অনলাইন ডেস্ক : পাবলিক হেলথ এজেন্সি অব কানাডা (পিএইচএসি) জানিয়েছে, কুইবেকে দুইজন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এটি কানাডায় এ ধরনের প্রথম ঘটনা। সংস্থাটি বলেছে যে তারা কানাডার সব জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে রোগটি সম্পর্কে সতর্ক করেছে এবং রোগের লক্ষণগুলোর প্রতি তীক্ষè নজর রাখতে বলেছে। বিশেষ করে যারা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ভ্রমণ করছে তাদের প্রতি বাড়তি নজর রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পিএইচএসি গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি (মাঙ্কিপক্স) এখন কানাডা ও সারা বিশ্ব উভয় ক্ষেত্রেই বিস্তার লাভ করছে, কাজেই এ বিষয়ে নজরদারি চলমান রাখা উচিত। মন্ট্রিলের শীর্ষ জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাইলেন ডুইন জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আাহ্বান জানিয়ে বলেন, তার বিভাগ বৃহত্তর মন্ট্রিল অঞ্চলে সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা করছে। এ পর্যন্ত দুই জনের শরীরে মাঙ্কিপক্সের জীবানু পাওয়া গেছে। তাদের একজন দক্ষিণ তীরে আরেকজন লাভালের উত্তরে। তাদের কারো অবস্থাই তেমন গুরুতর নয়।
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব বেশিরভাগই মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে। তবে সা¤প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল ও স্পেনে সন্দেহজনক কয়েকটি কেস সনাক্ত হয়েছে।
ড্রুইন বলেন, মন্ট্রিলে প্রথম মাঙ্কিপক্স সনাক্ত হয় গত ১২ মে। একটি যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ক্লিনিকে এক জনের শরীরে এটি ধরা পড়ে। তিনি বলেন, সমকামী পুরুষদের এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেশি এবং ৩০ থেকে ৫৫ বছর বয়সী পুরুষরাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন। ভাইরাসটি যৌন সংক্রমিত না হলেও এটি মূলত ঘনিষ্ট সম্পর্কের সময় শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে সংক্রমিত হয়। এছাড়া ব্যান্ডেজবিহীন খোলা ঘা, দূষিত কাপড় বা বিছানা স্পর্শ করার মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে।
কুইবেকের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় বুধবার বলেছে, প্রদেশে ভ্রমণ করতে আসা একজনের দেহে মাঙ্কিপক্সের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই ব্যক্তি বোস্টন থেকে এখানে এসেছেন। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কানাডায় ভ্রমণে আসা ব্যক্তিদের বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
গুটিবসন্তের একটি হালকা রূপের সাথে তুলনা করা মাঙ্কিপক্স হল একটি বিরল ভাইরাসজনিত অসুস্থ্যতা যা সাধারণত জ্বর, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা এবং ক্লান্তির মতো উপসর্গগুলো দিয়ে শুরু হয়। এসব প্রাথমিক লক্ষণ সাধারণ ফ্লু এবং অনেক ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের লক্ষণের মতোই। তবে মাঙ্কিপক্সের সবচেয়ে লক্ষনীয় লক্ষণ হলো ত্বকে ফুসকুড়ি বা ক্ষত সৃষ্টি হওয়া। মন্ট্রিলের লা লিকর্ন ক্লিনিকের চিকিৎসক রবার্ট পিলারস্কি বলেন, ‘এগুলো খুব নির্দিষ্ট। দেখতে মিনি আগ্নেয়গিরির মতো’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই ভাইরাসটির দু’টি স্বতন্ত্র ধরন রয়েছে। একটি মধ্য আফ্রিকান বা কঙ্গো বেসিন এবং অন্যটি পশ্চিম আফ্রিকান ধরন। পিলারস্কি বলেন, ইউরোপ আমেরিকায় সম্ভবত পশ্চিমা ধরনটি রয়েছে যা অপেক্ষাকৃত কম সংক্রমক। তবে আমরা সতর্ক না হলে এটিও বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। সূত্র : সিবিসি