অনলাইন ডেস্ক : প্ল্যাটফর্মে পেমেন্ট সিস্টেম একত্র করতে বিশেষ আর্থিক সেবা চালু করেছে ফেসবুক। নতুন এই গ্রুপ ফেসবুক ফিন্যানসিয়ালের নেতৃত্ব দিচ্ছে ই কমার্স অভিজ্ঞ ডেভিড মারকাস। ফেসবুকের যোগদানের আগে পেপোলের প্রেসিডন্ট ছিলেন তিনি।
মার্কাস ফেসবুকের ডিজিটাল মুদ্রা নেটওয়ার্ক লিব্রা এর অন্যতম স্রষ্টা এবং মুদ্রার জন্য তৈরি নোভি ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরির একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। লিব্রা মুদ্রা হলে চালু নোভি ওয়ালেট থেকে নানা সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে। এই ওয়ালেট চালু হলে নিজস্ব বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রস্তাব ও আরও ছোট ব্যবসায়িক সামাজিক নেটওয়ার্কে বিজ্ঞাপন দেবে ফেসবুক।
এএফপির এক অনুসন্ধানী ইমেইলের রিপ্লাইয়ে ফেসবুক জানায়, আমাদের অ্যাপে অর্থপ্রদানের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে , আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চায় এবং তা যেন কার্যকর হয়। মানুষ যখন ইচ্ছা ডেবিট,ক্রেডিট অথবা লিবরা ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যমে অর্থপ্রদান করতে পারবে।
ফেসবুকের লিবরা নিয়ে নিরাপত্তার উদ্বেগ জানানো ফেডারেল রিজার্ভের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে নিজস্ব ইনস্ট্যান্ট পেমেন্ট সিস্টেম চালু করার কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সেবায় আর্থিক সেবার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
গত বছর ফেসবুক তাদের লিবরা ক্রিপটোকারেন্সি চালুর পরিকল্পনার কথা জানালে বিশ্বব্যাপী আর্থিক কর্মকর্তারা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ফেসবুককে এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কে আর্থিক সেবার নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
ফেসবুক ডিজিটাল মুদ্রা লিবরা আনার জোর প্রচেষ্টা চালালেও বিভিন্ন দেশের আইনপ্রণেতাদের জন্য তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ফেসবুকের পাশ থেকে সরে গেছে লিবরার সহযোগীরা। লিবরা অ্যাসোসিয়েশন থেকে সরে গেছে ভিসা, মাস্টারকার্ড, স্ট্রিপ, মেরকাডো, পোগো ও ইবের মতো প্রতিষ্ঠান।
ফেসবুক বলছে, লিবরা সবাইকে একটি ইলেকট্রনিক ওয়ালেটের সুবিধা দেবে। আন্তর্জাতিক সব মুদ্রার মূল্যমানের সঙ্গে সংগতি রেখে এই মুদ্রার মূল্যমান ধরা হবে। প্রচলিত মুদ্রা দিয়ে লিবরা কেনা যাবে। লিবরার সঙ্গে ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্যের যোগসূত্র থাকবে না বলে তাদের লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা হবে না। লিবরা পেমেন্টের সঙ্গে ফেসবুকের বিভিন্ন পণ্য যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে ভার্চ্যুয়াল মুদ্রায় ব্যাংক ডিপোজিট, স্বল্পমেয়াদি সরকারি নিরাপত্তার মতো বিষয় যুক্ত থাকবে। এতে অন্যান্য ক্রিপটোকারেন্সির মতো মুদ্রাস্ফীতি হবে না।
ফেসবুকের এই আর্থিক উদ্যোগের সমালোচকেরা বলেন, ফেসবুক নানা কারণে এরই মধ্যে অনাস্থার কারণ হয়েছে। ২৪০ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত এ মুহূর্তে ফেসবুকের হাতে। অর্থ জালিয়াতিতে এই উপাত্ত ব্যবহৃত হবে না, ফেসবুক সে নিশ্চয়তা দিতে পারবে কি? এখন পর্যন্ত লিবরা প্রচলন করার বিষয়ে ফেসবুক যেসব তৎপরতা চালিয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বিশদভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।