অনলাইন ডেস্ক : নিজের নামে নতুন ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সি (ডলার ট্রাম্প) চালু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার অভিষেকের কয়েক ঘণ্টা আগে এই ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারমূল্য রেকর্ড প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। ট্রাম্পের একদিন পরে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও নিজ নামে (ডলার মেলানিয়া) ঘোষণা দিয়েছেন নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি হচ্ছে এটি একটি নির্দিষ্ট ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা, যেটি ব্লকচেইন প্রযুক্তি এবং ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে লেনদেনের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। ডিজিটাল মুদ্রা বলতে সাধারণত এমন মুদ্রাকে বোঝানো হয় যা সম্পূর্ণরূপে ইলেকট্রনিক জগতে বিদ্যমান এবং কোনো পদার্থিক রূপ নেই (যেমন কাগজের নোট বা ধাতব মুদ্রা)।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে ক্রিপ্টোকারেন্সি চালুর পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পের ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারমূল্য প্রায় ৫৮৬ কোটি ডলারে পৌঁছায়। কয়েন মার্কেট ক্যাপ ডট কমের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কয়েন মার্কেট ক্যাপের তথ্য অনুযায়ী, টোকেনটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১,১৭০ কোটি ডলার এবং এটি বর্তমানে ১৮তম বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি। গত ২৪ ঘণ্টায় এর লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫,২৫০ কোটি ডলার।
ট্রাম্প শুক্রবার এই ডিজিটাল টোকেনটি চালু করেন, যার ব্র্যান্ডিংয়ে রয়েছে জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া তার ওপর হামলার একটি ছবি। টোকেনের মোট সরবরাহের ৮০ ভাগ মালিকানা সিআইসি ডিজিটাল এলএলসি এবং ফাইট ফাইট ফাইট এলএলসির কাছে।
অন্যদিকে, মেলানিয়া ট্রাম্পও রোববার (১৯ জানুয়ারি) তার নিজস্ব ক্রিপ্টোকারেন্সি চালু করেছেন। কয়েন মার্কেট ক্যাপ জানায়, ট্রাম্পের নামে থাকা ক্রিপ্টোকারেন্সির মোট বাজারমূল্য ৮৭০ কোটি ডলার। আর মেলানিয়ার নামে চালু করা ক্রিপ্টোকারেন্সির মোট বাজারমূল্য প্রায় ১৩০ কোটি ডলার।
এদিকে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি বিশ্বের প্রথম ক্রিপ্টো প্রেসিডেন্ট হবেন এবং ক্রিপ্টো সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতা দূর করে ডিজিটাল সম্পদের প্রচার করতে নির্বাহী আদেশ জারি করবেন।
ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে ক্রিপ্টো ইন্ডাস্ট্রি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে, যা তার নির্বাচনী জয়ের পর বিটকয়েনের বাজারকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।
আর কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় (বাংলাদেশ সময় সোমবার, ২০ জানুয়ারি রাত ১১টা) ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প।
ওয়াশিংটন ডিসিতে সেই কাঙ্ক্ষিত সকাল শুরু হয়েছে যেখানে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ক্ষমতা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। শপথের পরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ট্রাম্প।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন বলা হয়েছে, সাধারণত মার্কিন কংগ্রেস ক্যাপিটল হিলের সামনে উন্মুক্ত জায়গায় শপথ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তবে আজ ওয়াশিংটনে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে (মাইনাস ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ইনডোরে অনুষ্ঠিত হবে তার শপথ অনুষ্ঠান।
ট্রাম্পকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার তিনি ট্রাম্পকে শপথ পড়াবেন। অনুষ্ঠানে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও শপথ নেবেন।
কমপক্ষে ২ লাখ অতিথি অভিষেকে আমন্ত্রিত হয়েছেন। এদের মধ্যে দেশি-বিদেশি শীর্ষ ব্যক্তিরা রয়েছে। অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যান ঝেং, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিসহ অনেকে।
শনিবার ওয়াশিংটনে যাত্রার আগে এনবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প প্রথম দিনই রেকর্ডসংখ্যক নির্বাহী আদেশে সই করার কথা বলেন। তিনি যেসব নির্বাহী আদেশে সই করবেন। এর অনেকগুলোই হচ্ছে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেয়া নীতি বাতিল করা, এমনটি ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প তার নতুন মেয়াদের প্রথম দিন থেকে যেসব কর্মসূচি নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার মধ্যে অভিবাসীর গণবিতাড়ন কর্মসূচিও রয়েছে।