বাংলা কাগজ ডেস্ক: জাতীয় রাজনীতি নিয়ে বয়স্কদের ভাবনার সাথে বাচ্চাদের ভাবনা কি একই সূত্রে গাঁথা থাকে সব সময়? হয় তো থাকে, কিন্তু সব সময় না। সোমবার কানাডার জাতীয় নির্বাচনে গোপন ব্যালটে কানাডীয়ানরা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তার সাথে কি তাদের সন্তানরা একমত পোষন করে? তাদেরও যদি মত প্রকাশের সুযোগ থাকতো তা হলে কি তারা বাবা-মাকে অনুসরণ করেই ভোটের বাক্সে ব্যালট ঢুকাতো? সম্ভবত না।
গত সোমবারের নির্বাচনে কানাডীয়ানরা লিবারেল পার্টিকে মাইনরিটি সরকার গঠনের ম্যান্ডেট দিয়েছে। আগামী প্রজন্ম অর্থ্যাৎ স্কুলের শিক্ষার্থীরাও একই ম্যান্ডেটই দিয়েছে। কিন্তু সংসদের অফিসিয়াল বিরোধী দলের প্রশ্নে কানাডীয়ানদের সঙ্গে তাদের সন্তানদের মতপার্থক্য আকাশ সমান। ফেডারেল নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি অফিসিয়াল বিরোধী দল হিসেবে নির্বাচিত হলেও স্কুলের শিক্ষার্থীদের পছন্দ এনডিপি। অথচ জাতীয় নির্বাচনে এনডিপির অবস্থান চতুর্থস্থানে। কুইবেকের ব্লক কুইবেকো ৩২ আসন নিয়ে তৃতীয়স্থানে উঠে এলেও শিক্ষার্থীরা তাদের এতোগুলো আসন দেয়নি। এমনকি কুইবেকের শিক্ষার্থীরাও ব্লক কুইবেকোকে পেছনে ফেলে রেখেছে। নতুনদেশ ডটকম
আগের একটি পোষ্টে কানাডার স্টুডেন্ট ভোটের কথা বলেছিলাম। কানাডার নাগরিকরা যখন জাতীয় নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য ভোট দিচ্ছিলো একই সময়ে ৮ হাজারের বেশি স্কুলে সমান্তরালভাবে আরেকটি নির্বাচন হয়েছে। ইলেকশন কানাডার সহযোগিতায় এই নির্বাচনে এক মিলিয়নের মতো স্কুল ছাত্ররা ভোট দিয়েছে। নাগরিকদের সামনে ভোটের জন্য যে সব প্রার্থী এবং দল ছিলো, স্কুলের শিক্ষার্থীরাও তাদেরই ভোট দিয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনে লিবারেল পার্টি ১৫৭টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষার্থীদের ভোটে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১১২টি সিট। জাতীয় নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি ১২১টি সিট পেলেও স্কুলের ভোটে তারা পেয়েছে ৯৩টি সিট। স্কুলের ভোটে ৯৮টি সিট পেয়ে এনডিপি দ্বিতীয় স্থানে থেকেছে। জাতীয় নির্বাচনে এনডিপি পেয়েছে মাত্র ২৪টি সিট।
বয়স্কদের কাছে গ্রীণ পার্টির সমাদর না থাকলেও সন্তানদের কাছে এই দলটি যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে। গ্রীণ পার্টি পেয়েছে ২৭টি সিট। মজার ব্যাপার হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের মতোই স্কুলের ভোটেও সামগ্রিকভাবে কনজারভেটিভ পার্টির সমর্থন বেশি ২৫ শতাংশ। লিবারেল পার্টির সমর্থন সেখানে ২২.৩ শতাংশ। রাজনীতি এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্ককে হাতে কলমে জ্ঞানার্জনের জন্য কানাডাজুড়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় দেশের আগামী প্রজন্ম নির্বাচন এবং রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে সত্য, একই সঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ ভোটারদের মনোভাব এবং পছন্দটাও জাতির সামনে পরিস্কার হয়ে যায়।