হাবিবুর রহমান, নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় ক্রমেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে শুরু করেছে। খুলেছে রেস্টুরেন্টও। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসে খাবার খাওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে নগরীর অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট আউটসাইড ডাইনিং চালু করেছে। আর ক্রমেই এই আউটসাইড ডাইনিং নগরবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রেস্টুরেন্টের বাইরের খোলা আকাশের নিচে বসে খাবার খাচ্ছে মানুষ।
শুরু থেকেই টেক আউট সেবা চালু থাকলেও মেয়র বিল ডি ব্লাজিও ঘোষণা দিয়েছিলেন, তৃতীয় ধাপে ইনডোর ডাইনিং চালু করা সম্ভব হবে। সে হিসাবে ১ জুলাই থেকে আগের মতোই রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসে গ্রাহকদের খাবার পরিবেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রেস্টুরেন্টের মালিকেরা। শেষ মুহূর্তে মেয়র ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। গ্রিক রেস্টুরেন্ট ও চায়না টাউনের ইতালিয়ান রেস্টুরেন্টগুলোয় আগে থেকেই এই ব্যবস্থা চালু থাকলেও এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নগরীর অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট চালু করেছে এই আউটসাইড ডাইনিং।
জ্যামাইকা, ওজনপার্ক, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস ও জ্যাকসন হাইটসের জনবহুল স্থানে এখন পুরোদমে চালু হয়েছে এই নতুন সিস্টেম। সিটির নির্ধারিত এবং সংক্ষিপ্ত সীমানার সিটিং সিস্টেমেও কর্তৃপক্ষ বর্ণিল সজ্জায় গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। জানা গেছে, শুরুতে জনসমাগম কম হলেও এখন বাইরের খোলা আকাশের নিচে বসে খাবারের পাশাপাশি কফি খাওয়ারও সুযোগ পাচ্ছেন নগরবাসী।
যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ বলেন, আগে জ্যাকসন হাইটসের রেস্টুরেন্টে গভীর রাত পর্যন্ত জমজমাট আড্ডা হতো। করোনাকালে এই কোলাহলময় এলাকা পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। এখন আউটসাইড ডাইনিং চালু হওয়ায় এলাকায় আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসতে শুরু করেছে।
নিউইয়র্কের সুপরিচিত খলিল বিরিয়ানি এবং খলিল হালাল চায়নিজে আউটসাইড ডাইনিং শুরু হয়েছে। প্রথম থেকেই দুই দোকানের সামনে দেশি-বিদেশি ভোজনরসিকদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। ব্রঙ্কস বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এ ইসলাম মামুন বলেন, কোভিড-১৯–এর কারণে কাজে যোগ দিতে না পারায় অনেকের ঘরে বসে বেকার জীবন কাটছে। তবে সম্প্রতি আউটসাইড ডাইনিং চালু হওয়ায় এখানে বসে বন্ধুদের সঙ্গে নির্মল আড্ডা এবং সময় কাটানোর সুযোগ মিলেছে। আবহাওয়া ভালো হলে আউটসাইড ডাইনিং আরও জমজমাট হবে।
খলিল বিরিয়ানির স্বত্বাধিকারী খলিলুর রহমান বলেন, ‘তৃতীয় ধাপে গ্রাহকদের জন্য রেস্টুরেন্টের বসার অনুমতি মিলবে—এমন আশায় ছিলাম। কিন্তু মেয়রের সাম্প্রতিক ঘোষণায় জানা গেল, তা আরও বিলম্বিত হবে। তাই অপেক্ষা না করে দুই দোকানের সামনেই গ্রাহকদের বসার ব্যবস্থা করেছি। তবে সিটির গাইডলাইন অনুযায়ী খাবারের সময় বাদে অপেক্ষার সময়ও গ্রাহকদের মাস্ক ব্যবহার করা আমরা নিশ্চিত করি। আমাদের স্টাফদেরও মাস্ক ও গ্লাভস পরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি। আমি মনে করি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জননিরাপত্তা বিধি মেনেই এগিয়ে যেতে হবে।’
খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘নতুন করে রেস্টুরেন্ট খোলার পর থেকেই মেন্যুতে নতুন নতুন খাবার সংযোজন করেছি। রেগুলার আইটেমের সঙ্গে এখন পাওয়া যাচ্ছে হায়দরাবাদি বিরিয়ানি। হায়দরাবাদের একজন শেফের হাতে তৈরি এই বিরিয়ানি ও কাবাব গ্রাহকদের মন জয় করতে পেরেছে।’