অনলাইন ডেস্ক : তরমুজ বহু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সুস্বাদু ও রসালো ফল। শিশু থেকে বয়ষ্ক সবাই এই ফলটি পছন্দ করেন। গ্রীষ্মের এই সময়ে রোজা রাখায় শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এজন্য ইফতারে রাখা যেতে পারে মৌসুমি এই ফল।
এ ব্যাপারে ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হসপিটালের পুষ্টিবিদ ফাহমিদা হাশেম জানিয়েছেন, তরমুজের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা।
তিনি বলেন, তরমুজে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে। এছাড়া এতে থাকে অনেকগুলো খনিজ উপাদান। এর মধ্যে অন্যতম উপাদান হচ্ছে আয়রন। আয়রন রক্ত এবং রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায্য করে। সুতরাং যাদের রক্তস্বল্পতা বা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম তাদের জন্য এই ফল উপকারী।
এ জন্য ইফতারিতে তরমুজ রাখলে রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন এমন সবার জন্য এই ফল সহায়ক হতে পারে বলে জানান এই পুষ্টিবিদ।
তিনি বলেন, তরমুজে আছে যথেষ্ট ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে এবং মজবুত করতে সহায়তা করে। বিশেষত বয়ষ্ক মানুষের জন্য এটি হতে পারে খুব ভালো খাবার।
ফাহমিদা হাশেম বলেন, তরমুজে সবচেয়ে বেশি থাকে ভিটামিন ‘সি’। ভিটামিন ‘সি’ এমন একিটি উপাদান যা প্রতিদিনই শরীরের জন্য প্রয়োজন হয়। কারণ প্রশ্রাবের সঙ্গে প্রতিদিনিই ভিটামিন ‘সি’ বের হয়ে য়ায়। এজন্য তরমুজ হতে পারে প্রতিদিনের খাবারে একটি উপযোগী ফল।
এছাড়া তরমুজে থাকে ভিটামিন ‘এ’। যে ফলে রঙের প্রাধন্য বেশি থাকে তাতে ভিটামিন ‘এ’ থাকে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি তৈরি বা গঠনে সহায়তা করে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে বলে জানান তিনি।
এই পুষ্টিবিদ বলেন, গরমে প্রচুর পরিমাণ পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়। আর এবারের রমজান এসছে গরম কালে। ফলে দীর্ঘ সময় পানি না খাওয়ার কারণে যে পানিস্বল্পতা তৈরি হচ্ছে তার পূরণে তরমুজ বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, যারা একাধিক রোগে আক্রান্ত, যেমন- ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা থাকে, তাদেরকে দিনে অনেকগুলো ওষুধ নিতে হয়। ফলে তাদের প্রশ্রাব ইনফেকশন বেশি হয়ে থাকে। এমন রোগীরা যদি ইফতারিতে তরমুজ রাখেন তাহলে এই সমস্যা অনেক কম হতে পারে।
এছাড়া যারা রমজানেও ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য তরমুজ অনেক উপকারি হতে পারে বলে জানান এই পুষ্টিবিদ।
অবশ্য অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে তরমুজ বেশি খাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে অল্প পারিমাণ খেতে পারবে।
তরমুজে পটাশিয়াম থাকে। ফলে যাদের সিভিয়ার বা মধ্যম মানে কিডনি সমস্যা আছে তাদের তরমুজ এড়িয়ে চলাই ভালো।
এছাড়া তরমুজ খাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভুল হলো একসঙ্গে বেশি পরিমাণে খাওয়া। এতে ওভার হাইড্রেশন হয় এবং অনেক সময় কিডনিতে পানি জমা হতে পারে। পানি শরীর থেকে বের হতে না পারলে কিডনির ওপর এক ধরনের চাপ পড়তে পারে।