অনলাইন ডেস্ক : বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো বিশেষ ল্যাব ছাড়াই একটি যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করে মাত্র ৯০ মিনিটেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা যাবে। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন ছোট একটা কম্পিউটার চিপ কীভাবে ল্যাবরেটরির কাজ করবে এবং করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরীক্ষায় সংক্রমণ শনাক্ত করে যে ফল পাওয়া যাচ্ছে, এই পদ্ধতিও ঠিক একই ফল দেবে—পার্থক্য হলো এই যন্ত্র ফল দিতে সময় নেবে মাত্র ৯০ মিনিট। ইংল্যান্ডের আটটি হাসপাতাল এই যন্ত্র ব্যবহার করে করোনা ভাইরাস বহনকারী রোগীদের সফলভাবে এবং দ্রুত শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
ডিএনএনাজ নামে একটি সংস্থা এই যন্ত্রটি তৈরি করছে। তারা বলছে, যে কেউ যদি গলা বা নাকের ভেতর থেকে সোয়াব বা নমুনা নিতে পারে, তাহলেই সে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারবে। একটি নীল রঙের কাট্রিজ বা আধারের মধ্যে সোয়াবটা রাখতে হবে, যার ভেতর পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক আছে। আধারটি এরপর জুতার বাক্সের আকারের ছোট একটি যন্ত্রের ভেতর ঢুকিয়ে দিতে হবে, যে যন্ত্র ঐ নমুনা বিশ্লেষণ করবে। ঐ আধারটি একবার ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হবে।
এই গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেট মাইক্রোবে। সেখানে বলা হয়েছে, ৩৮৬ জনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা ডিএনএনাজ কোম্পানির যন্ত্র দিয়ে এবং পাশাপাশি প্রচলিত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দুটি পরীক্ষার ফলাফল তুলনা করা হয়েছে। দুটি পরীক্ষার ফলাফল দেখা গেছে একই রকম, যা খুবই আশ্বস্ত হবার মতো।
ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় যেখানে বলা হচ্ছে, রোগীর ভাইরাস নেই, এই যন্ত্রের পরীক্ষাতেও সেই ফলই এসেছে। ল্যাব পরীক্ষা যেখানে বলছে রোগীর ভাইরাস আছে, দ্রুত সময়ের এই পরীক্ষা ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে একই রেজাল্ট দিয়েছে। যদিও এখানে সমস্যা একটা রয়েছে। সেটা হলো— একটা বাক্স-যন্ত্র দিয়ে একবারে শুধু একটা নমুনাই পরীক্ষা করা সম্ভব। কাজেই কোনো প্রতিষ্ঠান যদি একটি বাক্স ব্যবহার করে তাহলে সারা দিনে প্রায় ১৬টির বেশি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে না।
ইমপিরিয়াল কলেজের অধ্যাপক গ্রেয়াম কুক বলেন, যেসব ক্ষেত্রে আপনার দ্রুত জানা প্রয়োজন কেউ সংক্রমিত কি না এবং একটা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যেখানে জরুরি, সেখানে এই যন্ত্র খুবই উপযোগী হবে।