তাকান, কত সুন্দরভাবে এটি কাজ করছে। পাকিস্তানকে নিয়ে যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে, তবে অন্য পথ খুঁজে বের করা যেতে পারে। কিন্তু সার্কের কার্যক্রম অবশ্যই থামানো উচিত নয়।
২০১৬ সাল থেকেই খুব একটা কার্যকর নেই সার্ক। আঞ্চলিক এ জোটকে সক্রিয় করতে চেষ্টা চালাচ্ছে নেপাল। ওই বছর পাকিস্তানে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরের উরিতে ভারতীয় সেনা ফাঁড়িতে হামলার পর ভারত ওই সম্মেলনে যোগ দেবে না বলে জানায়। পরে সম্মেলনটি বাতিল হয়ে যায়।
সার্কের দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয় কাঠমান্ডুতে ২০১৪ সালে। এরপর ২০১৬ সাল থেকে এটি আর খুব কার্যকর নেই।
এদিকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল নামা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মিয়ানমারকে তার দেশের নাগরিকদের ফেরত নিতে রাজি করাতে ভারতের সহায়তা চাইবেন তিনি।
এ সংকট সমাধানে ভারত ও চীন—দুই দেশেরই সহায়তা ঢাকার প্রয়োজন বলেও ড. ইউনূস উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ সংকট সমাধানে আমাদের ভারত ও চীনের সহায়তা দরকার। বাংলাদেশে ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা এসেছেন। এ জনগোষ্ঠীর আকার বাড়ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এটি মারাত্মক চাপ তৈরি করছে। কিছু দেশ তাদের গ্রহণ করছে, কিন্তু সেটি স্বল্প সংখ্যায়। মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের যেহেতু সুসম্পর্ক আছে, তাই দেশটিকে নিজেদের নাগরিকদের ফেরত নিতে রাজি করাতে ভারতের সহায়তা আমাদের প্রয়োজন।