অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও সোফি গ্রেগোয়ারের বিচ্ছেদ। ব্যক্তিজীবনের সরলতা, দেখতে আকষর্ণীয় ও মানবিক গুণাবলির কারণে সারা বিশ্বে দারুণ জনপ্রিয় ট্রুডো। সোফির সঙ্গে তার সংসারের বিষয়টিও ছিল অনেকের আগ্রহের এবং আকাঙ্ক্ষার। তাই তাদের বিচ্ছেদের খবরে বিস্মিত কোটি কোটি মানুষ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে তাদের নিয়ে আলোচনা। উঠে এসেছে তাদের পরিচয়, প্রেম ও বিয়ের গল্প। বিয়ের আগে সোফিকে দেওয়া ট্রুডোর প্রতিশ্রুতির বিষয়টি নিয়েও চলছে আলোচনা।

গতকাল বুধবার নিজের ইনস্টাগ্রামে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন ট্রুডো। সোফিও তার ইনস্টাগ্রামে দিয়েছেন একই ঘোষণা। আচমকাই তাদের দেড়যুগের এই সংসার জীবনের ইতিতে অনেকেই বিস্মিত।

অবশ্য এর আগেও ট্রুডো-সোফির পরিচয়, প্রেম, বিয়ে নিয়ে অনেক প্রতিবেদন হয়েছে। এ নিয়ে ২০১৯ সালে একটি প্রতিবেদন করেছিল কানাডার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘নার্সিটি’।

নার্সিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোফির সঙ্গে ট্রুডোর পরিচয়-প্রেম-বিয়ের গল্পটি ছিল অসাধারণ। তারা পরস্পরকে ছোটবেলা থেকেই চিনতেন, জানতেন। কারণ, সোফি ছিলেন ট্রুডোর ছোট ভাই মিশেলের সহপাঠী। এমনকি ছোটবেলায় ট্রুডোদের বাড়িতে সোফি আসা-যাওয়া করতেন, আড্ডা দিতেন।

তবে ট্রুডো-সোফি সত্যিকার অর্থে পরস্পরকে ‘জানেন-বোঝেন’ দুজনই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর। ২০০৩ সালে ট্রুডো ও সোফি একসঙ্গে একটি তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সে সময় তারা একে অপরের সঙ্গে ‘নতুন’ করে পরিচিত হন। তখন তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

কিছুদিন পর ট্রুডোকে ইমেইল করেন সোফি। ইমেইলে সোফি লিখেন, ‘ট্রুডোর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের ব্যাপারটি তিনি উপভোগ করেছেন। কিন্তু সোফির এই ইমেইলের কোনো জবাব দেননি ট্রুডো।’

একই বছরের গ্রীষ্মের শেষ দিকে সড়কে ট্রুডো-সোফির দেখা হয়। এই দেখায় ট্রুডোকে উপেক্ষা করতে চেয়েছিলেন সোফি। তবে এবার সোফিকে ট্রুডো তার সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। সোফি তখন বলেছিলেন, ‘ট্রুডোর যদি সত্যিই তার (সোফি) সঙ্গে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে তিনি যেন তাকে (সোফি) সেই ইমেইলের জবাব দেন।’

প্রথম সেই ডেটে সোফিকে ট্রুডো বলেছিলেন, ‘তিনি তার বাকি জীবন সোফির সঙ্গে কাটাতে চান।’ ট্রুডো জানান, এ কথা বলার পর তারা দুজনই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। কারণ, তারা দুজনই খুব সংবেদনশীল মনের মানুষ।

এর এক বছরের বেশি সময় পর সোফিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ট্রুডো। ২০০৫ সালের ২৮ মে তারা বিয়ে করেন। সংসার শুরু হয়। দীর্ঘ দেড়যুগে তাদের সংসার আলো করে আসে তিন সন্তান।

কিন্তু জীবনের এই পর্বে এসে সেই প্রতিশ্রুতির ইতি টানলেন ট্রুডো-সোফি। সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে পারলেন না তারা। প্রথম ডেটের সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙে আলাদা হয়ে গেলেন আলোচিত এই দম্পতি।