অনলাইন ডেস্ক : ছয় বছর আগে ২০১৭ সালে টেসলা কর্তা ইলন মাস্ক বলেছিলেন তিনি চূড়ান্ত অবসাদে ভুগছেন। সেই সময় তার চিকিৎসাও নাকি চলছিল। টুইটারের মালিক হওয়ার পর থেকে তার অবসাদ আরও বেড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। অবসাদ কাটাতে তিনি নাকি নিষিদ্ধ ড্রাগ কেটামাইন নিচ্ছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইলন মাস্ক কেটামাইন ড্রাগ নেন। এমনকি রাতের পার্টিতে গেলেও তিনি নিয়ম করে নিষিদ্ধ মাদক কেটামাইন নেন।
তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এই দাবি নিয়ে ইলন মাস্ক বা তার মুখপাত্র মুখ খোলেননি। তবে কেটামাইনের ব্যাপারে বহু আগে এক সক্ষাৎকারে ইলন মাস্ক দাবি করেছিলেন, অবসাদ কাটাতে, মন ভাল রাখতে কেটামাইন নেওয়া যেতে পারে। তিনি নিয়মিত নেন কিনা সেটা অবশ্য জানাননি মাস্ক।
কিছুদিন আগেও অবসাদ নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল মাস্ককে। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ মানুষই অবসাদে ভুগছেন। মাস্কের দাবি ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কেন্দ্রস্থল সিলিকন ভ্যালিতে অনেক কর্মী এবং কর্তাই এই ধরনের সাইকেডেলিক ওষুধ নেন।
কেটামাইন কী?
সাদা পাউডারের মতো দেখতে। স্বাদ বা কোনও গন্ধ নেই। এটি পানিতে মিশিয়ে পানের পরই বেহুঁশ হয়ে যেতে হয়। এই মাদকের নেশা এমনই গভীর যে কিছুক্ষণের জন্য কোনও জ্ঞান থাকে না সেভাবে। সেই সময় কী ঘটছে তাও মনে থাকে না।
মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) জানিয়েছে, এটি এক ধরনের স্কেডিউল-৩ ওষুধ, যা শরীর এবং মনের উপরও প্রভাব ফেলে। সাধারণত অসাড় করার কাজে এই ড্রাগ ব্যবহার করা হয়। লোকাল অ্যানাস্থেশিয়া করার কাজে খুব কম মাত্রায় এই ড্রাগ ব্যবহার করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত। তবে মাদক হিসেবে নেশার জন্য অনেকেই এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ন্ত্রিত মাত্রার বেশি কেটামাইন শরীরে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। ঘণ্টা খানেকের জন্য শরীরের নার্ভ বা স্নায়ু অসাড় হয়ে যেতে পারে। এর দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে শরীরে। ড্রাগ বেশি করে নিলে হ্যালুসিনেশন হবে। রোগী ভুল দেখবে, ভুল কথা বলবে। মাথা কাজ করবে না। স্মৃতিনাশ, এমনকী ব্রেন ড্যামেজ হতে পারে।
১৯৬২ সালে কেটামাইনের আবিষ্কার করেন কেলভিন স্টিভেন্স। ১৯৭০ থেকে মানুষের শরীরে কেটামাইন প্রয়োগের ছাড়পত্র দেয় এফডিএ। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর চিকিৎসকরা কেটামাইনের ব্যবহার শুরু করেন। পেইন কিলার হিসেবে আহত সেনাদের কেটামাইন দেওয়া শুরু হয়।
সাম্প্রতিক পরীক্ষা -নিরীক্ষায় গবেষকরা মনে করছেন , অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে এই ওষুধ কার্যকরী। তবে কেটামাইন মানসিক রোগ বা অবসাদের নিরাময়ের জন্য ভাল কিনা সে নিয়ে নানা মত আছে। অনেকেই বলেন কেটামাইন অবসাদ দূর করে না। বরং মানসিকভাবে উত্তেজিত করে তোলে।
চিকিৎসকরা বলেন, এই ড্রাগ বেশি মাত্রায় নিলে অপরাধের প্রবণতা জাগতে পারে মনে, ধর্ষণের ইচ্ছেও হতে পারে।
সূত্র: দ্য ওয়াল