অনলাইন ডেস্ক : করোনাকালে মাত্র ১৭ যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে সারাদেশে, তাও আবার অর্ধেক আসন খালি রেখে। সপ্তাহ দুই আগেও যাত্রী সঙ্কট থাকলেও এখন ঈদের আগে ব্যাপক চাপ রেলের অনলাইনে। অনলাইনে ছাড়ার মিনিটের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ টিকিট।
শনিবার দেওয়া হয়েছে বুধবারের টিকিট। ঠিক সকাল ছয়টায় অনলাইনে ছাড়ার প্রথম চার সেকেন্ডে এক হাজার ৯৫টি টিকিট বিক্রি হয়।
সেকেন্ডের ব্যবধানে টিকিট পাননি বহুযাত্রী। তাদের অনেকেই রেল সংক্রান্ত ফেসবুক গ্রুপগুলোতে ক্ষোভ জানিয়েছেন। অনেকের অভিযোগ ট্রেনের টিকিটে কারসাজি চলছে। শনিবার সকালে ছয়টা ২ মিনিটে ঢাকা-ময়মনসিংহ-জামালপুর রুটের দু’টি ট্রেনের সবক’টি টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। সকাল সোয়া ছয়টায় সিলেটমুখী ছাড়া আর ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া কোনো ট্রেনেই আসনের টিকিট ছিল না। যেসব টিকিট ছিল, তার সবই ছিল বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকামুখী ট্রেনে।
তরিকুল ইসলাম নামে একজন যাত্রী ফেসবুকের ‘বিডি রেল’ গ্রুপে অভিযোগ করেন টিকিট কালোবাজারে চলে যাচ্ছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ করেন, পরপর দু’দিন ঠিক সকাল ছয়টায় চেষ্টা করেও ঢাকা-জামালপুর রুটের ‘তিস্তা এক্সপ্রেস’র কেবিনের টিকিট পাননি।
তবে রেল ও টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের দাবি, অনিয়মের কোনো সুযোগই নেই। ঈদের কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রথম মিনিটেই অধিকাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। যারা ন্যানো সেকেন্ড পিছিয়ে পড়েন, তারা টিকিট পান না।
তবে শনিবারই একটি অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। সাধারণ যাত্রীরা মাত্র এক সেকেন্ড দেরির কারণে টিকিট না পেলেও একটি মোবাইল নম্বর থেকে এক মিনিটের ব্যবধানে দুইবারে চারটি করে আটটি টিকিট কাটা হয়। সন্দেহ হওয়ায় যোগাযোগের চেষ্টা করে ওই ফোন নম্বরটি বন্ধ পেয়েছে রেল। নিবন্ধনের সময় ওই নম্বরের বিপরীতে দেওয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নম্বরটিও ভুয়া। রেলের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, কাঁটায় কাঁটায় সকাল ছয়টায় টিকিট দেওয়া শুরু হয়। প্রথম সেকেন্ডে টিকিট বিক্রি হয় ৫০১টি। দ্বিতীয় সেকেন্ডে টিকিট যায় ২২২টি। তৃতীয় ও চতুর্থ সেকেন্ডে ৩৭২টি টিকিট কাটা হয় রেলের অনলাইন থেকে। সকাল আটটা ২৮ মিনিট পর্যন্ত চার হাজার ২২৬টি টিকিট বিক্রি হয়। ১০টা ৫২ মিনিটে পাঁচ হাজার ১৪৪ অর্থাৎ সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়।
অনেক যাত্রীর টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে মাহবুব কবির বলেছেন, হাজার হাজার ইউজার কাঁটায় কাঁটায় ছয়টায় রেলের অনলাইনে প্রবেশ করেন। যারা তাদের তুলনায় ন্যানো সেকেন্ড পরে প্রবেশ করেন, তারা টিকিট পান না। যা খুব স্বাভাবিক।
করোনার কারণে ৬৮ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৩১ মে থেকে চলছে যাত্রীবাহী ট্রেন। দুই দফায় ১৯টি ট্রেন চালু করা হয়। তবে পরে দু’টি ট্রেন বন্ধ করা হয় যাত্রী সঙ্কটে। কিন্তু ঈদের আগে এসে টিকিটের জন্য অনলাইনে চলছে লড়াই। যাত্রী বাড়লেও রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, ঈদে ট্রেন বাড়ানো হবে না। সীমিত পরিসরেই রেল সেবা চলবে।
রেল সূত্র জানিয়েছে, করোনার বিস্তার রোধে ঈদে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। ঈদযাত্রাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এ কারণেই রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রেল ট্রেন সংখ্যা বাড়াচ্ছে না। ঈদুল ফিতরের সময় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল।