সোনা কান্তি বড়ুয়া : প্রকৃতির অপরুপ রুপ নিয়ে বাংলা নব বর্ষবরণে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও! বাংলা ক্যালেন্ডারের নববর্ষ শুরু হয়েছে এবং আজ বাংলাদেশের আনন্দধারায় বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ! প্রীতি ও প্রেমেরপুন্য বাঁধনে বাঙালিত্ব এবং সা¤প্রদায়িকতার মূলোৎপাটনে মনুষ্যত্ব! “এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার / আজি প্রাতেসূর্য ওঠা সফল হলো কার!” বাংলা নব বর্ষবরণে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির সাধনা! ‘তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে, মলিন মর্ম মুছায়ে’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের বাংলা বর্ষবরণের’ মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪২৯!
“গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান,
মিলিয়া বাউলগান আর মুর্শিদী গাইতাম।
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম,
আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে চলছে বর্ষবরণের জোর প্রস্তুতি। অন্যদিকে রমনার বটমূলে প্রভাতি অনুষ্ঠানের মহড়া চলছে ছায়ানটে। গত দু’বছর ছায়ানট অনলাইনে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এ বছর ‘নব আনন্দে জাগো’ প্রতিপাদ্যে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বটমূলে রাগালাপ ও বৈশাখী সংগীতানুষ্ঠান করবে ছায়ানট। বঙ্গাব্দের হৃদয় স্পন্দনে ‘সর্বপ্রথম ‘বাঙালি শব্দ’ চর্যাপদের ৪৯ নম্বর কবিতার মহাকবি ভুসুকু কর্তৃক আবি®কৃত হল।
ভারতে এবং বাংলাদেশে “ধর্মহীন বিজ্ঞান খোঁড়া, বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ।” বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের ২৫৬৭বাংলা সাল (বুদ্ধাব্দ) কে বাদ দিয়ে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে হিন্দু রাজনীতি ইসলামিক বঙ্গাব্দের জন্মদাতা হিজরি সালকে (১৪৪২) বিকৃত করে ১৪২৯ বঙ্গাব্দ বানিয়েছিল! স¤প্রতি বাংলা নববর্ষ সম্বন্ধে বিবিধ প্রবন্ধ পড়ে আমরা জানতে পারলাম যে ১৫৫৬ খৃষ্ঠাব্দ থেকে মোগল সম্রাট আকবর কর্তৃক বাংলাদেশে বাংলা সন প্রচলিত হয়।
বাংলা নববর্ষ সম্বন্ধে ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ! আরবীয় সভ্যতা ও ইসলাম ধর্ম বাংলাদেশে আসার পূর্বে আমাদের ছেলে বিজয় সিংহ শ্রীলংকা জয় করে ‘সিংহল রাজ্য’ প্রতিষ্ঠা করার ইতিহাস উক্ত দেশের ‘মহাবংশ ও দ্বীপবংশ’ নামক ইতিহাসদ্বয়ে সগৌরবে বিরাজমান। আমরা কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের drama “বিজয় সিংহ” ও সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতায় শ্রীলঙ্কা বিজয়ী সর্বপ্রথম বঙ্গবীর বিজয় সিংহ সম্বন্ধে পড়েছি, যিনি ২৫৬৭ বছর পূর্বে শ্রীলংকা জয় করে “সিংহল” নামে রাজ্য শাসন করতেন! ২৫৬৭ বছর পূর্বে শ্রীলংকার মহাবংশ এবং দ্বীপবংশ শীর্ষক ঐতিহাসিক গ্রন্থদ্বয়ের মতে রাজা বিজয় সিংহ বাঙালি ছিলেন । আজ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ লেখা হয় হিজরি (১৪৪২) সালকে বিকৃত করে। আমরা আরব দেশে গিয়ে আজ ১৪২৯ হিজরি সাল বলতে পারি না। এমন ভয়ঙ্কর মিথ্যা দিয়ে বঙ্গাব্দের ইতিহাস রচিত হ’লো অথচ আমাদের জাতীয় বিবেকের জবাবদিহিতার শক্তি মরে ধর্ম নামক বিভিন্নভয় ভীতির কবলে।
স¤প্রতি দেশে বেশ কিছু সা¤প্রদায?িকতা ও ধর্মান্ধতার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে। এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক। তারা এসব ঘটনাকে জাতির জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই শঙ্কার কথা জানান তারা। ১৮ বিশিষ্টজনের উদ্বেগ: সা¤প্রদায়িকতার মূলোৎপাটনের এখনই সময় (BHORER KAGOJ এপ্রিল ৬, ২০২২)! বিবৃতি দেয়া নাগরিকরা হলেন- আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, সারোওয়ার আলী, আবেদ খান, সেলিনা হোসেন, লায়লা হাসান, আবদুস সেলিম, মফিদুল হক, শফি আহমেদ, শাহরিয়ার কবির, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুনতাসীর মামুন, সারা যাকের, শিমুল ইউসুফ ও হারুণ হাবীব।
কোন আইনে লেখা আছে যে, বাংলাদেশে একজন নারী বাংলা নব বর্ষবরণে কপালে টিপ পরতে পারবেন না? আমাদের জাতীয় বিবেকের জবাবদিহিতার শক্তি মরে ধর্ম নামক বিভিন্নভয় ভীতির কবলে এবং বাংলাদেশ আরব দেশ নয়! শনিবার (April 2) রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তিনি অভিযোগ করেন, টিপ পরায় পুলিশের পোশাক পরা একজন তাকে হেনস্তা করেছেন। রাষ্ট্রকাঠামোর অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে। লতার অভিযোগ, তিনি প্রতিবাদ করায় পুলিশের ওই সদস্য মোটরসাইকেল চালিয়ে তার গায়ের ওপর উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সরে গিয়ে রক্ষা পেলেও আহত হন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি পাশেই দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে বিস্তারিত জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার ও জামিন না দেয়া, কলেজশিক্ষক লতা সমাদ্দারকে টিপ পরার কারণে পুলিশ সদস্যের লাঞ্ছনা, মুজিব শতবর্ষে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙা সমর্থন এবং ভাস্কর্য ইসলামবিরোধী কাজ বলে চিহ্নিত করে পুলিশ সদস্যের ফেসবুক ও সরাসরি মাইকে ঘৃণ্য বক্তব্য, ইতোপূর্বে পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষকে ঘৃণা করার শিক্ষা সংবলিত রচনা অন্তর্ভুক্তি, দু’বছর আগে একজন সচিবের টাকনুর উপরে কাপড় পরার বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি এবং বাংলা নববর্ষের প্রভাতে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বিদআত বলে ঘোষণা আমাদের মনে এই ছায়াপাত করে যে, রাষ্ট্রকাঠামোর অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে।
কেন মানুষের মধ্যে এতটা হিংসা অহংকার! আজ মরিলে কাল দুদিন। মানুষ তো মানুষের জন্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা বঙ্গাব্দের অজানা ইতিহাস! আজ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ লেখা হয় হিজরি (১৪৪২) সালকে বিকৃত করে। আমরা আরব দেশে গিয়ে আজ ১৪২৯ হিজরি সাল বলতে পারি না! পৃথিবীর সর্বপ্রথম বাংলা সাহিত্য গ্রন্থ চর্যাপদে বৌদ্ধদের ২৫৬৭ বাংলা (বুদ্ধাব্দ) সাল ছিল! প্রসঙ্গত: প্রতিবছর নববর্ষ উপলক্ষে ১৪ বা ১৫ই এপ্রিল জুড়ে থাইল্যান্ড, লাওস, বার্মা, ভারত, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সিংগাপুর ও ইন্দোনেশিয়ায় “পানি খেলাসহ বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ইংরেজিতে প্রথমে ঢাকা (Dacca) বানান ভুল ছিল এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তা শুদ্ধ (Dhaka) করা হয়েছিল। প্রীতি ও প্রেমের পুন্য বাঁধনে মনুষ্যত্ব! হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্ঠান সহ সকল মানব সন্তান মিলে আমাদের মানবজাতি। সর্বপ্রথম ‘বাঙালি শব্দ’ চর্যাপদের মহাকবি ভুসুকু কর্তৃক আবি®কৃত হল। রাজনীতি ও ধর্ম মানবাধিকারকে ধ্বংস করা অমানবিক অপরাধ বলে কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ভাষায়, “গোত্র দেবতা গর্তে পুরিয়া, / এশিয়া মিলাল শাক্যমুনি (গৌতমবুদ্ধ)।
বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ বাংলাদেশে ‘বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শ্রেণিকক্ষে পাঠ দিতে গিয়ে তিনি ‘ধর্মের অবমাননা’ করেছেন অপরাধে। ‘উগ্র ইসলামপন্থী জঙ্গীরা হিন্দুধর্মের ও বৌদ্ধ’ধর্মের অবমাননা’ করে পক্ষপাতদুষ্ট কেন? ধর্মান্ধদের অন্য ধর্মের প্রতি ভয়ঙ্কর বিদ্বেষটাই নর নারী হত্যাযজ্ঞ! রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ৮ বছর শেষে ৯ বছর অতিবাহিত হলেও মামলার বিচার এখনো শুরু না করে বৌদ্ধধর্মকে খারাপ সাব্যস্ত করে, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কালেক্ট’র স এডিশন ‘বুদ্ধ’ শীর্ষক বই লিখেছেন! মনের ঘরে বসত করে ক‘ জনা? ২৯শে সেপ্টেম্বরের (২০১২ সাল) বাংলাদেশে রামুর বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ শোক! প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ভাবে সরকার কর্তৃক সমর্থিত এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হলো সকল সংখ্যালঘুকেনিশ্চিহ্ন করে বাংলাদেশকে খাঁটি ইসলামী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলা!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো দেশে আস্ফালন করে। এখনো সক্রিয় এই অপশক্তি দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে খুশি নয়। নানা সময় তারা দেশের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। তারা করোনার সময়, পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে এবং এখন তারা দেশের মানুষকে নিয়ে মশকরা শুরু করেছে। এই অপশক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ, দেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে গণহত্যা ও আগুনসন্ত্রাস চালায়; ঠিক তারই পুনরাবৃত্তি ঘটানোর অপচেষ্টা করে এই দেশবিরোধী ও মানবতাবিরোধী ধর্মব্যবসায়ীরা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর, ইসলামের হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ছদ্মবেশে মাঠে নামে রাজাকারদের বংশধররা। ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্র করে দেশকে অস্থির প্রচেষ্টা করছে এরা।”
কতোটা হিন্দু বিদ্বেষী হলে ‘নয়া দিগন্ত’ নামের এই জামায়াতি রাজাকারদের সংবাদমাধ্যম একজন বড়ুয়াকে বানিয়ে দেয় হিন্দু শিক্ষক? চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়ের (জেবি) প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ আনে স্থানীয় মৌলবাদী মুসলমানরা এবং এই অভিযোগ যাচাই-বাছাই না করেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে গুজব ছড়াতে থাকে বাংলাদেশের অন্যান্য মৌলবাদী মুসলমানরা।
ঐ প্রতিষ্ঠানের ৭০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বিশ্লেষণ করে তদন্তে মেলেনি এই অভিযোগের কোনপ্রকার সত্যতা। অভিযোগ করা সেই ছাত্রী লামিয়া বিনতিহা ও তাদের কথিত চাচাদের গ্রেফতার করে তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে এর নেপথ্যে কোন পর্যায়ের চক্রান্ত ছিলো। সা¤প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ করতে দ্রুত এই মৌলবাদী মুসলমান লামিয়া বিনতিহা এবং চাচা মোহাম্মদ মহিব বিল্লাহ সহ অন্যান্য মিথ্যা অভিযোগকারী দের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হোক।
পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশের বিজয় হয়। রাজাকারগণ ইসলামের নামে একাত্তরের ২৫শে মার্চের রাত্রিতে পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খানের ৯৪ হাজার সৈন্যবাহিনীকে সাহার্য করেছিল এবং বারশত মাইল দূরের বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনতাকে তিলে তিলে হত্যা করেছে। ইসলামের নামে আল্লাহর আমানত নর নারীসহ শিশু (আশরাফুল মাকলুকাত) হত্যা করেছে দিনের পর দিন। আজকাল দেখা যাচ্ছে যত্র-তত্র ধর্ম কিছু মানুষের দুর্বৃত্তপনা! সেখানে আমরা নানা ধর্মের নৈতিক শিক্ষার কথা বলতে পারি। কিছু মানুষের দুর্বৃত্তপনা ধর্ম নয়, বিশ্বমানবতায় উদ্ভাসিত ধরনীতল!
প্রধানত, ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশ ঘটানো ও ধর্মীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে নাগরিক উদ্যোগ জোরদার করা দরকার।মৌলবাদীরা ইসলামের নামে ধর্মের মুখোষ পরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে তিলে তিলে ধ্বংস হত্যা করেছে! বাংলাদেশ একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং ইতিহাসের আলোকে সা¤প্রদায়িকতা প্রতিরোধ প্রসঙ্গ!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়ে যারা জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, শিশু নারীদের হত্যা করেছে। সেই হত্যাকারীদের বিচার না করে ইমডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে খুনিদেরকে পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকির দেওয়া হয়েছিল। তাদের নির্বাচন করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীরা যারা, যাদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলন, সেই য্দ্ধুাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিয়ে যারা কারাগারে বন্দি বা সাজাপ্রাপ্ত এমনকি সাত খুনের সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাদেরকেও মুক্তি দিয়ে এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল জিয়াউর রহমান এবং পরবর্তীতে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছিল।”
Comilla Hindu Area কোরাণের উপর আগুন দিল কে রে, আমি খুঁজিয়ে বেড়াই তারে।” আমরা যদি জঙ্গিদের দমনে ব্যর্থ হই তবে এমন বর্বরতা চলতেই থাকবে। পৃথিবীর মানুষ আমাদের ঘৃণার চোখে দেখতেই থাকবে। বাংলাদেশে Md. বরকত ও Md. জামান ১৯৯৮’ এর রিপোর্ট বলছে : অর্পিত সম্পত্তির আওতায় বাংলাদেশে হিন্দুদের ২০ লাখ একরের বেশী জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে (from 1947 to 1965) রাষ্ঠ্রধর্মের সুযোগ নিয়ে! পাকিস্তানের ‘শত্রু’ সম্পত্তি বাংলাদেশে অর্পিত সম্পত্তি শীর্ষক মানবতার কান্না এখন ও থামেনি!
সংসদে সুবর্ণা মুস্তফা বলেন, নারী সমাজের জন্য এটি অত্যন্ত ঘৃণিত একটি ঘটনা। দেশে বখাটেদের ইভটিজিংয়ের ঘটনা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু যখন দেশের আইন রক্ষাকারী কাউকে ইভটিজিংয়ের ভূমিকায় দেখা যায়, তখন তা সবার জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে, একজন নারী টিপ পরতে পারবেন না।
এখানে হিন্দু-মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এমনকি তিনি বিবাহিত না বিধবা, সেটা বিষয় নয়। একটি মেয়ে টিপ পরেছেন। তিনি একজন শিক্ষক। রিকশা থেকে নামার পর দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ইভটিজ করেছেন। প্রতিবাদ করায় তার সঙ্গে তুই-তোকারিও করা হয়েছে। অসম্মান করা হয়েছে।
সংরক্ষিত নারী আসনের এই সদস্য বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দ্রæত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কপালে টিপ পরায় এক নারী শিক্ষককে কটূক্তি ও পায়ে মোটরসাইকেলের চাকা তুলে হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য সুবর্ণা মুস্তফা। তিনি এ ঘটনায় অভিযুক্ত ‘পুলিশ সদস্য’র বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন। রোববার সংসদের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে এ দাবি তোলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
বিবৃতিতে ‘কোমলমতি শিশু-কিশোরদের অবৈজ্ঞানিক শিক্ষা ও সা¤প্রদায?িক পাঠদানই আজকের এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। মনুষ্যত্বের বাঁধনে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির সাধনা ! কেননা আজকের দানবরূপী এই মানুষগুলো একসময় শিশু-কিশোর ছিল। আমরা বাংলাদেশের শিক্ষাধারায় বিজ্ঞানভিত্তিক ও সমতার সমাজ গড়ার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে ঘৃণা সঞ্চার করে এমন রচনা পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেয়ার দাবি করছি। আমরা হৃদয় মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। আর যে কিশোর ছাত্ররা মৌলবাদী চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে অপমান করে পুলিশে সোপর্দ করেছে তাদের মধ্যে মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনের যেসব ব্যক্তি এ ধরনের কাজে সহযোগিতা ও ইন্ধন জোগাচ্ছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।“
‘গত কয়েক বছর যাবৎ সমাজে বিচ্ছিন্নভাবে ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে। যা সামাজিকভাবে জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কতিপয় সদস্য যখন সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে শিক্ষক, শিল্পী ও সাধারণ মানুষকে নানাভাবে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত করছে তখন জনগণের মনে হওয়াটা স্বাভাবিক যে, সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধের মূল চার নীতি এবং মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করতে সচেষ্ট নয়। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতিকে বিধর্মীদের সংস্কৃতি বলে মিথ্যাচার করে সরকারের ও রাষ্ট্রের মধ্যে অবস্থান নেওয়া স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদরের উত্তরসূরিরা আজ রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিপর্যন্ত করে ফেলার প্রয়াস নিয়েছে।’
সা¤প্রদায়িকতার মূলোৎপাটনের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে। এতে আরও বলা হয়, ‘রাষ্ট্র পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দায়িত্বে থাকাকালে প্রতিক্রিয়াশীলদের এ ধরনের ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, আমাদের নির্লিপ্ততায় ধর্মান্ধদের রাষ্ট্রক্ষমতার অভ্যন্তরে শিকড় বিস্তার। এখনই সময় এ প্রবণতা রোধ এবং এর শিকড় উৎপাটনের। আর এই দায়িত্ব মূলত সরকারের। এক্ষেত্রে দ্বিধা ও বিলম্ব মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে।’
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!