অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারে বিদ্রোহী সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা বাহিনীর লড়াইয়ের কারণে দেশটিতে ২০ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। চলমান লড়াইয়ে কিছু সীমান্ত এলাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জান্তার সেনাবাহিনী। সেনাদের বেশ কয়েকটি সীমান্ত চৌকিও দখল করেছে বিদ্রোহী বাহিনী।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মিয়ানমারে জান্তার অনুগত সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বেসামরিক মানুষকে রক্ষা এবং যুদ্ধকবলিত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ খোলা রাখতে যুদ্ধরত সব পক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
চীন সীমান্তসংলগ্ন শান প্রদেশে জাতিগত তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) যৌথ অভিযানে মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। বিদ্রোহীরা বেশ কয়েকটি শহর ও সামরিক চৌকি দখলে নিয়েছে। এতে জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্য বিরোধী গোষ্ঠীরাও উৎসাহিত হয়েছে।

আরাকান প্রদেশের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াইরত আরাকান আর্মি গত বুধবার দাবি করেছে, অন্তত ২৮ জন পুলিশ সদস্য তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন এবং ১০ সেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরটি দিয়ে বলেছে, গোষ্ঠীটির এই দাবির সত্যতা তারা নিজেরা যাচাই করতে পারেনি।

রাখাইন প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রদেশের রাজধানী সিত্তওয়েতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। শহরে সেনাবাহিনীর বেশ কিছু ট্যাংক অবস্থান নিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও গণমাধ্যম জানিয়েছে, রাখাইনের পাকতো শহরে বৃহস্পতিবার গোলাবর্ষণ করেছে জান্তা বাহিনী। এ ছাড়া হেলিকপ্টার থেকে বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

অন্যদিকে থাইল্যান্ড সীমান্তসংলগ্ন কায়া প্রদেশে জাতিগত কারেন্নি গোষ্ঠী এরই মধ্যে প্রদেশটির অধিকাংশ এলাকা নিজেদের দখলে নিয়েছে। তারা প্রদেশের প্রধান শহর লোইকোতে হামলা চালিয়েছে এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নিয়েছে।

জান্তার ওপর চাপ বজায় রাখতে শান প্রদেশে হামলা অব্যাহত রেখেছে সরকারবিরোধী জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) সশস্ত্র শাখা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)।

পুরনো জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর চেয়ে তুলনামূলক কম শক্তিশালী হলেও সম্প্রতি কাওলিন শহর দখলে নিয়েছে পিডিএফ। এ ছাড়া কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ তিগিয়াং শহরেও হামলা চালিয়েছে তারা। মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেতে গোষ্ঠীটি বেশি সক্রিয়।

সূত্র : বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স