অনলাইন ডেস্ক : ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ সম্প্রতি প্রকাশিত গাজাবিষয়ক আরব পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়েছে, যা ইসরায়েলের ১৫ মাসের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে গাজা পুনর্গঠনের জন্য ৫৩ বিলিয়ন ডলারের আরব পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই পরিকল্পনা গাজা পুনর্গঠনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত পথ দেখায় এবং যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহ জীবনযাত্রার দ্রুত ও টেকসই উন্নতি ঘটবে।’
তারা আরো বলেন, হামাস ‘গাজার শাসনভার গ্রহণ করতে পারবে না এবং ইসরায়েলের জন্য আর হুমকি হতে পারবে না’ এবং চারটি দেশ ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রীয় ভূমিকা ও এর সংস্কার এজেন্ডার বাস্তবায়নকে সমর্থন করে’।
আরব পরিকল্পনার কাঠামো
এই পরিকল্পনাটি মিসর প্রণয়ন করে এবং এ মাসের শুরুতে কায়রোতে এক আরব লীগ সম্মেলনে আরব নেতারা এটি গ্রহণ করেছিলেন। এবার সৌদি আরবের জেদ্দায় শনিবার এক জরুরি বৈঠকে ৫৭ সদস্যের ওআইসি আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
মুসলিমবিশ্বের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংস্থা ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোকে দ্রুত প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে।
আরব সমর্থিত এই পরিকল্পনাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে তিনি গাজা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে ‘যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে’ এই এলাকার ‘উন্নয়ন’ করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা অনেকেই জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
এই পরিকল্পনার তিনটি প্রধান ধাপ রয়েছে—অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা, পুনর্গঠন ও শাসন। প্রথম ধাপ প্রায় ছয় মাস স্থায়ী হবে এবং পরবর্তী দুই ধাপ চার থেকে পাঁচ বছর ধরে বাস্তবায়ন করা হবে। এর লক্ষ্য হলো গাজার পুনর্গঠন, শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরোধিতা
তবে আরব পরিকল্পনাটি ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।
ওয়াশিংটনের প্রত্যাশা অনুযায়ী এই পরিকল্পনা ‘পর্যাপ্ত নয়’। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অন্যদিকে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ তুলনামূলক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে এ পরিকল্পনাকে ‘মিসরীয়দের পক্ষ থেকে আন্তরিকতার প্রথম পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সূত্র : আলজাজিরা