অনলাইন ডেস্ক : টরন্টোর বাঙালি সমাজের প্রিয় মুখ বিপ্লবী বানী ভট্টাচার্য গত ২৬শে ডিসেম্বর, শনিবার, দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটে স্ট্রোকজনিত কারণে টরন্টোতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সবার অতি প্রিয় ও সম্মানীত মানবতাবাদী বানী ভট্টাচার্য ১৯৩৬ সালের ১৮ই জানুয়ারি বাংলাদেশের বৃহত্তর ফরিদপুরের রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি সমাজসেবামূলক কাজের সাথে ওত্প্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এবং একেবারে বালক বয়সে ১৯৪৬ সালের হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায় ধর্মীয় চেতনাকে উর্ধ্বে রেখে মানবতার পক্ষে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাতে গিয়ে তিনি পথে নামেন। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগে পরিবারের সাথে তিনি কলকাতায় দেশান্তরিত হন। পঞ্চাশের দশকের শুরুতে বানী ভট্টাচার্য রেভ্যুলুশনারী কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (আরসিপিআই)এর একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য সংগ্রাম করেন এবং বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডের জন্য নয় বছর কারাগারে বন্দী থাকেন। পারিবারিক নাম অহীন্দ্র ভট্টাচার্য হলেও তিনি মূলত তাঁর বিপ্লবী নাম ‘বানী’ নামেই সবার কাছে সুপরিচিত ছিলেন।
আজীবন লড়াকু বানী ভট্টাচার্য সব সময় স্বপ্ন দেখে গেছেন এমন এক সমাজের যেখানে ধর্মীয় পরিচয় যেন কোনভাবেই মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে এবং মানুষের দুঃখের কারণ না হতে পারে। জীবনের শেষ সময়েও তিনি নিজ জন্মভূমির প্রতি প্রবল টান অনুভব করতেন এবং রাজবাড়ীর স্মৃতিতে প্রায়ই আবেগায়িত হয়ে পড়তেন। শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে অসংখ্য মানুষের যে নিজভূমি ত্যাগ করতে হয়েছে বা হচ্ছে সেটা তিনি কখনো মানতে পারেন নি। তিনি আজীবন এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছেন।
বানী ভট্টাচার্য ১৯৭২ সালে কানাডায় অভিবাসী হন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী মিনু ভট্টাচার্য, পুত্র অপু ভট্টাচার্য এবং কন্যা অপর্ণা ভট্টাচার্যকে রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে টরন্টো ফিল্ম ফোরাম এর পক্ষ থেকে গভীর শোক জানানো হয়।