অনলাইন ডেস্ক : কানাডার পূর্বাঞ্চলীয় শহর হ্যালিফ্যাক্সে রোববার গভীর রাতে দাবানলের কারণে সাত দিনের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এরই মধ্যে সেখান থেকে বহু নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। নোভা স্কটিয়া প্রদেশের রাজধানীর পৌর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জরুরি সার্ভিসের কর্মীরা মানুষকে নিরাপদ রাখতে ও দাবানলের কারণে সৃষ্ট হুমকি কমাতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দর নগরীটিতে এরই মধ্যে ব্যাপক ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এই জরুরি অবস্থাসহ সতর্ক ব্যবস্থা আগামী সাত দিন কার্যকর থাকবে। টুইট বার্তায় আরও জানানো হয়েছে, যেখানে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রজার্স ও বেল কানাডার বেল এলিয়েন্টসহ টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলো টুইটার পোস্টে জানিয়েছে, দাবানলের কারণে সরিয়ে নেওয়া কমিউনিটির কিছু গ্রাহক সেবা বঞ্চিত হতে পারে।
চলতি মাসে কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য আলবার্টায়ও দাবানলের কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সেখানের অনেকেই বাধ্য হয় বাড়িঘর ছাড়তে। প্রাথমিকভাবে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ায় এবং ধোঁয়াচ্ছন্নতা ও কিছু এলাকায় সীমিত বৃষ্টিপাতের কারণে স্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা ভয় কাজ করছিল। তারপরও ছুটির সপ্তাহে আলবার্টার দাবানল দমনের কার্যক্রম ততটা খারাপ ছিল না। তবে এতে পুরোপুরি আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। কারণ, ধোয়ায় বাতাস ঠান্ডা করলেও অগ্নিনির্বাপক এয়ারক্রাফট উড্ডয়ন সীমিত হয়ে পড়ে এবং প্রত্যেকের স্বাস্থ্যের জন্যই তা ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।
আলবার্টা দাবানলের বিষয়ে ক্রিস্টি টাকার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ধোয়ার কারণে যা ঘটেছে তাকে মিশ্র বলা যায়। একটা আরেকটিকে ছাড়িয়ে গেছে সেটা আমরা বলতে পারি না। কোনো ধরনের সুযোগ থাকলে তার সুবিধা আমরা গ্রহণ করবো। দাবানল কমানোর মতো কোনো সুযোগ আসলে সেটাও আমরা কাজে লাগাতে সমর্থ হবো।
কর্মকর্তারা গত ২৮ মে, রোববার বলেন, আলবার্টার ফ্রক্স ক্রিকের কাছে ঈগল লেকে আগুনের অংশ যে দাবানল সেখানে শনিবার কিছু বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে দমকলকর্মী ও ভারি যন্ত্রপাতি পরিচালনকারীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে কিছুটা সুযোগ এনে দেয়।আলবার্টা ওয়াইল্ডফায়ারের আবহাওয়াবিদরাও বলেছেন, এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি তাপমাত্রা কম থাকতে পারে।
টাকার বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি নতুন দাবানল দেখা গেছে। আলবার্টাবাসীর বিধিনিষেধের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো ও এটিভি ব্যবহারের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। রোববার পর্যন্ত প্রদেশে ৮৪টি আগুন জ্বলছিল। এর মধ্যে ২৩টি ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এ ঘটনায় ১০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। টাকার বলছিলেন, প্রদেশের দাবানলে ব্যবধান এনে দেওয়ার মতো বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। তারপরও আমরা পুরোপুরি বিপদমুক্ত নই।
আলবার্টা স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেন, জরুরি বিভাগ কতটা পরিদর্শন করেছে অথবা কতটা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হটলাইনের কল পেয়েছে আমার পক্ষে সে সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া সম্ভব না হলেও দূষণের সমস্যা যে আছে সেই ইঙ্গি দেখা যাচ্ছে। সূত্র : সিবিসি নিউজ