স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথমবারের মতো আরববিশ্ব প্রস্তুত ফুটবলের সবচেয়ে মেগা টুর্নামেন্ট আয়োজনে। মূল আয়োজক কাতার হলেও আশপাশের উপসাগরীয় অঞ্চলেও সাজসাজ রব। প্রতিবেশী দেশগুলোও বিশ্বকাপকে পুঁজি করে পর্যটনের নতুন নতুন দ্বার খুলে দিচ্ছে। এমনকি থাকা খাওয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার প্যাকেজ চালু করতে যাচ্ছে।
এই মহামিলনমেলা শুরু হবে ২১ নভেম্বরেরই আগে। আয়োজক দেশটির আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী বিশ্বকাপের সময় দোহাসহ দেশটির অন্যান্য শহরে প্রায় এক মিলিয়নের বেশি মানুষ পা রাখবে। যেটা পরিবেশের জন্য নতুন দুঃসংবাদই নিয়ে আসতে পারে।
বিশেষ করে উপসাগরীয় দেশ বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, সৌদি আরবসহ, আরব আমিরাতের পরিবেশ আরও উত্তপ্ত এবং বিপর্যস্ত হতে পারে। এর পেছনে মূল কারণ এত এত মানুষের থেকে নির্গত হওয়া কার্বন ডাইঅপাইড।
ফিফা বলছে, তাদের হিসাব অনুযায়ী এই কার্বন নির্গমণের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩.৬ মিলিয়ন টনে, যা কিনা ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের চেয়ে ২.১ মিলিয়ন বেশি। মূলত ভৌগোলিকভাবে ছোট্ট দেশ হওয়ায় সমস্যাটা প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, স্বাভাবিক সময়েই কাতারের বাতাসে কার্বনের আধিক্য থাকে অনেক। তার ওপর বাড়তি মানুষ আসার পর সেটা ভয়ংকর রূপ নিতে পারে।
* কাতার ভ্রমণে যেতে পারে এক মিলিয়নের বেশি মানুষ
* ৩.৬ মিলিয়ন টন কার্বন ডাইঅপাইড নির্গত হতে পারে
* যা রাশিয়া বিশ্বকাপের চেয়ে ২.১ মিলিয়ন টন বেশি
* ৭১ দেশ একত্রে যে পরিমাণ কার্বন নির্গমন করে তারও বেশি
* বিপর্যয় কমাতে ১৬ হাজারের বেশি গাছ রোপণ আয়োজক দেশটির
* বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্গত কার্বন গ্রহণে হিমশিমই খেতে পারে
অবশ্য আয়োজক দেশটি ও ফিফা জোর গলায় বলছে, এই বিশ্বকাপ হবে কার্বন-নিরপেক্ষ বিশ্বকাপ। অসংখ্য মানুষের জমায়েত হওয়ার ফলে কার্বনের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও তারা এর প্রভাব পরিবেশে পড়তে দেবে না। সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আট ভেন্যুর চারপাশ মিলিয়ে ১৬ হাজারের বেশি গাছ রোপণ করা হয়েছে। যেটা অনেকখানি কাজে দেবে।
তবে একদল পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বলছেন, ১৬ হাজারের বেশি গাছ রোপণ করলেও যা পরিমাণের তুলনায় কম। যে পরিমাণ কার্বন নিঃসৃত হবে সেটা শোষণ করতে এই গাছগুলো হিমশিম খেতে পারে। বিশ্বের ৭১টি দেশ একত্রে যতটা কার্বন নির্গমন করে তার চেয়েও বেশি ৩.৬ মিলিয়ন টন।
একটা দিক থেকে তাঁরা (বিশেষজ্ঞ দল) কিছুটা আশার বাণী শুনিয়েছেন, যেহেতু উইন্টার সিজনের লগ্নে বাজবে বিশ্বকাপের বাঁশি, সেহেতু বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অনেকখানি বাড়বে। তা ছাড়া সমুদ্র তীরবর্তী দেশ হওয়ায়ও বাড়তি সুবিধা পাবে কাতার। তার পরও শঙ্কা থেকেই যায়।
কারণ কাতারে বেশিরভাগ সময় শীত পুরোদমে শুরু হয় ডিসেম্বর থেকে। যেটা থাকে ফেব্রুয়ারি অবধি। তাই বিশ্বকাপের শুরুটা হতে পারে ফিফা ও কাতারের জন্য বিশাল ব্যয়েরও, যে ব্যয়ের সিংহভাগই হবে পরিবেশগত; অর্থাৎ পরিবেশ সহনীয় রাখার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে কাতারকে।