অনলাইন ডেস্ক : চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চলচ্চিত্র সংগঠক এনায়েত করিম বাবুল কথাসাহিত্যিক মাহমুদুল হক এর উপন্যাস ‘জীবন আমার বোন’ অবলম্বনে নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ‘জীবন আমার বোন’ নামের পূর্ণ দৈর্ঘ্য কাহিনি চলচ্চিত্র। এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য তিনি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৫৫ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে পেয়েছেন। উল্লেখ্য, এই অর্থ বছরে পূর্ণ দৈর্ঘ্য, স্বল্প দৈর্ঘ্য এবং প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের জন্য মোট ২২ জনকে বিভিন্ন অর্থ মূল্যের অনুদানের বিষয়টি ইতোমধ্যে সরকারীভাবে জানানো হয়েছে।
এনায়েত করিম বাবুলের জন্ম ও বেড়ে উঠা ঢাকা শহরে। তিনি বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম এবং বাংলাদেশের স্বাধীন ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। ১৯৮৬ সালে স্বল্প দৈর্ঘ্যের কাহিনি চলচ্চিত্র ‘চাক্কী’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ জগতে প্রবেশ করেন। সেই বছরেই তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে চলচ্চিত্র বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য ভারতের পুনায় অবস্থিত প্রসিদ্ধ চলচ্চিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন অব ইন্ডিয়া’য় (এফটিআইআই) যান এবং চলচ্চিত্র বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন।
তাঁর নেতৃত্বে নির্মিত স্বল্প দৈর্ঘ্যের কাহিনি চলচ্চিত্র ‘ঢাকা টোকাই’ নির্মাণের জন্য তিনি ১৯৮৬ সালে জার্মানীর ওভারজাইজেন অনুষ্ঠিত ৩২তম ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘বেস্ট ইয়ুথ এওয়ার্ড’ লাভ করেন। এনায়েত করিম বাবুল ১৯৯০ সালে কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ তাঁর চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’ এর জন্য পুরস্কৃত হন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাহিনি ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্রসমূহ হচ্ছে, ‘চাক্কী’ (১৯৮৬), ‘ঢাকা টোকাই’ (১৯৯৬), ‘মেঘমল্লার’ (১৯৯০), ‘নেশার দেশ’ (১৯৮৯), লেমস্খালি থেকে প্রেমেশিয়া’ (১৯৯১), ‘দ্য মেইন থিং সারভাইভাল’, ‘অভিবাসী’ (১৯৯৯), ‘নিঃসঙ্গ নির্বাসন’ (২০০১), ‘মুক্তিযুদ্ধের রেনু’ (২০১৫) এবং ‘বুড়িগঙ্গা ৭১’ (২০১৯)।
উল্লেখ্য, তিনিই প্রথম বাংলাদেশী যিনি উত্তর আমেরিকায় ‘অভিবাসী’ ও ‘নিঃসঙ্গ নির্বাসন’ নামে বাংলা ভাষায় দুটি পূর্ণ দৈর্ঘ্য কাহিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কবিরের সহকারী পরিচালক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনিপশ্চিম জার্মানীর বার্লিনের একটি টেলিভিশনে অভিবাসন বিষয়ক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ করেন। তিনি প্রায় ২০ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক এর ‘টিভি এশিয়া’য় কর্মরত ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে নিউইয়র্ক এ প্রথম বাংলাদেশী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের সংগঠন ‘নিউইয়র্ক ফিল্ম সেন্টার’ গঠিত হয় এবং তিনি ছিলেন সেটার প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট।
তিনি ১৯৯৬ সালে কানাডায় অভিবাসী হলেও ২০১৪ সাল থেকে তিনি স্থায়ীভাবে টরন্টো শহরে বসবাস শুরু করেন। তাঁর উদ্যোগে ২০১৪ সালে টরন্টোতে চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন ‘টরন্টো ফিল্ম ফোরাম’ এর যাত্রা শুরু হয়। তিনি সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট।
এনায়েত করিম বাবুল বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বহির্বিশ্বে প্রচারের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
‘জীবন আমার বোন’ চলচ্চিত্র নির্মাণেবাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুদান লাভ করার জন্য এনায়েত করিম বাবুলের প্রতি ‘বাংলা কাগজ’ এর পক্ষ থেকে অভিনন্দন।