বিদ্যুৎ সরকার : ৩.
রক্তিম ও শুভম বাল্যবন্ধু। সেই শৈশব থেকে একসাথে তাদের বেড়ে উঠা। একই স্কুল, কলেজ এমন কি ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত একই সাথে লেখাপড়া। পড়াশেষ করে রক্তিম একটি প্রাইভেট কোম্পানি উচ্চ পদে ভালো সেলারিতে চাকুরি করতে শুরু করে দিল। শুভমের ইচ্ছে বাইরে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া। এখানেই দুজনের চয়েজের পার্থক্য দেখা দিল। শুভম পাঁচ বছর লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করে চারটার্ড একাউন্টটেন্ট হিসেবে কিছুদিন চাকুরি করে দেশে ফিরে আসে এবং একটি মাল্টিনেশান্যাল কোম্পানিতে জয়েন করে। কয়েক বছরের মধ্যে তার পদোন্নতি ঘটে ও একটি ঈর্শনীয় পর্যায় চলে যায় শুভম। প্রতি মাসেই তার বিদেশে ট্যুর করতে হয় বিভিন্ন কোম্পানির ওয়ার্কশপ, সেমিনারে গেষ্ট লেকচারার হিসেবে বক্তৃতা দিতে। অর্থ ও খ্যাতি দুটোই শুভমের জীবনে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। তবুও শুভম স্বাভাবিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত। ভালোবেসে একজনকে বিয়ে করে সুখের সংসার শুরু করে শুভম। কিন্তু সেই সুখ আর বেশিদিন রইলো কই? সোহানার মৃত্যু শুভমের জীবনের একটি মাইল ফলক। এখানে বুঝি পুরোপুরি থমকে যেতে হয় তাকে। মাস কয়েক কাজে মন দিতে পারেনি, সব কিছু কেন যানি অর্থ শুন্য মনে হচ্ছিল। এ অবস্থার অবসান হতে বেশ কয়েক মাস লেগেছিল শুভমের। শুভমের মানসিক এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে কোম্পানির হেড অফিসে অর্থাৎ কানাডার অফিসে কিছু সয়ের জন্য তার সম্মতিতেই চিফ কন্সালটেন্ট হিসেবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়।

এরই মধ্যে প্রায় দু’বছর গড়িয়ে গেছে শুভমের কানাডায় প্রবাস জীবনের। দেশটির সামাজিক, পরিবেশবান্ধব জীবন যাপন তাকে বাকিটা সময় এখানেই থেকে যেতে উদ্বুদ্ধ করে। বিশেষ করে এর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পৃথিবীর অন্যতম পরিষেবা দিয়ে থাকে বলে শুভমের দৃঢ় বিশ্বাস। সকালে কম্পিউটারে মেইল খুলতেই অনেকটাই অবাক হয়ে গেল বন্ধু রক্তিমের হঠাৎ কানাডা আগমনের বার্তা পেয়ে। রক্তিম আসছে এবং তার ওখানেই উঠছে। এ দারুন একটি তাজা খবর তাকে ভীষণভাবে উজ্জীবিত করে তুললো মুহূর্তের মধ্যে। অতীতের সমস্ত স্মৃতি একের পর এক চোখের সামনে এসে ভীড় করতে লাগলো। আজকের সকালটা শুভমের অন্যান্য সকালগুলোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হোয়ে গেল ছোট্ট একটি খবরের মাধ্যমেই। কাল বাদেই পরশু রক্তিম আসছে সরাসরি ওর বাসাতেই, কী এক শিহরণ তার রক্ত কণিকায়! কত বছর পর তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে গল্প বলতে পারবে রাতভর। কত না বলা কথার পাহাড় পুঞ্জিভূত হয়ে আছে দু’জনের মনের মাঝে। দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনি তারা একসাথে একই গৃহে ক্ষণিকের বসবাস। তবুও তো মনে দোলা লাগবে, জীবন ছন্দময় হবে।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গড়ম জলে স্নান সেরে রেডি হয়ে গেল এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্যে। বড় ফোর্ড গাড়িটি নিয়ে নিল লাগেজ কেরির জন্য। সময়মত পৌঁছে গেল এয়ারপোর্টে। কিছুক্ষণের মধ্যেই রক্তিম একটি ট্রলি ঠেলতে ঠেলতে ওয়েটিং লাউঞ্জের গেট দিয়ে বের হয়ে আসছে, তার সাথে সাথে লাল প্যান্ট ও সাদা টপস পরা একটি মেয়েও। শুভম বুঝে উঠতে পারছিল না মেয়েটি কে? রক্তিমের সাথের কেও কি? কাছে আসতেই প্রায় দৌড়ে গিয়ে রক্তিমকে সজোড়ে বুকে জড়িয়ে ধরলো শুভম। কত্তোদিন পর দেখা, বুকের ভেতর সবকটি হৃদস্পন্দন যেন অনুভব করছিল দু’জনেই। পরিচয় করিয়ে দেই, ওর নাম রিমঝিম আমার বড় মেয়ের ছোট সন্তান, এবার হলিক্রস কলেজ থেকে সসম্মানে সম্মান ডিগ্রি নিয়ে কানাডায় পড়তে এসেছে। রিমঝিমিই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো, নাইস টু মিট য়্যু। শুভম রিমঝিমের উষ্ণ নরম হাতে মৃদু চাপ দিয়ে প্রতি উত্তরে বললো, ইটস মাই প্লেজার। গাড়ি ড্রইভ করতে করতে রিমঝিমের কাছে জানতে চাইলো, হাউ ওয়াজ জার্নি? সাথে সাথেই রিমঝিম জানালো, নট ঠু বেড।

: রিমঝিমের ইচ্ছে ওকে নিয়ে আমিই যেন কানাডায় আসি। তোর মতো একজন দিল দড়িয়া বন্ধু এখানে আছে, সেটাই যেন তার কাছে বিরাট প্লাস পয়েন্ট। তাই আমাকেই আসতে হলো।
: খুব ভালো করেছিস। ক’দিন মন খুলে জম্পেস আড্ডা দেয়া যাবে দু’জনে মিলে। ভাবতে পারিস কতো দিন দেখা নেই, কথা নেই!
শহরে ঢোকার মুখেই একটি মেন্ডারিন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট। ওখানেই গাড়ি ঢুকিয়ে পার্ক করে দু’জনকে নেমে আসতে বললো। রেস্টুরেন্টে ঢুকে কর্নারের একটি টেবিলে তিনজন বসে পড়লো। শুভম ওদেরকে বললো ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হোয়ে আসতে। আসার পর রিমঝিমকে বললো এখানে বুফে সিস্টেম, ফুড দেয়া আছে, তোমার পছন্দ মতো নিয়ে নিতে পারবে। খেতে খেতে রিমঝিমের কাছে জানতে চাইলো ও কোন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে, কোন সাবজেক্ট তার চয়েজ ইত্যাদি ইত্যাদি। খাওয়া শেষ হলে ঝটপট গাড়ি চালিয়ে বাসায় পৌঁছে গেলো। শুভমের তিন বেডের বাসা। সুতরাং রিমঝিমের জন্য আলাদা একটি রুম গুছিয়ে দিয়ে বললো ওখানে শুয়ে রেস্ট নিতে, যতক্ষণ তার ইচ্ছে। শুধু বিকেলে চা খাওয়ার সময় হলে ডাকবে। এই বলে শুভম চলে গেল বন্ধু রক্তিমের ঘরে। তাকেও কিছুটা সময় রেস্ট নিতে বলে নিজ ঘরে চলে আসলো শুভম।

পরদিন ব্র্যাকফাস্ট করতে করতে নানান প্রসংগ চলে আসে, তাদের শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা। দু’জনেই ক্ষণিকের জন্য কিছুটা আবেগাপ্লæত হয়ে গেল। হঠাৎ রিমঝিম চলে আসাতে তাদের গুরুগম্ভীর পরিবেশে স্বাভাবিকতা
ফিরে আসে।
: গুডমর্নিং, ঘুম হোয়েছে তো?
: অফ এন্ড অন, নো সাউন্ড স্লিপ।
: কয়েকটা দিন তোমার এমন যাবে হয়তো, চিন্তা করো না ঠিক হোয়ে যাবে।
: ইটস ওকে। টাইমের হের ফের এমনটা হওয়া অস্বাভিক কিছু নয়, মেনে নিতে হবে।
রক্তিম কি কাজে ভিতরে গেলে রিমঝিম শুভমকে জিজ্ঞেস করলো-
: হাউ আই কেন এড্রেস ইয়্যু?
: ইয়্যু কেন এড্রেস মি বাই নেম অলসো। বাট নো দাদু, সিম্পলি ভাই।
: ওকে, মাঝে মাঝে শুধু ‘শুভ’ কিংবা ‘শু’ বলেই ডাকবো তোমাকে। উড ইয়্যু মাইন্ড?
: আই উড বি রেদার হ্যাপি। কোথাও যেতে চাও এ বেলা?
: বেটার সন্ধেতে বের হই, কি বল?
: ও কে, তাই হবে।
ব্র্যাকফাস্ট শেষ করে রিমঝিম চলে গেল তার রুমে, এর মধ্যে রক্তিম এসে আবার আড্ডায় জয়েন করলো। সে জানালো এক সপ্তাহ পর তাকে চলে যেতে হবে। একটা জরুরি কাজের জন্য তার এভাবে চলে যাওয়া। ইচ্ছে ছিল বেশ কিছুদিন কানাডায় বেড়ানোর কিন্তু তা আর এ যাত্রায় হলো না।

বিকেলে ডাউন টাউনের কয়েকটি স্থান ঘুরে এলো সবাই। শুভম ডাইনিং টেবিলে ডিনার গুছিয়ে ওদের দু’জনকে আসতে বললো। তিনজন একসাথে খেতে বসে রিমঝিমের প্রসংগ উত্থাপন করলো।
: ওর জন্য আমাদের প্রথম কাজ হলো ওকে নিয়ে কাল ওর ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে ওর সমস্ত কাজ সেরে ফেলা। তারপর, ওর জন্য ডর্মে বা অন্য কোথাও থাকার জন্য একটি সিট ঠিক করে দেয়া।
: তোর কিংবা রিমঝিমের তেমন কোন অসুবিধে না থাকলে আমার বাসায়তো থাকতে পারে, দুটি বেড রুম এমনিতেই ফাঁকা পড়ে থাকে। কালে-ভদ্রে বন্ধু বান্ধব আসলে হয়তো থাকে, তার সম্ভাবনা আগামী দু এক বছরের মধ্যে দেখছি না। আর আমার বাসা থেকে ওর ইউনিভার্সিটি খুবই কাছে। ড্রাইভিং জানা থাকলেতো আমার ছোটো গাড়িটি নিয়েও যাতায়াত করতে পারবে।
: আমার ড্রাইভিং জানা আছে কিন্তু এখানে নতুন করে আবার লাইসেন্স নিতে হবে আমাকে। সেজন্য কিছুদিন প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি পরীক্ষাও দিতে হবে।
: তোমার দেখি সবই জানা।
: ঠিক তা নয় তবে, খুব প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো একটু আপডেট করে এসেছি।
: তাহলে মনে মনে তুমি ডিসিশন নিয়ে নিয়েছো যে তুমি শুভমের বাসায় থাকছো?
: হোয়াই নট, ইন অল রেস্পেক্ট দিস প্লেস ইজ ভেরি কনভিনিয়েন্ট এন্ড কম্ফোর্টেবল।
: যাহোক তোমার থাকার ব্যাপারে অনেকটা নির্ভার হওয়া গেল এখন শুধু ভার্সিটির ফরমালিটিসগুলো সেরে ফেলা এই যা।

আজ সকালের ফ্লাইটে রক্তিম টরন্টো ছেড়ে চলে গেল দেশের উদ্দেশ্যে। তাই সকাল থেকেই রিমঝিমের মন কিছুটা ভারি হয়ে আছে। কারণে-অকারণে কাছের মানুষগুলো হঠাৎ দূরে চলে গেলে মন খারাপ হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। ওর এ অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হবে। তাই দুপুরের দিকে রিমঝিমকে নিয়ে বের হয়ে পড়লো শুভম। একটি বাঙ্গালী রেস্তোরাঁ আড্ডায় দুপুরের লাঞ্চ সেরে গেল স্কারবরো শপিং মলে সেখানে আইস্ক্রিম খেতে খেতে রিমঝিমের কাছে জানতে চাইলো এখন কোন মুভি দেখতে তার আপত্তি আছে কি না? রিমঝিম মাথা নেড়ে সায় দিল। ওখানের সিনেপ্লেক্সে হৃত্তিক চক্রবর্তী অভিনীত রাজ চক্রবর্তীর বাংলা মুভি ‘একজন আনোয়ার স্যার’ দেখে বাসায় ফিরলো।
চা আর কিছু কুকিজ নিয়ে শুভম রিমঝিমকে নিয়ে বাসার বেকইয়ার্ডে এসে বসলো। কাপে চা ঢালতে ঢালতে রিমঝিমের কাছে জানতে চাইলো –
: মুভি কেমন লাগলো তোমার?
: বেশ ভাল লেগেছে। গল্পে নতুনত্ব আছে। সাধারণত আমাদের দেশে বিশেষ করে বাংলায় এ ধরনের ছবি খুব কমই দেখতে পাওয়া যায়। তাই বলে এ ধরনের ঘটনা যে ঘটছে না তা কিন্তু নয়। ছবি তো জীবনেরই প্রতিচ্ছবি, জীবন থেকে নেয়া। তোমার কেমন লেগেছে?
: আমারও ভাল লেগেছে। আর, পশ্চিমা দেশগুলোতে এ ধরনের ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে এবং ছায়াছবিতেও তার রূপায়ণ ঘটে থাকে।

: আমিতো এখানে দোষের কিছু দেখছি না। একটি মেয়ের অপর কোন ছেলেকে ভাল লাগতেই পারে এটা একান্তই পরস্পরের মনের ব্যাপার। এখানে বয়স, শিক্ষা, ধর্ম এ বিষয়গুলো একেবারেই গৌণ। এগুলো চিন্তায় এনে, ভাবনায় রেখে তবেই না মন দেয়া-নেয়ার রসায়ন রচিত হয়ে থাকে। সুতরাং এখানে আমাদের মতামতে কিছু যায় আসে না। অনেকটা নদীর স্রোতের মত, সে তার আপন গতিতে নিজ নিশানায় চলতে থাকবে। এখনে যে দিকটি বিবেচনায় আনা যেতে পারে তা হলো উভয়ের মেচ্যুরিটি। শুধু ইমোশনের বশবর্তি হয়ে ঘটনা প্রবাহ ঘটলে সেখানে সমস্যা হতে পারে।
: আসলেই মন দেয়া-নেয়ার ব্যাপারটা একান্তই দু’জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ, এখানে তৃতীয় পক্ষের আসা অশোভন। তোমার সাথে আমি এক মত। যা হোক দুপুর থেকে সন্ধ্যা অব্দি ভালোই কাটলো, বল রাতে কী খেতে চাও?
: রাতের ব্যাপারটা আমার উপর ছেড়ে দাও, তোমাকে একটি নতুন কিছু বানিয়ে খাওয়াবো।
: তুমিতো সবে আসলে এখন তোমার প্রচুর রেষ্ট নেয়া প্রয়োজন, পড়ে না হয় দেখা যাবে আজ নয়।
: না না আজই আমি করবো, একবার যখন বলে ফেলেছি আমাকে করতে দাও প্লিজ।
: ও কে, তুমিই করবে।
ডিনার করতে গিয়ে শুভম সাধারণত এক কিংবা দু’পেগ রেড ওয়াইন পান করতে পছন্দ করে, তাই নিয়ে নিল এবং রিমঝিমকে বললো তার ওয়াইন নিতে কোন আপত্তি আছে কি না?

: আজ আমি দু’পেগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই। এমনিতেই ঘুমের কিছুটা অসুবিধে হচ্ছে, জেটল্যাগের ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
: খুবই স্বাভাবিক, অনেকের দু-তিন দিনের মধ্যে কেটে যায় আবার কারোর এক সপ্তাহেরও অধিক সময় লেগে যায়।
: কাল তোমার প্রথম ক্লাস, কটায় শুরু?
: সকাল সারে আটটায় এবং শেষ দুপুর দেরটায়।
: ভালোই হলো আমার একটা মিটিং আছে সকাল ন’টায়, এখন তোমাকে ইউনিভার্সিটিতে পৌঁছে দিয়ে মিটিং শেষে ফেরার পথে আবার তোমাকে পিক করে নিয়ে আসা যাবে।
: বার বার কেন আমার জন্য এতো কষ্ট করবে?
: কি যে বল না, এতোটুকু সহযোগিতা তোমার জন্য করবো না? প্রথম কটা দিনতো তোমার সব কিছু চিনে নিতে হবে তারপরই না একা একা আসা-যাওয়া।
: আসলে তোমাকে একটু কষ্ট দিয়ে ফেলছি।
: কামন বেবি ডোন্ট বি ঠু মাচ সিলি। লিভ ইট, কোন স্ন্যাকস কি এনেছো?
: আনিনি কিনে নেবো চিন্তা করো না।

গাড়িটা একটু স্লো করে একটা মেগডোনালের সামনে দাঁড়িয়ে ঝটপট একটা র‌্যাপ নিয়ে নিল শুভম। ক্যাম্পাসের গেটে নামিয়ে দিতেই রিমঝিম শুভমকে বাই বলে ক্লাসের দিকে ছুটতে লাগলো। রিমঝিমের এ রকমের ছোট ছোট চপলতা শুভমের ভাল লাগে। শুভম চলে গেল তার অফিসে। অফিসে জরুরি মিটিং শেষে সরাসরি চলে আসে রিমঝিমের ইউনিভার্সিটির গেটে। কিছুক্ষণের মধ্যে রিমঝিমও চলে আসে ওখানে। গাড়ি চলে আসে উডবাইন বিচের কাছাকাছি একটি মেক্সিকান রেস্তোরাঁয়, সেখানে লাঞ্চ করতে করতে দু’জনের অনেক বিষয়েই কথা হচ্ছিল ওয়েস্টার্ন কালচার, মিউজিক, এডুকেশন সিস্টেম এমন কি রিলিজিয়াস সম্পর্কেও। রিমঝিমের যেকোন বিষয়ে আলোচনা করতে ভালো লাগে। তার বিশ্বাস এতে করে নানান বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা যায়। হলিক্রসে পড়া অবস্থায় বিভিন্ন বিতর্ক অনুষ্ঠানে যোগদান করে তার এ ইচ্ছেটা আরও প্রকট হয়েছে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেও বাঙ্গালি সংস্কৃতির প্রতি তার জানার আগ্রহের তারিফ করতে হয়। রিমঝিম যে যথেষ্ট স্মার্ট শুভম প্রথম দেখাতেই তা বুঝে নিয়েছে। বাসায় ফিরে একটু ন্যাপ নিয়ে সাওয়ার নিয়ে চলে গেল ব্যাকইয়ার্ডে সেখানে আগে থেকেই একটা ফটোগ্রাফিক মেগাজিন দেখছিল শুভম। ফটোগ্রাফি শুভমের অন্যতম শখ। বিশেষ করে ল্যান্ডস্কেপ ও মডেলিংয়ের ছবি তোলা। একটি হাল্কা সাদা সার্ট ও সাদা লিলেনের ট্রাওজার পরে রিমঝিম চেয়ার টেনে শুভমের পাশে এসে বসলো।

মিষ্টি একটি গন্ধে পরিবেশ আরও মধুময় হয়ে উঠলো।
: কী নেবে তুমি? কোন হার্ড ড্রিংক অর ওয়াইন?
: দুটোর একটিও না, চিল্ড বিয়ার হলে ভাল হয়।
শুভম উঠে গিয়ে ফ্রিজ থেকে দুটো হ্যানিক্যান? বিয়ার ও কিছু কাজুবাদাম নিয়ে এলো।
: আজ কেমন ভেপসা গড়ম পড়েছে দেখেছো, মনে হয় বৃষ্টি হবে। দেশের বৃষ্টি ভীষণ মিস করবো এখানে। বিশেষ করে টিনের চালের বৃষ্টি পড়ার ঝুম ঝুম শব্দ।তখন পাশে যে থাকবে তাকে জড়িয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
: আজ যদি এখানে বৃষ্টি হয় তখন কাকে জড়িয়ে ঘুমুবে তুমি?
: কেন তুমি তো আছো, নাকি?
: পারবে?
: কেন পারবো না? তুমি জানতেই পারবে না কখন এসে তোমাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছি আমি।

সকাল বেলায় শুভমের ঘুম ভাংতেই দেখে সত্যি সত্যি রিমঝিম ওকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে গিয়েছিল তাই শীত অনুভব করছিল রিমঝিম। একটা পাতলা কম্ফর্ট রিমঝিমের গায়ে মেলে দিয়ে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে চলে গেল কিচেনে ব্র্যাকফাস্ট তৈরি করতে। ব্র্যাকফাস্ট রেডি করে শুভম রিমঝিমকে ডাকতে গেল। তখনও রিমঝিম ঘুমিয়ে। আলতো করে কপালে হাত রেখে রিমঝিমকে বার দুয়েক ডাকতেই মিট মিট করে শুভমের দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে ওর মুখটা কাছে টেনে নিয়ে আস্তে করে বললো – ‘আমাকে একটু আদর করে দাও তা হলে ঝটপট উঠে যাব।’
শুভম দু’জনের জন্য চা বানাতে বানাতে জিজ্ঞেস করলো – ‘রাতে তোমার ঘুম কেমন হলো?’
: ভাগ্যিস তুমি পাশে ছিলে, তা না হলে কাকে জড়িয়ে ঘুমাতাম বল, অনেক শীত শীত করছিল।
: আমি চলে গেলে তখন তুমি কাকে জড়িয়ে ঘুমোবে?
: আমাকে একলা রেখে তুমি কেমন করে যাবে?
: সে বিষয়টি যে আমার ভাবনায় আসেনি তা নয়।
কিন্তু, আমার তো এক সময় ফিরে যেতে হবে। আমি দেশকে ভীষণভাবে মিস করি। মাঝে মাঝে আমি আসবো তোমাকে দেখতে আর আমার শরীর চেক আপ করাতে।
: আমি অনেক মিস করবো তোমাকে।
: নো বেবি, আমি সবসময়ই তোমার সাথেই আছি।
: কবে যাবার প্ল্যান তোমার?
: না, এক্ষুনি যাচ্ছি না, তাও বেশ কয়েক মাস পর।
: বাঁচালে, আমিতো ভাবলাম দু’এক সপ্তাহের মধ্যে।

: কিযে বল, তোমাকে তো এখনো সব চেনানো হলো না, আর কোথাও নিয়ে যাওয়া হলো না বেড়ানোর জন্য। দেখি এ উইক এন্ডে নায়েগ্রা যাওয়া যায় কি না।
: ঠিক বলেছো, ওটা দিয়েই শুরু হোক আমাদের বেড়ানোর পালা। আর, একটি রাত ওখানে থাকতে চাই।
: তাতো অবশ্যই। রাতের নায়েগ্রা সেতো অপরূপ। বিশেষ করে নায়েগ্রা ফল্স-এ রাতে রঙিন আলোর খেলা। এখনই বুকিং দিয়ে দেই হোটেলে। যেখান থেকে ফল্স বেডে শুয়েই দেখতে পাবো দু’জনে মিলে। আগেভাগে বুকিং দিলে এ সুবিধেটা ভাগ্যে জুটেও যেতে পারে।
: প্লিজ, এক্ষুনি দিয়ে দাও। ইন এডভান্স এখনই একটু আদর করে দিচ্ছি তোমাকে।
রিমঝিম কানাডায় এসেছে আজ থেকে প্রায় দশ মাস আগে যতটিকু আমার মনে পড়ে। এরই মধ্যে টরন্টোর অনেক কিছুই তার চেনা-জানা হয়ে গেছে সুতরাং এখন সে একাই পথ চলতে পারে। আর যে বিরাট একটি কাজ তড়িৎ গতিতে সম্পন্ন করতে সমর্থ হোয়েছে তা হলো ড্রাইভিং লাইসেন্স আচিভ করা। এখন দু’জন কোথাও গেলে রিমঝিমই ড্রাইভিং সিট আগে-ভাগে দখল করে নেয়। আমিও মনে মনে সেটাই আশা করতাম। রিমঝিমের বেশ কিছু ভাল বন্ধু হয়েছে, বেশিরভাগই ওর ক্লাসমেট বাকি কয়েকজন অন্য সাবজেক্টের কিন্তু একই বেচের। এদের মধ্যে লিনা বেশি কাছের বন্ধু। কখনো কখনো বন্ধুরা মিলে হ্যাংগআউটে গেলে রাতটা লিনার সাথে ডর্মেই কাটিয়ে দেয়। অবশ্য আগে-ভাগে ফোন করে জানিয়ে দিতে ভুল করে না। সে বাসায় না থাকলে একটি নির্জনতা, একাকিত্ব আমাকে ভীষণভাবে উদাস করে দেয়, কোন কিছুতেই মন বসে না যেন। বিরাট এক শূন্যতা এসে আশ্রয় নেয় মনের ভেতর, নিদ্রাহীন রাতগুলো দীর্ঘ হতে থাকে অবুঝের মত। রিমঝিম এগুলো বুঝে, জানে তবুও মাঝে মাঝে আমাকে কষ্ট দিতে ওর নাকি ভাল লাগে। আমিও মনে মনে হাসি ওর এ সমস্ত উদ্ভট পরিকল্পিত কষ্ট দেয়ার প্রক্রিয়া দেখে। ওর সততা, আস্থাশীলতা, সরলতা আমাকে আকৃষ্ট করে বার বার, প্রতিবার।

কাল বাদে পরশু রিমঝিমের জন্মদিন। এ খবরটা লিনা আমাকে ফোন করে জানাতেই একটি দুষ্টুমি মাথায় খেললো দু’জনের। রিমঝিম যেন কিছুতেই জানতে পারে না যে আমরা ওকে সারপ্রাইজ বার্থ ডে পার্টি উপহার দিচ্ছি। নিলা ইচ্ছে করেই একটু রাত করে রিমঝিমের সাথে আমার এখানে চলে আসবে। আর, আমি এরই মধ্যে সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করে ফেলবো। লিভিং রুমটা সম্পূর্ণ চেঞ্জ করে পার্টি উপযোগী করে ফেললাম- ফুল, টুনি লাইট, কেক, রিমঝিমের প্রিয় খাবার-দাবার,
উপহার সামগ্রী সব কিছু দিয়েই সাজানো হলো।
রিমঝিম চায়নি শুধু শুধু এসব করতে গিয়ে আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে। কিন্তু লিনা ও আমি তার ভাবনাকে বদলে দিলাম নিমিষেই। একটু পড়েই ওরা এসে পৌঁছাচ্ছে। রিমঝিমের প্রিয় লিওসায়ারের গানটি – আই লাভ য়্যু মোর দ্যান আই ক্যান ছে’ চলতে থাকলো।

দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে তো রিমঝিম বাকরুদ্ধ। সামনে পেয়েই সজোড়ে জড়িয়ে ধরে আমাকে ‘হাগ’ দিল। আমিও তাকে আলতো করে ওর ঠোঁটে একটু আদের করে দিলাম। চোখের কোনে একটু একটু জল বিন্দু নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো আমার পানে। লিনা এসে জড়িয়ে ধরে উইশ করলো। লিনা ও আমি দু’জনে দু’টি ফুলের তোড়া রিমঝিমের হাতে তুলে দিলাম। ও অনেক ইমোশান্যাল। একটু ভালোবাসা পেলে অনেক আপ্লæত হয়ে পড়ে সে। মিউজিকের তালে তালে আমরা তিন জনে নাচতে শুরু করে দিলাম। রিমঝিম, লিনা দু’জনেই সুন্দর ফিগারের অধিকারী, নাচেও ভাল। এরই মধ্যে ফ্রিজ থেকে চিল্ড বিয়ার এনে গøাসে ঢেলে দিলাম। বিয়ারে সিপ দিয়ে সারা দিনের ক্লান্তি অনেকটাই দূর হলো।নাচ শেষ হতে হতে রাত বেশ গড়াল। কেক কেটে শুভ জন্মদিনের সূচনা করে ডিনারের জন্য আহবান করলো রিমঝিম। এরই মধ্যে লিনা ওকে বললো উপহার গুলো খুলে দেখাতে। একটি বø্যাক অপিয়াম ইউ ডি কলোন, কয়েকটি টি সার্ট, শর্টস ও একটি রিস্ট ওয়াচ-এতো কিছু দেখে রিমঝিম সত্যিই অভিভূত। আর চোখে একবার লিনার দিকে তাকিয়ে পড়ে আমার দিকে। তার দৃষ্টিতে একটু শাসনের রেখা বিদ্যমান ছিল। ডিনার করতে করতে রিমঝিমের কন্ঠে উচ্চারিত হলো ভাল লাগা, ভালোবাসার বর্ণমালা। লিনা ও আমাকে যারপর নাই প্রশংসায় প্রশংসায় জর্জরিত করে তোলা।

: বিদেশ বিভূঁইয়ে এতো যত্ন করে, ভালোবেসে আমার জন্মদিন উদযাপন করলে সত্যিই আমি অভিভূত। আর এত্তো এত্তো সুন্দর উপহার সামগ্রী দিয়ে আমাকে কতো না চমকে দিলে! তোমাদের আদরে আদরে সিক্ত করে রেখেছো আমায়।
: রাত অনেক হলো এখন তো ঘুমানোর পালা?
: মোটেও না, সারা রাত তোমার গল্প শুনবো, তোমার জীবনের গল্প, ভালোবাসার গল্প। তোমার প্রথম প্রেম, প্রথম প্রেম পত্র সব জানতে ইচ্ছে করে ভীষণ। য়্যু উড বি ইন বিটুইন আস, সারা রাত তুমি গল্প বলে যাবে আমরা দু’জন তোমার দু’পাশে শুয়ে শুনে যাবো। আর, তুমি যদি আমাদের গল্প শুনতে চাও সেটা অবশ্যই শুনাবো।
রিমঝিমের অনুরোধে সবকিছুই সেরকম চলতে থাকলো রাতভর। সকালের সোনাঝরা রোদ এসে শুভমের ঘুম ভেঙে দেয়। চোখ মেলে দেখে দু’জন দু’পাশ থেকে তাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। ওদের আলতোভাবে ছাড়িয়ে নিয়ে খুব সন্তর্পণে বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হয়ে নিতে। কোনরকম ঝামেলায় না গিয়ে রেস্তোরাঁয় অর্ডার দিয়ে ব্রেকফাস্ট আনিয়ে নিল। এরই মধ্যে ওরা দু’জনও ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিল। শুভম ওদের দু’জনকে ডাইনিং টেবিলে আসতে বললে ওরা এসে বসে পড়লো। ব্রেকফাস্ট করতে করতে তিনজন মিলে রাজ্যের গল্প শুরু করে দিল। আজ ছুটির দিন তাই কোন রাশ ছিল না কোন কিছুতে, সব কিছুই চলছিল দুলকি চালে।
: চল, মাস্কোকা ঘুরে আসি। ওখানকার লেকটাও বেশ, ইচ্ছে করলে স্বচ্ছ জলে গা ভিজিয়ে সাঁতার কটতে পার দু’জনে।
: আমরা দু’জন কেন শুধু? তোমাকেও নামতে হবে না বুঝি?
: আমি জলকে ভীষণ ভয় পাই যে!
: আমরা দু’জন আছি তো, প্রয়োজনে সর্বদা তোমার পাশে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবেই থাকবো, নো অরিস ডিয়ার।

: ঠিক আছে, তোমাদের যা যা প্রয়োজন বিশেষ করে সুইমিং কস্টিউম নিতে ভুল করোনা যেন!
: সব কিছু ছেড়ে তোমার ঐ দিকেই নজড় গেল?
: তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয় সে কি মোর অপরাধ! আমি বললেই দোষ? আর বেসিকেলি তোমরাতো সুন্দর তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং দেখতে বা দেখাতে আপত্তি কোথায় বল?
: ও কে, আমরা আমাদের যা যা প্রয়োজন তা ঠিক ঠিক নিয়ে নেবো, তোমারগুলোও মনে করে নিও কিন্তু! ক্যামেরা নিতে ভুল করো না যেন।
: আর কিছু না গেলেও ক্যামেরা অবশ্যই যাবে। তোমাদের সুন্দর সুন্দর ছবিগুলো কে তুলবে বল?

লেকের জলে দিনভর স্নান, সাঁতার কাটা, বার বি কিউ, বিকেলে আশ-পাশ ঘুরে দেখা, রাতের অনেকটা সময় গল্পে গল্পে সুন্দর একটি দিন মাস্কোকায় কাটিয়ে এখন টরন্টোতে ফিরে যাবার পালা। সকালের ব্র্যাকফাস্ট শেষ করে গাড়িতে উঠে বসলো তিনজন। গাড়ি চালাচ্ছে রিমঝিম। গাড়ির গতি কখনো সীমার মধ্যে থাকছে, বেশিরভাগ সময়ই গতি-সিমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। এতে কাহারও ভ্রুক্ষেপ ছিলো না। ঝলমলে রোদেলা সকাল ফুরফুরে দক্ষিণা বাতাস।

হাই স্পিডে একটি কভার্ডভ্যান তাদের কাছে এসে অনেকটা ইচ্ছে করেই চাপছিল। রিমঝিম স্টিওয়ারিং -এর ব্যালেন্স হারিয়ে পাশের ডিভাইডারে আঘাত করে। ডিভাইডার ভেঙে গাড়ির বিভিন্ন অংশের কিছু কিছু টুকরো রাস্তার দু’ধারে ছড়িয়ে পড়ে ছিল। দু’দিকের গাড়িগুলো পুরোপুরি থেমে যায়। সাথে সাথে ট্রফিক পুলিশের গাড়ি ছুটে আসে দুর্ঘটনা স্থলে। তাদের তিনজনই মারাত্মকভাবে আহত, নাক, মুখ, মাথা ফেটে অঝরে রক্ত ঝরছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এয়ার এম্বুলেন্স এসে আহত তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে গেল জরুরি ভিত্তিতে। ঘন্টাখানেক পর টিভি চ্যানেলগুলো থেকে ব্রেকিং নিউজ দিচ্ছিল বার বার। ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা করছে তাদেরকে আশংকা মুক্ত করে তুলতে। রাত গভীরেও অবস্থার কোন পরিবর্তন আসেনি।

পুনশ্চ
গল্পের শেষটায় দুটি ফলাফলের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, তার যে কোন একটি অবশ্যম্ভাবী।
প্রথমটি হলো, ডাক্তার এইমাত্র জানালেন তারা তিনজনই পুরোপুরি শংকা মুক্ত।
দ্বিতীয়টি হলো ডাক্তারের ভাষ্যমতে আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাদের কাউকেই রক্ষা করা সম্ভব হলো না।
এখন শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনা।

বিদ্যুৎ সরকার : লেখক ও আলোকচিত্রী, টরন্টো, কানাডা