অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি প্রতিদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা প্রতিদিন টেলিভিশনে টকশোতে মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত মিথ্যা বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তারপরও তাদের শান্তি হচ্ছে না।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে এ সব কথা বলেন তিনি।
হানিফ বলেন, বিএনপি কথায় কথায় বলে আমরা তাদের কথা বলার সুযোগ দিচ্ছি না, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। আর কোন গণতন্ত্র চায় তারা? আর কতো কথা বলতে দিলে তাদের মনে হবে যে গণতন্ত্র রয়েছে। বিএনপি যদি মনে করে রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর করে, পেট্রোল বোমা মারলেই গণতন্ত্র আছে, তাহলে সেটি বিএনপি আর দেখবে না। এমন গণতন্ত্র তাদের আর দেওয়া হবে না।
হানিফ বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত আছে এবং বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। আমরা এখন আলোর পথে এগিয়ে যাচ্ছি। মাত্র ৬শ ডলার ছিল আমাদের মাথাপিছু আয়, এখন আমাদের ২৫শ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এদেশ এক সময় ছিল চরম দরিদ্রের দেশ। বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি বলে অ্যাখ্যায়িত ছিল, ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত ছিল। সেই বাংলাদেশ আজকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে। এতো উন্নয়ন দেশের মানুষের ভালো লাগলেও বিএনপির ভালো লাগে না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৭৫ সালে জিয়া ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্য বানিয়েছিল। সে সময় মহান মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান জয় বাংলা নিষিদ্ধ ছিল। শুধু জয় বাংলা নয় সে সময় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ করা হয়। যে ভাষণের জন্য লাখ লাখ মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল জিয়া ক্ষমতা দখলের পর সে ভাষণও নিষিদ্ধ হয়। মুক্তিযুদ্ধের কথা তখন কেউ মুখে আনতে পারতো না। পাকিস্তানিরা পরাজিত হয়ে যে জায়গায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেছিল জিয়া সেখানের স্তম্ভ ভেঙে শিশু পার্ক নির্মাণ করেছেন।
হানিফ বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি দেশকে পূনর্গঠন করেছেন। সেই সময় দেশের সমস্ত রাস্তাঘাট নষ্ট ছিল। তিনি সবকিছু ঠিক করে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করেছিলেন। দেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনীকে তিনি নতুন করে দাঁড় করিয়েছেন এবং একটি আদর্শ রাষ্ট্রের জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই জাতির পিতা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট এগিয়ে গিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে একাত্তরের পরাজিত শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা দখলের পর তারা শুধু স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ধ্বংস করেনি। তারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছিল সেটাকেও ধ্বংস করেছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম পাটোয়ারী দুলাল, চাঁদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুল প্রমুখ।