বিনোদন ডেস্ক : ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত ও ব্যবসাসফল সিনেমার নায়ক শাকিব খান। বছরের বিভিন্ন সময় ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে আলোচনায় থাকেন তিনি। তবে ক্যারিয়ারের বাইরে দুই স্ত্রী ঢালিউড ক্যুইন অপু বিশ্বাস ও চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীর কারণেই আলোচনায় থাকেন এ নায়ক। বিভিন্ন সময় দেখা যায়―শাকিবকে কেন্দ্র করে তার প্রথম স্ত্রী অপু কথা বলছেন, আবার কখনো দ্বিতীয় স্ত্রী বুবলী কথা বলছেন।
এর মধ্যে প্রায় সময়ই অপু ও বুবলীর একে অপরের নাম উল্লেখ না করে ইঙ্গিতমূলক কথা কিংবা নায়ক স্বামীর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় তাদের। ফলে বছরের অধিকাংশ সময়ই সিনেমার থেকে ব্যক্তিজীবন নিয়ে শিরোনামে থাকেন এই দুই নায়িকা। তবে এবার অপু বিশ্বাসকে নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিক সমকালের সঙ্গে আলাপকালে এসব ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলেছেন বুবলী।
গেছেন―সংবাদমাধ্যমে বুবলীকে উদ্দেশ্য করে এ ধরনের মন্তব্য করেন অপু বিশ্বাস। তার জবাবে স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন ‘বসগিরি’ খ্যাত নায়িকা বুবলী। এ নায়িকা বলেন, সবথেকে হাস্যকর হলো, উনি নিজের নিঃশ্বাসের থেকেও বুবলী নামটা বেশি নেয়। সব জায়গায় শুধু বুবলী বুবলী। ভাইরাল হওয়ার জন্য তিনি এমন কিছু নেই, যা করছেন না। তিনি বুবলী নাম নিতে নিতে মানসিক রোগী হয়ে গেছেন।
এর আগে এ অভিনেত্রী জানান, শাকিবকে নিয়ে যিনিই আপত্তিকর ও অসম্মানজনক কথা বলবে, তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না তিনি। এই মন্তব্যকে হাস্যকর আখ্যা দিয়ে অপু বিশ্বাস বলেন, তিনি শাকিবের নাম মুখে নিতে নিতে ক্লান্ত। আর যারা শাকিবকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন, তাদের সঙ্গেই কাজ করেন বুবলী। তিনি চুরি করেন আর ধরা পদেন। যা দুর্বল ‘গেমপ্ল্যান’ হিসেবে অ্যাখ্যা দেন অপু বিশ্বাস।
তার এ মন্তব্যের বিপরীতে বুবলী বলেন, শাকিব আমার পরিবার। আমি সবসময় তার নাম নিয়েছি এবং সারাজীবন নেব। পরিবারের সদস্যের নাম নিতে কেউ কখনো ক্লান্ত হয় না। তবে যাদের স্বার্থ থাকে তারা ক্লান্ত হন। আর যে মহিলা (অপু বিশ্বাস) এসব বলছে, সে কে? যিনি ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো সবসময় আমাদের মাঝখানে তিড়িং বিড়িং করেন। সারাক্ষণ নিজের মতো বানানো মিথ্যা রচনা বলেন।
বুবলী বলেন, হাস্যকর কথা হচ্ছে, তিনি তার নিঃশ্বাসের থেকেও বুবলী নামটা মুখে বেশি নেয়। সব জায়গায় শুধু বুবলী বুবলী। ভাইরাল হওয়ার জন্য এমন কিছু নেই যা তিনি করছেন না। এই বুবলী নাম নিতে নিতেই মানসিক রোগী হয়ে গেছেন। হোক সেটা আড্ডা, সহকর্মী, টেলিভিশন, ইউটিউব, যেখানেই হোক না কেন, তার মুখে শুধু বুবলী আর বুবলী। কোথাও গেলে তাদের শিখিয়ে দেয় আমার নাম নিয়ে প্রশ্ন করতে, যেন একটু ভাইরাল হয় উনি।
তিনি আরও বলেন, এখন তার (অপু বিশ্বাস) ক্যারিয়ারে আলোচনায় থাকার একমাত্র বিষয় আমি ও আমার ছেলে। এমনকি জাতীয় টেলিভিশনের পর্দায় কী সব উদাহরণ দিচ্ছে, যার কোনো অর্থই নেই। কি কি সব নোংরা আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করছে, যা খুবই লজ্জাজনক। তার মুখে সবসময় দুর্গন্ধজনক শব্দগুলো থাকে, কারণ তার ভেতরটাও এ রকম।
এদিকে কিছুদিন আগে অভিনেত্রী মিষ্টি জান্নাতও বুবলীকে ইঙ্গিত করে কথা বলেছিলেন। আবার চিত্রনায়িকা পরীমণিও কথা বলেছিলেন। অপু বিশ্বাস মনে করেন, ব্যক্তিত্বহীনতার জন্যই ইন্ডাস্ট্রির ছোট বোনদের কথা শুনছেন উনি (বুবলী)। এমন করলে কথা শুনতেই হবে।
অপু বিশ্বাসের এ মন্তব্য নিয়েও কথা বলেছেন চিত্রনায়িকা বুবলী। তার ভাষ্য―এই মহিলা (অপু বিশ্বাস) ইন্ডাস্ট্রিতে আবার ছোট বোনদের কথা বলে। তিনি তো ছোট বোনই বানিয়েছেন নিজ স্বার্থে আমার নামে সারাক্ষণ বাজে কথা বলে তাদের কান ভারী করার জন্য। আমাদের নায়করাজ রাজ্জাক, মান্না স্যাররা তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে বলেছিলেন, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ কখনো কারও বন্ধু হয় না। অথচ এই মহিলার ইন্ডাস্ট্রিতে এতগুলো নায়িকা ছোট বোন। পাবলিক তো এসব বোঝে। ওই ছোট বোনরাও সবাই সুন্দরী, স্মার্ট ও প্রতিষ্ঠিত। আমাকে তারাই এসব চালাকির কথা বলে দেয়। কেননা, তাদের কারও সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সমস্যা নেই, তারা জানেন এটা।
এছাড়া অপু বিশ্বাস কিছুদিন আগে দাবি করেছেন, শাকিব খানের শত্রুদের সঙ্গে নাকি বুবলীর উঠাবসা বেশি। এ ব্যাপারে বুবলী বলেন, ২০০৮ সালে শাকিব অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে দৌড় দিয়ে অন্য জায়গায় সিনেমায় সাইন করেছিলেন তিনি। আবার যে নায়কের সঙ্গে সিনেমা সাইন করে, তার মৃত্যুর পরই জানাজা শেষ হতে না হতেই পরিচালকদের অন্য নায়ক খুঁজতে বলায় ৫/৬টি সিনেমা থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল এই মহিলাকে।
বুবলী বলেন, আবার নিজ স্বার্থের জ্যন্য শাকিবের কাছে ভিড়েছিল। সবই ইন্ডাস্ট্রির মানুষজন জানেন। জনা আপু, বিদ্যা সিনহা মিম, ফারুক ভাই, কাজী হায়াত আঙ্কেল থেকে শুরু করে অনেক তারকার সঙ্গেই বিএফডিসিতে বেয়াদবি করেছিলেন তিনি, যা নিউজ পেপার কাটিংয়ে আছে। আর বেয়াদবির জন্য তিনি মারও খেয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে শাকিব ও তার পরিবার নিয়ে কী অপমানজনক কথা বলেছিলেন উনি, সে সবই ভিডিওতে আছে। কোন নায়কের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেছে, সেই কথাও আছে। অন্য নায়কের সঙ্গে যখন ফের প্রেমের গুঞ্জন উঠল, যখন ওই নায়কের সঙ্গে ওখানে কিছুদিন পর আর বনিবনা হলো না, তখন বলল যে এমন প্রেম প্রেম কথা নাকি ইচ্ছা করে উঠিয়েছেন।
২০১৭ সালে বিএফডিসিতে শাকিব খানের সঙ্গে যখন সমস্যা হয়েছিল, তখন তার বিরুদ্ধে ছিল অপু বিশ্বাস। এমন অনেকের সঙ্গে সেলফিতে দেখা গেছে তাকে। কয়দিন আগেও দেশের বাইরে গিয়ে খোলামেলা শুট করে এসেছে। কিছুদিন আগে মুক্তি পাওয়া সিনেমার গানেও অশ্লীল ড্রেসে দেখা গেছে। অথচ অন্য নায়িকাদের বলেন, কখনো নাকি অশ্লীল ড্রেস পরেননি তিনি।
চিত্রনায়িকা বুবলীর ভাষ্য, উনি (অপু বিশ্বাস) নাকি ইকবাল ভাইয়ের ছায়াও দেখেন না। কিন্তু কেন? কারণ হচ্ছে, কিছুদিন আগে ইকবাল ভাইয়ের কাছের একজন প্রযোজক অনুদানের একটি সিনেমা থেকে বাদ দিয়েছিলেন তাকে। আবার সাইনিং মানিও ফেরত নিয়েছিলেন। সেলিম ভাই বা ইকবাল ভাই যখন সিনেমায় আমাকে চুক্তিবদ্ধ করেছিলেন, আমার কাজের অনেক প্রশংসা করেছিলেন। তখন তাকে (অপু বিশ্বাস) নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছিলেন না, বানালে ঠিকই করতেন। এ ধরনের কোনো উদাহরণ আছে, তার কাছে উনারা সিনেমা নিয়ে গেছেন অথচ ফিরিয়ে দিয়েছেন উনি (অপু বিশ্বাস)। কিন্তু এখানে চালাকি করে শাকিবের নামের ওপর দিয়ে চালিয়ে দিলো। কাকে কি বোঝায় উনি? হাস্যকর।
এছাড়া অপু বিশ্বাসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বুবলী বলেন, সে ভেবেছে আমাকে ও আমার ছেলেকে নিয়ে সবসময় মিথ্যাচার করবে; আর আমিও বরাবরের মতো চুপ থাকব। কখনোই না। কেননা, আমার কখনোই তাকে নিয়ে কথা বলার রুচি হয় না। তবে যখন দেখছি সে তার নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য আদাজল খেয়ে শেহজাদকে তার বাবার থেকে আলাদা করার জন্য নেমেছে, তখন আমি চুপ থাকব কেন? সে এসব নিয়ে সারাক্ষণ বাজে ‘গেম প্ল্যান’ করে বলেই এই ‘গেম প্ল্যান’ শব্দ তার মুখ থেকে এসেছে।