অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে কানাডার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে জানিয়ে রবিবার কানাডায় নেথান ফিলিপ্স স্কয়ারে আবারও ‘আই কান্ট ব্রিথ’ শীর্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইতোপূর্বেও টরন্টো-ওটোয়ায় শান্তিপূর্ণ বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।
কানাডার হাউস অফ কমন্স পার্লামেন্টে জাস্টিন ট্রুডো গত সপ্তাহে ছয় মিনিট ৬ সেকেন্ডের মানবতাবাদী বক্তব্য দেন। যেখানে তিনি ন্যায়বিচার, সমতা এবং শান্তির আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধু বর্ণবাদই নয়; আমাদের মাইক্রোগ্র্যাগ্রেশন এবং মাল্টিকালচারাল বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। কানাডা সব সময় শান্তিপূর্ণ দেশ। সে জন্য তিনি মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, দলের কর্মী, বিরোধী দলের সহকর্মী, বিভিন্ন সম্প্রদায় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সকল কানাডিয়ানদের ধন্যবাদ জানান।
বক্তব্যে তিনি বর্ণবাদ, বৈষম্য, কুসংস্কার, হিংসা, সহিংসতা বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই একসাথে দাঁড়াতে হবে। যাতে আমরা আরো ভাল এবং আরো সুন্দর কানাডা গড়ে তুলতে পারি।
তিনি আরো বলেন, অতীতে আমরা কিছু ভুল করেছি, যেসব ভুলের জন্য গভীরভাবে অনুশোচিত এবং সেই ভুল থেকে আমরা শিখতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের লিবারেল সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে কৃষ্ণবিদ্বেষবাদ, পদ্ধতিগত বৈষম্য এবং দেশজুড়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। সেই সাথে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য কাজ করেছি। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ কৃষ্ণাঙ্গ কানাডিয়ানদের জন্য নানা ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বর্ণবাদ বিরোধী সচিবালয় স্থাপন করে ৯ মিলিয়ন তহবিলের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও চাকরি, ন্যায়বিচার, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য ৪.৬ মিলিয়ন ডলারের বাজেট রয়েছে।
স্পিকারকে উদ্দেশে করে তিনি আরো বলেন, আমরা কানাডার এ প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত, উপকূল থেকে আরেক উপকূল পর্যন্ত বর্ণবাদ নির্মূল করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি এবং করে যাবো।
এদিকে কানাডার আলবার্টার ফোর্ট ম্যাকমারিতে তিন মাস আগে অর্থাৎ গত ১০ মার্চ রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) এক সদস্য আদিবাসী অ্যালান অ্যাডামকে আটকের সময় তাকে মাটিতে ফেলে একের পর এক ঘুসি মারেন। সম্প্রতি ভিডিওটি দেখে স্তম্ভিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মন্তব্য করেছেন, এ ঘটনার ‘শেষ দেখে ছাড়বেন’ তিনি।
উল্লেখ্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ইতোমধ্যেই কানাডাবাসীর কাছে ব্যাপক প্রশংসিত এবং পছন্দনীয়। তার এই বক্তব্য এবং সংহতি প্রকাশ কানাডার স্থানীয় মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোড়িত হয়েছে। সাম্প্রতিক এই বর্ণবাদ বিরোধীতে বিশ্বের আর কোনো নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান রাস্তায় কিংবা সংসদে ভূমিকা নেননি; এক মাত্র কানাডার প্রধানমন্ত্রী ছাড়া।
এদিকে, কানাডার রাজধানী অটোয়ায় পার্লামেন্টের সামনে ‘নো জাস্টিস-নো পিস’ নামক এক বর্ণবাদ বিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। ওই র্যালিতে হাততালি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কালো মাস্ক পরে অংশগ্রহণ করেন এবং তিন তিনবার হাঁটু গেড়ে বসে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।