অনলাইন ডেস্ক : শীত প্রায় চলে এসেছে। ঢাকায় তেমন অনুভূত না হলেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে শীতের কাপড় না পরলেই নয়। এ মৌসুমে চামড়া ফাটার সঙ্গে অনেকেই সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর বাইরেও শীতের বৈরী আবহাওয়া ত্বকের জন্য বয়ে আনে নানান ধরনের সমস্যা।

সুস্থ থাকতে ঋতুর এ পরিবর্তনে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে একটু সচেতন হতে হবে। কিন্তু শীতে অসুস্থ হওয়া ঠেকাতে পারে শীতের কিছু সবজি, যা খেলে তরতাজা থাকবেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাইরে থেকে যত্নের পাশাপাশি চাই ভেতর থেকে সুস্থতা। শীতে যেসব খাবার সজীবতা ও সুস্থতা দেবে।

স্যুপ

শীতে শরীর সুস্থ রাখতে স্যুপ বা ঝোল দারুণ উপকারী। শীতেই মেলে স্যুপের আসল মজা। ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় গরম-গরম স্যুপ। শীতের বিকেলে বা রাতের খাবারে ধোঁয়া ওঠা এক বাটি স্যুপ হলে মন্দ হয় না। এতে শরীর থেকে একটু হলেও কাটবে ঠান্ডার রেশ। শরীর সুস্থ রাখতে শীতের সময় নানা সবজি আর মুরগির মাংস বা ডিম দিয়ে বানিয়ে খেতে পারেন স্যুপ।

মূলজাতীয় সবজি

শীতের রোগবালাই দূর করতে এ মৌসুমের মূলজাতীয় সবজি দারুণ কার্যকর। বিট, মিষ্টি আলু, গাজর, শালগমের মতো নানা সবজি শীতে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। এসব সবজিতে থাকা ভিটামিন ও নানা পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। এগুলো ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এসব সবজি শীতকালে দেহের উষ্ণতা বাড়াতে সাহায্য করে।

টক ফল

শরীরে ফাইবার বা আঁশের ঘাটতি মেটাতে ও ভিটামিন ‘সি’র জোগান দিতে শীতের সময় বেশি করে টকজাতীয় ফল খেতে পারেন। কমলা, বরই, পেয়ারা হতে পারে ভিটামিন ‘সি’র দারুণ উৎস। পেয়ারায় আরও অনেক বেশি ভিটামিন ‘সি’ থাকে, যা অনেক বেশি প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে আরও থাকে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম।

পুষ্টিবিদদের মতে, বরইয়ে ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ আছে নানা কিছু। রোগ প্রতিরোধে যেমন- ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। বরই সবার জন্য ভালো হলেও ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য কিন্তু না। পাকা বরইয়ে চিনি থাকে, তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের পাকা বরই না খাওয়াই ভালো।

পালং

শীতে বাজারে পালং শাক প্রচুর পাবেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শীতে সুস্থ থাকতে পালং শাক খেতে পারেন। পুষ্টিতে ভরপুর পালংয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যানসার প্রতিরোধী গুণের কারণে এটি ‘সুপারফুড’ হিসেবে পরিচিত। সবুজ পাতার এ শাক দ্রুত পেটের চর্বি কমাতে পারে। পালংয়ে ভিটামিন ও মিনারেল আছে, এতে ক্যালরি থাকে কম। তাই ওজন কমাতে খাবারে বেশি করে পালং রাখতে পারেন।

মাছ ও শিম

শীতে বেশি করে মাছ খান। আমিষের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন দুই বেলা মাছ খান। খাবারে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সামুদ্রিক মাছ রাখুন। এ ছাড়া মাছের সঙ্গে শিম যুক্ত করে খেতে পারেন। মাছের ঝোলে শিম মানিয়ে যায়। ভর্তা হিসেবেও অনন্য। শিম শুধু রসনাবিলাসই করে না, তার অন্য গুণও আছে।

শিম প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন আর মিনারেলে সমৃদ্ধ। যারা সরাসরি প্রোটিন খান না, অর্থাৎ মাছ-মাংস খাওয়া হয় না, তাদের জন্য শিমের বিচি শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে। যাদের আমিষ খাওয়ায় সীমাবদ্ধতা আছে, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন। আর এই শীতে নিয়মিত শিম খেলে ত্বকও ভালো থাকবে।