অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচনের পর প্রথম জনসমাবেশে হাজির হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচনের ফল চুরি করেছে। তবে আমরা এখনো জিততে পারি। জর্জিয়ায় এক জনসমাবেশে তিনি এ কথা বলেছেন। এদিকে জর্জিয়ায় জো বাইডেনের জয় উলটে দিতে সাহায্য করার জন্য রাজ্যটির রিপাবলিকান গভর্নরের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন ট্রাম্প। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

যুক্তরাষ্ট্রে গত ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জয়ী হয়েছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরাজয় মেনে নেননি। বরং তিনি ডেমোক্র্যাটদের রিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন। তিনি এখনো নির্বাচনের ফল উলটে দিতে পারেন বলে মনে করেন।

জানুয়ারিতে জর্জিয়ায় সিনেটের নির্বাচন হবে। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে থাকবে সেটা ঐ নির্বাচনে নির্ধারণ হবে। গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনের প্রচারণায় জোগ দিতে শনিবার জর্জিয়া যান ট্রাম্প। ভালডোস্টাতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কোনো প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনে কারচুপি ও প্রতারণা করেছে কিন্তু আমরা এখনো এটি জিততে পারি। এ সময় উপস্থিত সমর্থকরা ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে ‘চুরি থামাও’ ও ‘আরো চার বছর’ বলে স্লোগান দেয়। তবে ট্রাম্পের ভাষণে মনে হয়েছে তিনি হার স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আসন্ন বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের পররাষ্ট্র নীতি শিগিগরই উলটে দেবে।

এদিকে জর্জিয়ায় বাইডেনের জয় বদলে দিতে সাহায্য করার জন্য রাজ্যের রিপাবলিকান গভর্নরের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন ট্রাম্প। ধারাবাহিক কয়েকটি টুইট বার্তায় তিনি গভর্নর ব্রায়ান কেম্পকে রাজ্য আইনসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন। জর্জিয়ার জনসমাবেশে হাজির হওয়ার আগে এসব টুইট করেন তিনি। ১৯৯২ সালের পর কোনো ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এবারই জর্জিয়ায় জিতেছে। কিন্তু জয়ের ব্যবধান বেশি নয়। ট্রাম্প টিমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দফায় জর্জিয়ায় ভোট গণনা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করে রাজ্য সরকার ফল প্রত্যায়ন করেছে।

খবরে বলা হযেছে, শনিবার সকালে ট্রাম্প কেম্পকে ফোন করে ডাকযোগে ভোট দেওয়া ভোটারদের স্বাক্ষর নিরীক্ষা করার দাবি তুলতে বলেন। কিন্তু এ ধরনের কোনো নিরীক্ষা আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় কেম্প প্রেসিডেন্টের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। জবাবে টুইটে ট্রাম্প বলেন, আপনি যা করতে বলছেন আপনার লোকজন তা করতে অস্বীকার করছে। তারা কী লুকাচ্ছে? অন্তত এখনই আইনসভার একটি বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করুন। যা আপনি সহজেই, তাত্ক্ষণিকভাবেই করতে পারেন। পরে সমাবেশে ট্রাম্প আবারও কেম্পকে নিয়ে বলেন, গভর্নরকে অনেক কঠোর হতে হয়।

উল্লেখ্য, ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সব অঙ্গরাজ্যকে নির্বাচনের ফল প্রত্যায়ন করতে হবে। তবে এর আগে আইনি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবে। ফল প্রত্যায়নের পর আগামী ১৪ ডিসেম্বর মনোনীত ইলেকটোরাল কলেজ ভোটাররা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করবেন। মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেবেন।