অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজা নিয়ে একটি বিতর্কিত ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা ‘দখল’ করবে এবং এটি পুনর্গঠন করে বিশ্ববাসীর জন্য উন্মুক্ত করবে। তবে তার এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, গাজাকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো হবে, যা বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান ও আবাসন সৃষ্টি করবে। তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, এই কর্মসংস্থান কার জন্য হবে, কারণ তিনি একইসঙ্গে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন। বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল এর এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করবে এবং আমরা এটিকে পুনর্গঠন করব। আমরা সেখানে থাকা বিপজ্জনক বোমা ও অস্ত্র ধ্বংস করব, বিধ্বস্ত ভবনগুলো সরিয়ে ফেলব এবং এমন একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাব, যা মানুষকে বিপুল কর্মসংস্থান ও আবাসন দেবে।’ তিনি আরও বলেন, গাজাকে মধ্যপ্রাচ্যের ‘রিভেরা’ বানানো হবে, যা অপূর্ব সুন্দর হতে পারে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, গাজা পুনর্নির্মাণ শেষে এটিকে ‘আন্তর্জাতিক এলাকা’ ঘোষণা করা হবে এবং বিশ্ববাসীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তবে তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন যে, ফিলিস্তিনিদের ‘গাজার নরক’ থেকে সরিয়ে ফেলা উচিত। তার ভাষ্যমতে, গাজার ১৮ লাখ অধিবাসীকে মানবিক কারণে অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করা উচিত এবং বেশ কয়েকটি দেশ এতে আগ্রহী।

ট্রাম্প আরও বলেন, গাজার পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে প্রতিবেশী ধনী দেশগুলো থেকে এবং ১২টি পর্যন্ত নতুন স্থান নির্ধারণ করা হতে পারে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা নিরাপদে বসবাস করতে পারবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং একে ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্বের ওপর বড় হুমকি হিসেবে দেখছে।

ইসরাইলের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে ট্রাম্প বলেন, তিনি ইসরাইলের ওপর আগের প্রশাসনের ‘অঘোষিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা’ প্রত্যাহার করেছেন। পাশাপাশি, তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছেন এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার (ইউএনডব্লিউআরএ) প্রতি সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করেছেন।

তার এই বক্তব্য বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বিশেষত, ফিলিস্তিনি জনগণের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গাজা সংকটের একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান বের করা প্রয়োজন, তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলে বিশ্লেষকদের মত। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরাইল