স্পোর্টস ডেস্ক : সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচই গড়িয়েছে ১২০ মিনিট সময় পর্যন্ত। তার মধ্যে ফাইনালসহ শেষ দুই ম্যাচই টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয়েছে। পুরো ম্যাচে সমান লড়াই জারি রাখা কুয়েতের নাম শেষ পর্যন্ত উঠেছে পরাজিতের তালিকায়। টুর্নামেন্টে দু’দলের প্রথম দেখায় ভারতকে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়েছিল কুয়েত। তবে শিরোপার লড়াইয়ে নেমে তারা আর জয়রথ ধরে রাখতে পারেনি। ফলে টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জিতে সাফের সর্বোচ্চ নবম শিরোপা জিতেছে ভারত।
এর আগে বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধ থেকে দুই দল একটি করে গোল নিয়ে সমতা ধরে রেখেছিল। যা বজায় ছিল নির্ধারিত সময় গড়িয়ে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও। ফলে ১২০ মিনিটের খেলা শেষেও কুয়েত-ভারত ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ১-১। পরবর্তীতে টাইব্রেকারে গড়ালে সেখানে একক আাধিপত্য দেখাতে পারেনি কোনো দল।
টাইব্রেকারের প্রথম পাঁচ শটের মধ্যে উভয় দলই ৪টি করে গোল করে। গোলরক্ষকের বাধায় রক্ষা পায় ভারত-কুয়েতের সমান একটি করে শট। পরবর্তীতে একটি করে শট নেয় দু’দল। প্রথম শটে ভারতীয়রা লক্ষ্যভেদ করলেও, কুয়েতের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ সব সেভ করা গুরপ্রীত। তার অসাধারণ সেই নৈপুণ্যে ভারতীয়রা শিরোপা জয়ের বাধভাঙা উল্লাসে মাতে।
ফাইনালের মাত্র ৪র্থ মিনিটেই গোলের সুযোগ পেয়েছিল ভারত। অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর হেড সরাসরি কুয়েতের গোলরক্ষকের হাতে যায়। এর মিনিট দুয়েক পরই ফের কর্নার পেলেও সেটি কাজে লাগাতে পারেনি আয়োজক দেশটি। ম্যাচের শুরু থেকেই কুয়েতের দাপট ছিল বেশি। তার সুফলও তারা সহজেই পেয়েছে। ১৫ মিনিটে সুপরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোল করেন আলখালদি।
পিছিয়ে পড়ে খেলার দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন ভারতীয় ফুটবলাররা। ১৯ মিনিটে সুনীলের শট আটকে দেন কুয়েতের গোলরক্ষক। কুয়েতের ফুটবলাররা কিছুটা শারীরিক ফুটবল খেললেও গুটিয়ে যায়নি ভারতীয় দল। সমানে সমান লড়াই করলেন মাঝমাঠের ফুটবলারেরা। ধীরে ধীরে মাঝমাঠের দখল নিয়ে নেয় ভারত। তবে ৩৪ মিনিটে পেশিতে টান লাগায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন আনোয়ার আলি। নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার মাঠ ছাড়ায় ভারতের কিছুটা ক্ষতি হয়। যদিও অন্য ফুটবলারেরা হাল ছাড়েননি।
সমতা ফেরাতে নতুন উদ্যমে লড়াই শুরু করেন বাকিরা। ৩৮ মিনিটে সাহাল সামাদ একা বল নিয়ে অনেকটা ওঠে পাস দেন সুনীলকে। তিনি আবার বল ফিরিয়ে দেন সাহালকে। তিনি বল সাজিয়ে দেন ফাঁকায় থাকা ছাঙতেকে। মঙ্গলবারই দেশের বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়া ২৫ বছরের মণিপুরের ফুটবলার গোল করতে ভুল করেননি। এরপর ১-১ ব্যবধানে সমতা নিয়ে দুই দল বিরতিতে যায়।
পরবর্তীতে শেষ সময় পর্যন্ত তুমুল লড়াই জারি রাখে দুই দল। কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিল না কেউই। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নিষ্পত্তির জন্য শুরু হয় টাইব্রেকার। যার শুরুটা সফলভাবে করেছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ পাঁচ গোলের মালিক ও ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী।