অনলাইন ডেস্ক : রোজার আগেই উত্তপ্ত নিত্যপণ্যের বাজার। রমজাননির্ভর ছয় পণ্য-ছোলা, ভোজ্যতেল, মশুর ডাল, চিনি, খেজুর ও পেঁয়াজের সঙ্গে সব ধরনের মাংসের দাম বেড়েছে দুই মাস আগেই। মসলা জাতীয় পণ্যের দামও আকাশ ছুঁয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেল, আমদানি করা আদা, হলুদ, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে। সরবরাহ ঠিক থাকলেও অতিমুনাফা করতে পাল্লা দিয়ে বাড়ানো হয়েছে চালের দামও। এতে খুচরা বাজারে পণ্য কিনতে এসে ক্রেতার ভোগান্তি চরমে উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে এসব পণ্যের দাম বাড়ার চিত্র সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার পণ্যমূল্য তালিকায় লক্ষ্য করা গেছে। টিসিবির বৃহস্পতিবারের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়-সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৭.০৪ শতাংশ। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে ২.২২ শতাংশ। প্রতি কেজি আমদানি করা হলুদ ৫.২৬ শতাংশ, আদা ১০.৫৩ শতাংশ, মোটা চাল ৪.১৭ শতাংশ, মাঝারি চাল ৩.৬৪ শতাংশ দাম বেড়েছে।
রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দীদার হোসেন বলেন, সাত দিন আগে প্রতি কেজি মোটা স্বর্ণা জাতের চাল ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ৫২-৫৩ টাকায় বিক্রি করছি। প্রতি কেজি মাঝারি আকারের চালের মধ্যে পাইজাম বিক্রি করেছি ৫৮ টাকা। এখন ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি করছি। তিনি জানান, বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মিলাররা মিল পর্যায় থেকে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। যে কারণে পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭২-১৭৪ টাকা, যা সাত দিন আগে ১৭০ টাকা ছিল। আমদানি করা আদা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। যা আগে ২৮০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি আমদানি করা হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা, যা আগে ২০০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা সাত দিন আগে ১৮৫ টাকা ছিল। এ ছাড়া প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, যা আগে ৪৭-৪৮ টাকা ছিল। কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. জাহানারা বেগম বলেন, বাজারে কোনো পণ্য কিনে এখন আর শান্তি নেই। সব পণ্যের দাম বাড়তি। রোজার আগেই সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন চালের দামও বাড়িয়ে বিক্রি করছে। কিন্তু বাজারে চালসহ কোনো পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি নেই। সব পণ্য আছে, চাহিদা মতো কিনতে পারছি, কিন্তু দাম অনেক বেশি। এসব যারা দেখবে, তারা চোখে টিনের চশমা দিয়ে বসে আছে।