টরন্টো : দিনভর আনন্দ আর উচ্ছাসের মধ্য দিয়ে গত ২৩ জুলাই স্কারবরোর কর্নেল ড্যানফোর্থ পার্কে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘গ্রেটার নরসিংদী জেলা বাসীর পিকনিক। সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ আর গ্রীষ্মঋতুর উষ্ণ পরশ এবং সেই সঙ্গে মজাদার সব খাবার খেয়ে সবাই উপভোগ করেছেন দিনটি। সারাদিনের হৈচৈ, আড্ডা আর হাস্যকৌতুক পিকনিকের পরিবেশকে করে তুলেছিল সত্যিই আনন্দমুখর। শিশুদের দৌড়-ঝাপ আর কলকাকলি পিকনিকে এনেছিল আনন্দের বাড়তি মাত্রা।

সকাল থেকেই লোকজন আসতে থাকেন পিকনিক স্থলে। এই সময় সকালের নাস্তা পরিবেশন করা হয়। নাস্তায় মজাদার চিতল পিঠাও ছিল। এই পিঠা এনেছিলেন শাহনাজ বেগম।

বেলা বারটা নাগাদ লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে পিকনিকস্থল। তার কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার পর্ব। শিশু-কিশোরদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে জমে উঠে খেলাধুলার পর্ব। এই সময় মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে দর্শকরা তাদের উৎসাহ যোগান।

দুপুরে পরিবেশন করা হয় মধ্যাহ্ন ভোজ। অতিথিগণ ঐ সময় সুশৃংখলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার সংগ্রহ করেন। মজাদার বিভিন্ন পদের খাবার খেয়ে সকলেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলেন।

অপরাহ্নে আবারও শুরু হয় খেলাধুলার পর্ব। এতে অংশ নেন বয়স্করা। ফুটবলসহ আরো কয়েক ধরণের খেলার আয়োজন ছিল বয়স্ক নারী-পুরুষদের খেলাধুলার পর্বে। স্বেচ্ছাসেবীরা সচেষ্ট ছিলেন সুচারুরূপে সবকটি খেলা পরিচালনা করার জন্য। অন্যদিকে অংশগ্রহণকারীরাও স্বতস্ফুর্তভাবে মেতে উঠেন খেলায়।

বিকেলে খেলা শেষে শুরু হয় পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এতে বিভিন্ন ইভেন্টে যারা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়। বিভিন্ন পর্বে খেলা পরিচালনা করেন বজলুর রহমান, নজরুল ইসলাম, শাহ কাউনাইন ও মেহেদী হাসান তুহিন।

গতবারের মত এবারের পিকনিকেও র‌্যাফেল ড্র এর বড় আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশ বিমানে টরন্টো – ঢাকা- টরন্টো রিটার্ন টিকিট। এছাড়াও ৫৫ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি, লেপটপ-সহ ছিল আরো আকর্ষণীয়সব পুরষ্কার। বিমানের টিকিটটি স্পন্সর করেন রিয়েল এস্টেট ব্রোকার জনাব আনোয়ার কামাল। টিভি স্পন্সর করেন ব্যারিস্টার রিজাউন রহমান। এছাড়াও র‌্যাফেল ড্রতে আরো যারা পুরস্কার দেন তারা হলেন, রিয়েলটর মনির ইসলাম, শেখ হাসিব হোসেন, মিঠু সোম, মহসিন ভূইয়া, বজলুর রহমান, ব্যারিস্টার জয়ন্ত কুমার সিনহা, আলাউদ্দিন কাজল, দুলাল ভৌমিক, জামসেদ মোবারক ও মিসেস ফারজানা সারমিন।

পিকনিক কমিটির মধ্যে যারা আর্থিক সহায়তা করেছেন তারা হলেন, মর্টগেজ ব্যবসায়ী এ বি এম খান, আসাবউদ্দিন খান (আসাদ) ও বজলুর রহমান (মারুফ)। তাজমহল ফুডস এর স্বত্তাধিকারী রিয়াজ আহমেদ। নির্মান ব্যাবসায়ী আরমান হোসেন, রিয়েলটর আবুল হাসনাত, রাকিব জামান, রাফি আলম, নাসরিন সুলতানা, ইঞ্জিনিয়ার শাহজাহান সরকার ও লুৎফর কবীর কাজল, আইটি প্রফেশনাল নজরুল ইসলাম, স্কারবোরো সাউথ-ওয়েস্ট লিবারেল এসোসিয়েশনের সেক্রেটারী মার্জিয়া হক, ব্যবসায়ী মশিউর রহমান মুরাদ, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট জুবায়ের জয় এবং সাংবাদিক খুরশিদ আলম। পিকনিক কমিটির বাইরে যারা আর্থিক সহযোগিতা করেছেন তারা হলেন, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, ব্যারিস্টার ওমর আল হাসান জাহিদ ।
মিডিয়া প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘এনআরবি টিভি’র প্রধান নির্বাহী ও ‘বাংলা মেইল’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক শহীদুল ইসলাম, প্রবাসী টিভির পরিচালক ও ভোরের আলোর নিউজ এডিটর দীন ইসলাম এবং ‘প্রবাসী কণ্ঠ’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও প্রকাশক খুরশিদ আলম।

এবারের পিকনিকে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদীর প্রায় সাড়ে তিন শ লোক। যারা পিকনিকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তাদের মধ্যেও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমেদ এবং দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন শাহেদ।

খাবারের দায়িত্বে ছিলেন রিয়াজ আহমেদ। নরসিংদির পিকনিকে প্রতিবারই তিনি মজাদার খাবার সরবরাহ করে সকলের প্রশংসা কুড়ান। তাকে সহযোগিতা করেন উম্মে হানি।

পিকনিকের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আসাবউদ্দিন খান (আসাদ)। তার নেতৃত্বে এবারের পিকনিকও সফল হয়ে উঠে। তাকে সহযোগিতা করেন বজলুর রহমান, নজরুল ইসলাম, রাকিব জামান, আরমান হোসেন, মার্জিয়া হক ও জুবায়ের জয়।