অনলাইন ডেস্ক : সালমান রুশদি মনে করেন, একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের অর্থ ‘তালেবানের মতো রাষ্ট্র’ তৈরি করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদি এ কথা বলেন।
লেখক বলেছেন, ‘১৯৮০ সাল থেকে সম্ভবত এখন পর্যন্ত, বলতে গেলে সারাজীবনই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনের জন্য বলে এসেছি। তবে এখন যদি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র তৈরি হয়, তবে তা চালাবে হামাস।
তাতে করে দেশটি একটি ‘তালেবানসদৃশ’ রাষ্ট্রে পরিণত হবে এবং ইরানতুষ্ট রাষ্ট্র হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ মে) প্রকাশিত জার্মান ব্রডকাস্টার রুন্ডফাঙ্ক বার্লিন-ব্র্যান্ডেনবাগের পরিচালিত একটি পডকাস্টে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ-আমেরিকান এই লেখক আরো বলেছেন, ‘পশ্চিমা বামপন্থী প্রগতিশীল আন্দোলনগুলো কি এটাই তৈরি করতে চায়? মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের ঠিক পাশে আরেকটি তালেবান, আরেকটি আয়াতুল্লাহসদৃশ রাষ্ট্র থাকবে?’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই মুহূর্তে গাজায় যে পরিমাণে নির্দোষ বেসামরিকদের মৃত্যু ঘটছে, তাতে যেকোনো মানুষ ব্যথিত হবেই। তবে আমি হামাসের কথাও এখানে উল্লেখ করতে চাই। কারণ সেখান থেকেই এই ঘটনার শুরু হয়েছিল এবং হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।
তরুণ প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির পক্ষে ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে সমর্থন করা খুবই অদ্ভুত।’
রুশদি বলেন, নিউ ইয়র্ক যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিদ্রোহ হয়েছে, সেখানে তিনি একজন ফ্যাকাল্টি সদস্য। এই প্রতিবাদের বিষয়ে তার মিশ্র মতামত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘যদিও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের অধিকার আছে, তবে এর ফলে অন্য শিক্ষার্থীরা যাতে অনিরাপদ বোধ না করে তা নিশ্চিত করাও প্রয়োজন।
’ তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রদের দিকে সশস্ত্র পুলিশ ছুড়ে দেওয়া ভালো কাজ নয়, অন্যদিকে ভবন দখল ও তার ক্ষতিসাধনও ঠিক নয়।’
রুশদি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, এ নিয়ে খুব গভীরে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে না। গাজায় মৃত্যু নিয়ে মানসিক প্রতিক্রিয়া হবেই এবং এটি একেবারে সঠিক। কিন্তু বিষয়টি যখন ইহুদিবিদ্বেষের দিকে যায় এবং কখনো কখনো হামাসকে সমর্থনের দিকে চলে যায়, তখনই খুব সমস্যা।’
২০২২ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন রুশদি।
সে সময়ে তার ওপর ছুরি নিয়ে হামলা করে এক দুর্বৃত্ত। রুশদির ঘাড় এবং পেটে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয়। সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান রুশদি। সেই ঘটনার স্মৃতিই তিনি তুলে ধরেছেন ‘নাইফ’ নামের এই বইতে।
‘নাইফ’ নিয়ে আলোচনা করার জন্য ‘আর্তে উন্দ ভার্তে (স্থান এবং শব্দ)’ পডকাস্টে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি ইরানের তৎকালীন নেতা আয়াতুল্লাহর কথাও বলেন। আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর রুশদির মৃত্যুর আহ্বান জানিয়ে একটি ফতোয়া জারি করেছিলেন, যাকে নিন্দাজনক বলে জানান তিনি।
সূত্র : ডেইলি মেইল