অনলাইন ডেস্ক : মন্ট্রিলের মেয়র ভেলেরি প্লান্টে গত বুধবার ২০২২ সালের জন্য ৬.৪৬ বিলিয়ন ডলারের একটি সুষম বাজেট পেশ করেছেন। আগের বছরের তুলনায় এবারের বাজেটের আকার ১.৩% বেশি। বাজেটে আবাসিক খাতে গড়ে ২% এবং অনাবাসিক খাতে ১.৫% কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। আবাসিক খাতে এই ২% বৃদ্ধির ফলে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ডলারের একক পরিবারের বাড়ির জন্য ৮৩ ডলার এবং কনডমিনিয়ামের জন্য ৭ ডলার অতিরিক্ত কর দিতে হবে।
মেয়র ভেলেরির বাজেট ঘোষণার পর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও আর্থিক খাত সমূহের দায়িত্বশীল ডমিনিক অলিভার বলেছেন, প্রতিটি শহর ও জেলার কর্তৃপক্ষের স্থানীয় কর বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে। এই বৃদ্ধির ফলে কিছু লোকের খরচ সামান্য বাড়তে পারে।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী ২০২২-২০৩১ পর্যন্ত ১০ বছরের মোট মূলধন ব্যয় কর্মসূচি (পি ডি আই) ১৯.৫৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। বুধবার বাজেট ও পি ডি আই পেশ করার সময় মেয়র ভেলেরি বলেন, গত নভেম্বরে শপথ নেওয়ার সময় তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রক্ষা করেছেন। জনগণকে দেয়া তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি নগরীর বাজেট প্রণয়ন করেছেন বলেও দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘এই বাজেট গত ২০ মাসের মহামারিকালের অভিজ্ঞতার ফলাফল এবং এটি ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। নগরীর জনগণ পুরোপুরি এর সুবিধা ভোগ করবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে জরুরি পরিস্থিতির জন্য ৪০ মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রাখা হয়েছে। এই তহবিল সম্পর্কে মেয়র বলেন, হতে পারে বরফ সরানো কিংবা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই অর্থ কাজে লাগতে পারে। অথবা গত ২০ মাসের মত সামনের দিনগুলোতে করোনা সংক্রমণ রোধেও এই তহবিল কাজে লাগতে পারে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে মেয়র নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এখন সম্পূর্ণ করোনামুক্ত। প্রতিদিনই আমি আগের চাইতে ভাল অনুভব করছি। ঘোষিত বাজেটে পুলিশ বিভাগের জন্য বরাদ্দ ৪৫ মিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বন্দুকের সহিংসতা বৃদ্ধিতে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। তাই সার্ভিস ডি পুলিশ দে লা ভিলে দে মন্ট্রিলের (এস পি ভি এম) বাজেট বাড়িয়ে ৭২৪ মিলিয়ন ডলার করা হয়েছে। মেয়র মনে করেন, এই অতিরিক্ত বরাদ্দ এস পি ভি এমকে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করবে। মন্ট্রিলের বাজেটের ১৮% বরাদ্দ করা হয়েছে জন নিরাপত্তা খাতে। এতেই অনুমান করা যায় মেয়র এই বিষয়টির প্রতি কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পুলিশে নতুন নিয়োগ করা হবে বলেও মেয়র জানান। এছাড়া ২০২২ সালে এসপিভিএম পুলিশ অফিসারদের ক্রমান্বয়ে অত্যাধুনিক ইন্টারভেনশন ক্যামেরায় সজ্জিত করা হবে। আশা করা হচ্ছে ২০২৩ সালের মধ্যে সব পুলিশ অফিসারকে এই সুবিধার আওতায় আনা যাবে। মন্ট্রিল সিটিতে এই খাতে ১০ বছরের জন্য ১৭ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গারস্থ্য সহিংসতা বা ডোমোস্টিক ভায়োল্যান্স মোকাবেলায় পুলিশের একটি বিশেষ টিম গঠন করা হবে, যারা অপরাধীদের ধরার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তাও করবে।
এজন্য বাজেটে ১.২ মিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে। এসব ছাড়াও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং গরিবদের জন্য আবাসন নির্মাণে বাজেটের বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী ২১ জানুয়ারি সিটি কাউন্সিল কর্তৃক বাজেট গৃহীত হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে বিরোধীরা এই বাজেটকে ‘মেয়াদোত্তীর্ণ’ বলে সমালোচনা করেছেন। বিরোধীদলীয় নেতা আরেফ সালেম বলেন, প্লান্ট অলিভিয়ার প্রশাসনের ঘোষিত বাজেটে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার কোন কথা নেই। এটি এমনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে যেন দেশে গত ২০ মাস কোন দুর্যোগ ছিল না, মহামারি ছিল না। তিনি আরো বলেন, এই বাজেটে ব্যবসায়ী সাংস্কৃতিক কর্মী ও সংগঠক থেকে শুরু করে কারো জন্য ইতিবাচক কিছু নেই। সূত্র : রেডিও কানাডা