শফিক আল মামুন: সস্প্রতি একটি অ্যাপে ও পরে ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে ছয় পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘আগস্ট ১৪’। সেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্র তুশি হয়ে দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছেন ছোট পর্দার অভিনয়শিল্পী তাসনুভা তিশা। সিরিজটি প্রকাশের পর বেশ কয়েকজন গুণী পরিচালক তাঁকে নিয়ে নতুন করে ভাবছেন। তাই ‘ডার্ক’ এই চরিত্রটিই তিশার ক্যারিয়ারে যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা। করোনাকালের লকডাউনের মাঝেও ঈদের নাটকের শুটিং করছেন তাসনুভা তিশা। এসব অভিজ্ঞতা নিয়েই তিনি কথা বললেন প্রথম আলোর সঙ্গে।
‘আগস্ট ১৪’ সিরিজটি প্রকাশের পর তুশি চরিত্র নিয়ে চারপাশে বেশ সাড়া পড়ে গেছে। কেমন লাগছে আপনার?

সিরিজটি দেখার পর নাট্যাঙ্গনের অনেক গুণীজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসা করে লিখেছেন। বিশেষ করে পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম, অনিমেষ আইচ, দীপংকর দীপন, মোস্তফা কামাল রাজসহ অনেক অভিনয়শিল্পীরাও সিরিজটিসহ আমার চরিত্রকে নিয়ে প্রশংসা করে লিখেছেন। সেসব পড়া দারুণ অনুভূতি।
অনেক দিন ধরেই কাজ করছেন, কোনো কাজের এত প্রশংসা আগে কখনো পেয়েছেন?

ছয় বছর ধরে কাজ করছি। আগে কোনো কাজে এত প্রশংসা পাইনি। ভাইরাল হওয়া আর কাজে প্রশংসা পাওয়া এক না। এখানে এই কাজটি কিন্তু ভাইরাল না। প্রশংসনীয় কাজ এটি।

কাজটি করার সময় ভেবেছিলেন, এই চরিত্র চারদিকে হইচই ফেলে দেবে?
সত্যি কথা কি, এ ধরনের চরিত্রে আগে কাজ করিনি আমি। কঠিন একটি চরিত্র। তবে কাজটি করার সময় মনে মনে ভেবেছিলাম ঠিকঠাকমতো করতে পারলে চরিত্রটি আলোচনা তৈরি করতে পারে। আর যদি না পারি, তাহলে বিপদ। দর্শকেরা আমাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করবেন। কিন্তু না, আমি উতরে গেছি।

ঐশী নামের এক মেয়ের বাবা–মাকে খুন করার সত্য ঘটনা নিয়ে তুশি চরিত্রটি। আগে থেকে ধারণা ছিল?
কিছুটা জানতাম। ২০১৩ সালের ঘটনা। তবে বিস্তারিত জানতাম না। পরে পরিচালকের সহযোগিতায় ঐশীর মামলাগুলো নিয়ে পড়াশোনা করেছি। সেখান থেকে জেনেছি, মেয়েটির কী সমস্যা ছিল, কেন মেয়েটি এই ভয়ংকর পথ বেছে নিল, এত বড় ঘটনা ঘটাল।

অনেকই বলছেন, গল্পের সঙ্গে তুশি চরিত্রটি মিলেমিশে একাকার। কীভাবে সম্ভব হলো?
আমি তুশির মতো নই। আমি পর্দায় চরিত্রটি হওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। ১৫ দিনে সিরিজটির শুটিং হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই আমি চরিত্রের মধ্যে ঢুকে গেছি। টানা ১৫ দিনই আমি তুশি হয়েই ছিলাম। ক্যামেরার সামনে ও পেছনে, দুই জায়গাতেই। শুটিংয়ে তুশির জন্য যে রুমটি করা হয়েছিল, অবসরেও ওই রুমে বসে থাকতাম আমি। কারও সঙ্গে কথা বলতাম না, মিশতাম না। শুটিংয়ে মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতাম না। সেখানে বসে বই পড়তাম, গান শুনতাম।

কাজটি দেখার পর আপনাকে নিয়ে পরিচালকদের কাজের আগ্রহ কেমন?
এত দিন কিন্তু সেই অর্থে ভালো কাজের সুযোগ আসেনি। গড়পড়তা কাজই করতে হয়েছে আমাকে। এই কাজটি প্রকাশের পর আমাকে নিয়ে কিছু পরিচালকের আস্থা তৈরি হয়েছে। পরিচালক অমিতাভ রেজা ভাইসহ কয়েকজন বড় মাপের পরিচালক আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মানুষ আমাকে ভালো ভালো কাজে সুযোগ দেওয়ার কথা বলছেন।

গত ২৮ মে থেকে ছোট পর্দায় কাজের অনুমতি দিয়েছে সমিতিগুলো। কাজ শুরু করেছেন?
হ্যাঁ। আমি ৮ জুন থেকে ঈদের নাটকের কাজ করছি। এর মধ্যে দুটি নাটকের শুটিং শেষ করলাম। রোববার থেকে আরেকটি কাজ করছি। সামনে আরও দুটি নাটকের শিডিউল দেওয়া আছে। হাতের কাজগুলো শেষ করে আপাতত কাজ বন্ধ রাখব। কারণ যতই নিরাপদে শুটিং করা হোক না কেন, নিজের ও পরিবারের জন্য ঝুঁকি থেকেই যায়।

সমিতিগুলোর নির্দেশনা মেনে কাজ হচ্ছে কি?
আমি যে কদিন ধরে কাজ করছি, মোটামুটি পালন করার চেষ্টা দেখতে পারছি। শতভাগ তো সম্ভব না। ইউনিটের সবাই যাঁর যাঁর জায়গা থেকে সচেতন হয়ে কাজ করছেন। তবে এভাবে কাজের কিছুটা সমস্য তো আছেই। শুটিংয়ে সবার মধ্যেই একটা আতঙ্ক কাজ করে। মাথায় এ ধরনের চাপ নিয়ে ভালো কাজ করাও কঠিন।