অনলাইন ডেস্ক : তাদের বিয়ে হয়েছে ছয় বছর। এর মধ্যে কোল আলো করে এসেছে দুই সন্তান। কিন্তু এরপরই তাদের জীবনে উঠেছে ঝড়। কারণ সম্প্রতি মেডিক্যাল পরীক্ষায় ব্রিটিশ এই দম্পতি জানতে পেরেছেন তারা আসলে ভাই-বোন!
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য মিরর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে জানায়, ওই দম্পতি নিজেরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের বিস্ময়কর এমন কাহিনি জানিয়েছেন।
যদিও প্রতিবেদনে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। একেবারে ছোটবেলায় তারা পরস্পরের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। স্বামীর দাবি, তাকে খুব ছোটবেলা দত্তক নেওয়া হয়েছিল এবং তার জৈবিক বাবা-মা কারা, তা তার জানা নেই। বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে ভাই-বোনের বৈবাহিক সম্পর্কের প্রচলন রয়েছে। কিন্তু দুই সন্তান হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী জানতে পারছেন তারা আসলে ভাই-বোন, এমন ঘটনা সম্ভবত কখনও ঘটেনি।
দ্য মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মের পরপরই ওই ব্যক্তি তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। একই শহরের অন্য এক দম্পতি তাকে দত্তক নিয়েছিলেন। বড় হওয়ার পর তিনি ওই শহরের এক যুবতীর প্রেমে পড়েন। তারপর তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর এমনকি প্রথম সন্তান হওয়ার পরও তারা জানতেন না যে, তারা ভাই-বোন। জানতে পেরেছেন দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর। সেই সময় স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার কিডনি প্রতিস্থাপনের দরকার হয়। আত্মীয়দের মধ্যে কারও কিডনি দান করার মতো মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। এই সময় স্বামীও পরীক্ষা করান। পরীক্ষার ফল আসতেই চিকিৎসকরা হতবাক হয়ে যান। কারণ তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চিকিৎসকরা ভাই-বোনের মতো মিল পান।
স্বামী বলেছেন, আমি কিডনি দান করতে পারি কি-না দেখার জন্য পরীক্ষা করিয়েছিলাম। আমি জানতাম এটা অসম্ভব। কারণ আমরা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু চিকিৎসকরা আমাকে ফোন করে জানান, মিল পাওয়া গেছে।
এরপর, তারা টিস্যু এইচএলএ (হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন) পরীক্ষাও করেন। সেই পরীক্ষার ফলে দেখা যায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিল অত্যন্ত বেশি। যা একেবারেই অস্বাভাবিক, এ রকম সাধারণত ভাই-বোনদের মধ্যে দেখা যায়। ভাই-বোনের মধ্যে ডিএনএর মিল থাকে ১০০ শতাংশের কাছাকাছি। আর বাবা-মা এবং সন্তানদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ মিল থাকে। তাই এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী আসলে ভাই-বোন বলেই দাবি করেন চিকিৎসকরা।
ওই ব্যক্তি বলেছেন, তাদের সন্তানদের মধ্যে কোনও জেনেটিক ব্যাধি ধরা পড়েনি। তবে তারা ভাই-বোন জানার পর তারা কী করবেন এই নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। নেটিজেনদের পরামর্শ চেয়েছিল ব্রিটিশ এই দম্পতি।
অধিকাংশের মত, তারা বিবাহিত এবং ইতোমধ্যে তাদের বাচ্চাও হয়ে গেছে। কাজেই আর ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। এছাড়া সন্তানদের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতাও দেখা যায়নি। তারা দুজনই সুস্থ। কাজেই তাদের উচিত বাচ্চাদের ভালো বাবা-মা হয়েই থাকা।