অনলাইন ডেস্ক : কানাডার আলবার্টায় অতিরিক্ত মাদক সেবনে মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা মহামারিকালে এ ধরনের মৃত্যু রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে বলে এক প্রাদেশিক জরিপে দেখা গেছে। জরিপ ফলাফলে বলা হয়েছে, মহামারির সময় দীর্ঘদিন গৃহবন্দি থাকা, বেকার হয়ে পড়ার হতাশা, ভবিষ্যতের অনিশ্চিয়তা ইত্যাদির প্রভাবে অনেকেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে এক পর্যায়ে তারা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি করেও তাদের বাঁচানো যাচ্ছে না।
তেমনি একজন মাদকাসক্ত যুবক ২৫ বছর বয়সী জোশুয়ার। এডমন্টনের পূর্বাঞ্চলে মর্প রিকভারি সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত বছরের ১৮ আগস্ট তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল এবং পরদিনই সে মারা যায়। জোশুয়ারের পিতা রে করবিয়ের কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে আমাদের সব আশা-আকাঙ্খা শেষ হয়ে গিয়েছিল। সে এমনটা জায়গায় মারা গেল যেখানে আমরা তাকে নিরাপদ মনে করেছিলাম। তিনি আরো বলেন, ‘আমার ছেলে জীবন পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিল। সে এই নেশা ছাড়তে চেয়েছিল।’

রিকভারি সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে করবিয়ের বলেন, তিনি তার ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে মর্পের কাছ থেকে উত্তর পাওয়ার জন্য লড়াই করেছেন। কিন্তু সঠিক জবাব পাননি। তারা তার ছেলের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। তবে যারা মাদকাসক্তি নিরাময় ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা করেন তেমন সম্মুখসারির যোদ্ধারা বলেছেন, ঘরে বাইরে সব যায়গায় অতিরিক্ত মাদক সেবনের হার বেড়ে গেছে। রাস্তায়, পার্কে আশ্রয় কেন্দ্রে এমনকি হাসপাতালেও এই মাত্রা বিপদজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। যখন তারা চিকিৎসার জন্য আসে তখন আর কিছু করার থাকে না। এরূপ ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা অযথাই চিকিৎসকদের দোষারোপ করে থাকেন।

অন্যদিকে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগারির প্রফেসর ও একজন চিকিৎসক ডা. বনি লারসন বলেছেন, নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পরও অনেকে মাদকের রাজ্যেফিরে আসে। এক গবেষণায় দেখা গেছে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ রোগি সুস্থ্য হয়ে আবার মাদক গ্রহণ শুরু করে। নিজের অজান্তেই তারা মৃত্যুর ফাঁদে পা দেয়। দ্বিতীয় দফায় তাদের চিকিৎসার জন্য ওষুধের বাড়তি ডোজও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।

আলবার্টাতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এ ধরনের প্রায় ১৪০০ মৃত্যুর রেকর্ড পাওয়া গেছে। এ বছর এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র : দ্য স্টার