অনলাইন ডেস্ক : সংসদ টিভির চলমান ক্লাসগুলো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের উপযোগী করে তোলার বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিভি ক্লাসগুলো মোবাইল ফোনসহ প্রযুক্তির বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। তবে এখনো ১০ ভাগ শিক্ষার্থীর কাছে সংসদ টিভির ক্লাসগুলো পৌঁছায়নি। কিন্তু এই দশ ভাগকে পেছনে ফেলে আমরা সামনে এগিয়ে যাব না। তাই ইতিমধ্যেই আমরা টোল ফ্রি মোবাইল সুবিধা দেব যা খুবই দ্রুত সেটা চালু করতে যাচ্ছি, যার মাধ্যমে সেই ১০ ভাগ শিক্ষার্থীও শিক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার মাধ্যমে পাঠের সুযোগ পাবে।
শনিবার এডুকেশন রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে বাজেটে প্রস্তাবনা থাকলেও শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রকে এর বাইরে রেখে বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে কীভাবে ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া যায় সেটা নিয়েও আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। এছাড়াও কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে। ইউনিয়ন পর্যায়ের তথ্যসেবা কেন্দ্র ও ডিজিটাল সেবা কেন্দ্রগুলোকে শিক্ষার জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে তথ্যসেবা কেন্দ্র ও ডিজিটাল সেবা কেন্দ্র রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকেও শিক্ষা সেবা নিতে পারে। তবে যেসব জায়গায় এই সুবিধাগুলো নেই সেখানে শিক্ষকরা শিক্ষাদানের সবচেয়ে বড় মাধ্যম হতে পারে বলে জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, যেখানে এই ডিজিটাল সেবা পৌঁছাতে পারবে না আমরা চাইব শিক্ষকরা কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে পাঠদান করতে পারেন সেই বিষয়ে আমরা ভাবছি।
তিনি আরও বলেন, ট্রেডিশনাল প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসরুম বা ল্যাবরেটরি কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়াই শিক্ষার্থীরা শিখতে পারবে না প্রযুক্তির এই যুগে এটা বলা ঠিক হবে না। যেহেতু ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরির সুবিধাটি রয়েছে, আমরা চেষ্টা করব সে সুযোগটি কাজে লাগানোর জন্য।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি ব্যবহারের গতি বেড়েছে। তবে করোনা পরবর্তী সময়ের জন্য আমাদের বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে। আগে এক বেঞ্চে চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী বসতো। সেটা হয়তো আপাতত সম্ভব হবে না, বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে হবে। বছরে শুধু ১০০ দিনের বেশি সরকারি ছুটিই থাকে, তা রিভিউ করা হবে। এজন শিক্ষার্থীর পরবর্তী ক্লাসে উন্নীতের জন্য যা পড়ানো দরকার বা যেসব পরীক্ষাগুলো প্রয়োজন সেগুলো নেয়া হবে।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, একদিকে ইন্টারনেটের ওপর সবকিছু নির্ভরশীল হচ্ছে অন্যদিকে এর ব্যবহার বাড়ালে সব প্রস্তুতি বিফলে যাবে। ইন্টারনেট মানুষের হাতের নাগালে রাখতে হবে এজন্য সরকারকে এ খাতে প্রণোদনা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষার একটি প্রজন্ম হারিয়ে গেলে কয়েক প্রজন্ম হারিয়ে গেল তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই কারণে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক মনজুর আহমদ বলেন, এবছরের জন্য সিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা যেতে পারে। আলোচনা করে পরে তা চালু করা যায়।