অনলাইন ডেস্ক : লেবাননের বৈরুত বিস্ফোরণে প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় বিপর্যস্ত লেবাননে জারি করা জরুরি অবস্থার অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত এ জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকবে।প্রয়োজনে মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে।

বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে এক ভোটাভুটিতে জরুরি অবস্থা অনুমোদনের মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে ক্ষমতায় বসানো হচ্ছে সেনাবাহিনীকে। এতে মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার আশংকা করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো। খবর আলজাজিরার

বৈরুত বন্দরে মজুত রাখা বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বিস্ফোরণে গত ৪ আগস্ট অন্তত ২০০ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং আরও ৬ হাজার মানুষ আহত হন। বিধ্বস্ত হয় ৭০ হাজার ঘরবাড়ি। এরপর দিনই জনতার বিক্ষোভের মুখে সরকার ভেঙে দেওয়ার আগে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেয় মন্ত্রিসভা।

লেবাননের আইন অনুযায়ী জরুরি অবস্থা ঘোষণার অন্তত আটদিনের মধ্যে তা পার্লামেন্টে অনুমোদিত হতে হবে। ভোটে জরুরি অবস্থা বাতিলও করা যেত। আইনের মধ্যে থেকে ভোটাভুটিতে বৃহস্পতিবারই দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা অনুমোদন দিল বর্তমানে দেশটির ১১৯ সদস্যের পার্লামেন্ট।জরুরি অবস্থা জারির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন একমাত্র এমপি ওসামা সাদ।

ঘোষিত জরুরি অবস্থা বাস্তবায়ন করবে সেনাবাহিনী। মূলত এ জরুরি অবস্থা অনুমোদনের মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হলো। জরুরি অবস্থার মধ্যে সেনাবাহিনী বাক স্বাধীনতা, জমায়েত হওয়ার স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে। একইসঙ্গে নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হচ্ছে- এমন ব্যক্তির ঘরে ঢুকতে এবং তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে সেনাবাহিনী। সব বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে সেনা আদালতে।

এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় জরুরি অবস্থা জারি করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ অন্যান্য মানবাধিকার গ্রুপগুলো।তারা বলছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় চলমান বিক্ষোভ দমন করাই যেন জরুরি অবস্থার মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে ধরপাকড় বাড়বে ও মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হবে।

লেবাননের শীর্ষ স্থানীয় আইনি সহায়তাদানকারী এনজিও লিগ্যাল এজেন্ডার সদস্য কারিম নাম্মুর বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এমনিতেই দেশে জরুরি অবস্থা চলছে। আবার বিস্ফোরণের ঘটনায় জরুরি অবস্থায় পুরো জাতি স্থবির হয়ে পড়বে। এ জরুরি অবস্থার কোনো প্রয়োজন ছিল না।

বৈরুত বিস্ফোরণের জন্য দায়ীদের বিচার ও সরকারের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভরতদের ওপর এরইমধ্যে লেবাননের সেনা, পুলিশ, সশস্ত্র ও সাদা পোশাকের নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত শক্তি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবারই অন্তত সাত শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে।এদের বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের মধ্যে আলজাজিরারসহ ১২ সাংবাদিক রয়েছেন।