অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৭ হাজার ৬৫০।
এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৮৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ হাজার ৬৫৮ জনে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার উপত্যকাটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১৩৯ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনি-ইসরায়েল সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় মোট আহতের সংখ্যা ৮৬ হাজার ২৩৭ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়াও মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এক প্রেস বিবৃতিতে নিজেদের পরিষেবাগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের তীব্র ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করেছে। বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দ্রুত হস্তক্ষেপ করতে এবং রোগী ও আহতদের জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের আহ্বান জানানো হয়েছে।
পৃথক এক বিবৃতিতে হামাস ইসরায়েলি সরকারকে অভিযুক্ত করে বলেছে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিরপরাধ বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করছে এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে সকল ধরনের আন্তর্জাতিক আইন, রীতিনীতি এবং মানবিক মূল্যবোধকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করে চলেছে।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।