অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বের বৃহত্তম অরণ্য আমাজন পুরো পৃথিবীর প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। তাই আমাজনকে পৃথিবীর ফুসফুস বলেই আখ্যায়িত করা হয় । ৭০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই অরণ্যের প্রায় ৫৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকাটি মূলত আর্দ্র জলবায়ু দ্বারা বেষ্টিত। নাম না জানা নানা উপজাতির বাসস্থান সহ আমাজন জঙ্গলে রয়েছে ১৬ হাজার প্রজাতির গাছগাছালি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ দাবানলের শিকার হচ্ছে এটি। বর্তমান আমাজন ও তার প্রাণীকুলের ভয়াবহ দুর্দশা নিয়ে ধারাবাহিক ৩ পর্বের প্রথম পর্ব আজ।

গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে এবারের ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডে আমাজনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আমাজনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস হলে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ব্রাজিলের আমাজোনাস, রন্ডোনিয়া, পারা ও মাতো গ্রোসো এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। ব্রাজিলের ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সির তথ্যমতে, গত বছরের জুলাইয়ে যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল তার চেয়ে এই বছরের জুলাইয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অনেক বেড়েছে।

গত নয় বছরের মধ্যে ২০১৯ সালের আগস্টে আমাজনে আগুনের ভয়াবহতা ছিল সবচেয়ে বেশি৷ তবে এ বছরের আগস্টে আগুনের যে অবস্থা তা গত বছরের ভয়াবহতাকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশংকা বিশেষজ্ঞদের৷ ব্রাজিলের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইনে বলছে, আগস্টের প্রথম ১০দিনে ১০ হাজার স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে, এক বছর আগে এই সময়ে এর ১৭ শতাংশ স্থানে আগুন জ্বলেছিল৷

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগুনের প্রকৃতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটা স্বাভাবিক আগুন নয়, অর্থাৎ প্রকৃতির সৃষ্ট নয়৷ অবৈধভাবে জমি দখল, কৃষিকাজ, জমি পরিষ্কারের জন্য অরণ্যে আগুন লাগিয়েছে মানুষ৷

এ বিষয়ে ব্রাজিলের আমাজন এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান আনে আলেঙ্কার বলেন, এটা খুব ভয়াবহ ইঙ্গিত। আমরা আশা করছি সেপ্টেম্বর থেকে দাবানলের পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

আইএনপির তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাস লাক্সেমবার্গের চেয়ে বড় অঞ্চল তথা ব্রাজিলিয়ান অ্যামাজনে বন কাটার রেকর্ড বিগত ইতিহাস কে হার মানিয়েছে ইতিমধ্যে ৩,০৬৯ বর্গকিলোমিটার (১,১৮৫ বর্গমাইল) বনভূমি সাফ করে দিয়েছে তারা।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইন ফরেস্ট রক্ষায় আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে ব্রাজিল সরকারের উপর৷ আমাজন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে৷ ফলে এই অরণ্যের ক্ষতি হলে বিশ্বে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ আশংকাজনক হারে বেড়েই চলবে৷