অনলাইন ডেস্ক : চীন ও তাইওয়ানের মধ্যকার উত্তেজনা অব্যাহত হয়েছে। এরই মধ্যেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। বিবিসি শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
জিনপিং বলেন, এই পুনরেকত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবেই অর্জিত হওয়া উচিত, কিন্তু একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দেন যে বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরোধিতার ক্ষেত্রে চীনের “গৌরবময় ঐতিহ্য” রয়েছে।
১৯১১ সালের বিপ্লবে চীনের শেষ রাজপরিবারের উচ্ছেদের বার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন জিনপিং।
এদিকে জিনপিংয়ের এই মন্তব্যের জবাবে তাইওয়ান জানিয়েছে, দেশের ভবিষ্যৎ তার জনগণের হাতেই থাকবে।
চীন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে। অন্যদিকে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন দেশ হিসেবে দাবি করে আসছে। তবে চীন তাদের দেখে একটি বিদ্রোহী প্রদেশ হিসেবে।
তাইওয়ানকে চীনের মূলভূমির সাথে আবার যুক্ত করতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং।
এমন এক সময় জিনপিং এ কথা বললেন, যার আগের কিছুদিন ধরে রেকর্ড সংখ্যক চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের বিমান-প্রতিরক্ষা এলাকার মধ্যে ঢুকেছে।
কিছু কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, চীনা যুদ্ধবিমানের এই উড্ডয়নগুলোকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের প্রতি এক সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা যেতে পারে।
রোববার তাইওয়ান তাদের জাতীয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে, এবং তার পটভূমিতেই চীনা যুদ্ধবিমানের এই কর্মকাণ্ডকে দেখা যাচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা এখন গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে, চীনের ওপর চাপ সৃষ্টির নয়া কৌশল হিসেবে এক বছর ধরে গোপনে তাইওয়ানের স্থল ও নৌসেনাদের যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অভিযান বাহিনী ও মেরিন সেনারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাইওয়ানের একাধিক কর্মকর্তা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে তাইওয়ানের সেনাদের গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চত করেছে।
তবে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। অন্যদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনটির সত্যতা নিশ্চিত বা নাকচ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
বিষয়টি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ সম্পর্ককেও আরও উস্কে দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি চীন ও তাইওয়ানের মধ্যকার উত্তেজনা বেড়েছে। তাইওয়ানের আকাশসীমায় বেশ কয়েকবার চীনা যুদ্ধবিমান প্রবেশ করেছে। এছাড়া তাইওয়ানের জলসীমাতেও চীন সমারিক মহড়া চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানিয়েছেন, চীন ও তাইওয়ানের সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।