অনলাইন ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্তর্জাতিক সতর্কতা জারি করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি সমুদ্র রক্ষার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার টোঙ্গার রাজধানী নুকুয়ালোফাতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপের আঞ্চলিক নেতাদের অংশগ্রহণে এক সম্মেলনে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন তিনি। খবর আল জাজিরার।
জাতিসংঘ মহসচিব বলেন, গ্রিনহাউজ গ্যাস ও সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষতি অপকল্পনীয়। এ থেকেও আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘(জলবায়ুর অবনতি হতে থাকলে) আমাদেরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার মত কোন লাইফবোট নেই।’ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের নেতাদের বৈঠকে হাজারের অধিক আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আলোচ্যসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল।
গুতেরেস বলেন, ‘পুরো বিষয়টি অত্যন্ত অস্বাভাবিক। সম্পূর্ণ মানবসৃষ্ট একটি সংকট হচ্ছে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি। এর পরিণতি খুব দ্রুতই অকল্পনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। এর কারণটাও খুব সাধারণ। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে বিপুল পরিমাণে উত্পন্ন গ্রিন হাউজ গ্যাস বিশ্বকে মারাত্মক উত্তপ্ত করে তুলছে। আর সাগরের পানির উচ্চতাও তাতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রিনহাইজ নিঃসরণ নাটকীয়ভাবে হ্রাস না পেলে এই শতাব্দীর মাঝ নাগাদ প্রশান্ত মহাসাগরের উচ্চতা ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে উপকূলের অনেক স্থানে বছরে অন্তত ৩০দিন বন্যায় প্লাবিত হবার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু সমুদ্র রক্ষা পেলে বেঁচে যাব আমরা। তাই সময় ফুরানোর আগেই সতর্কতায় সাড়া দিয়ে আমাদের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
এদিকে, সোমবার জাতিসংঘের দুইটি প্রতিষ্ঠান সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিশ্ব জলবায়ু সংস্থা ও ক্লাইমেট অ্যাকশন টিমের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ১৯৯০ থেকে ২০২০ সালে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির বৈশ্বিক গড় ১০ সেন্টিমিটার। আর নুকুয়ালোফাতে এই বৃদ্ধি ২১ সেন্টিমিটার। এর ভিত্তিতে গুতেরেস বলেছেন, ‘এই প্রতিবেদন প্রমাণ করে, সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে বৃদ্ধির মাত্রা বেশি, কোন স্থানে তা প্রায় দ্বিগুণ।
জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে রক্ষায় তহবিল গঠনে জি২০ সদস্যদের এগিয়ে আসার আহ্বান বরাবরই জানিয়ে আসছেন গুতেরেস। তিনি বলেছেন, ‘সমুদ্রের স্ফিতীর সঙ্গে আমাদের তহবিলেরও বৃদ্ধি দরকার।’
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির হুমকি নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক আয়োজন করতে চলেছে জারিসংঘ সাধারণ পরিষদ।