রাজীব আহসান, কানাডা : সারা বিশ্বজুড়ে করোনা এখন মূল আলোচনার বিষয়। বিশ্বজুড়ে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন এবং করোনা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে বিজ্ঞানীরা একের পর এক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এতে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দ্বিমতও তৈরি হচ্ছে। অনেকেই আবার কেমিক্যাল বিজ্ঞানকে বাদ দিয়ে ভেষজ চিকিৎসার দিকে ছুটে চলেছেন।
সৃষ্টির আদি থেকেই ভেষজ চিকিৎসাবিজ্ঞানের রয়েছে একটি সুদূরপ্রসারি সফলতা। বয়োজ্যেষ্ঠরা এখনও অনেকেই এ ভেষজ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল। ইতোমধ্যে চীনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শ্বাসকষ্টের রোগীদের বিকল্প ওষুধ বা ট্র্যাডিশনাল ভেষজ ওষুধ প্রয়োগ করেছেন। তারা এতে ব্যাপক সফলতাও পেয়েছেন।
অসুস্থতার জন্য ভেষজ ওষুধের ব্যবহার কোনো অভিনব ধারণা নয়। হাজার হাজার বছর ধরে লাইকোরিস, আদা এবং এফিড্রা জাতীয় ওষুধগুলো ফ্লু এবং নিউমোনিয়ার মতো শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ফোরসাইথিয়ার মতো কিছু ভেষজ ওষুধ সার্স-এর জন্য রাখা হয়েছিল এবং পরীক্ষাগার গবেষণায় কিছুটা কার্যকর হয়েছে বলে মনে হয়।
অনেকেই দাবি করেছেন যে, ভেষজ ওষুধগুলো তাদের স্বাস্থ্যরক্ষায় বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখছে, তবে ভেষজগুলো নিয়ে প্রচুর গবেষণা অনির্বাচিত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা হুশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, কোভিড-১৯ এর ভেষজ প্রতিকারগুলো সমর্থন করার মতো পর্যাপ্ত ডেটা আমাদের কাছে নেই।
কেউ কেউ মনে করেন ভেষজ ওষুধগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরকে স্বাস্থ্যকর অবস্থানে রাখে। অন্যরা বিশ্বাস করে যে শক্তিশালী অ্যান্টি-ভাইরাল নির্দিষ্ট ভাইরাসগুলোকে শরীরে প্রতিলিপি করতে বাধা দেয়।
“কোভিড-১৯ এ ভেষজ ওষুধ কীভাবে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে” তা নিয়ে ৮ আগস্ট শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় এবং ক্যালগেরি সময় শনিবার সকাল ৯টায় এক ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজক কানাডার ক্যালগেরির টমবেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর এবং আর এক্স মীমসের পরিচালক আহমেদ হোসেন শাহিন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রফেসর ডা. এম শাহাবুদদীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসির চেয়ারম্যান ডা. সীতেশ বাচার, বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ম্যানুফেকচার অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি ডা. মিজানুর রহমান, স্কয়ার ফার্মার এম আসাদউল্লাহ, রেনাটা ফার্মার রিনাত রিজভী, দি একমি ল্যাবের মো. আশরাফুল ইসলাম, জেসন ন্যাচারাল প্রোডাটকস লিমিটেডের ডা. সাফিউল আলম এবং হামদর্দ ল্যাবরেটরিজের আবু জাফর মো. সাদেক।
আয়োজক কানাডার ক্যালগেরির টমবেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর এবং আর এক্স মীমসের পরিচালক আহমেদ হোসেন শাহিন বলেন, আদিকাল থেকেই ভেষজ ওষুধের একটি জনপ্রিয়তা রয়েছে। ভেষজ প্রতিষেধকগুলো তার নিজস্ব স্বকীয়তায় দিনের পর দিন এগিয়ে যাচ্ছে।
এমনকি বৈশ্বিক মহামারীর এ সময়েও ভেষজ ওষুধ সর্বপ্রথম মানুষকে আকৃষ্ট করে। সেই আদিকাল থেকেই সাধারণ কোল্ড, ইনফ্লুয়েঞ্জা, জ্বর এবং হারপিসের ক্ষেত্রে দীর্ঘকাল ধরে ভাইরাসের সংক্রমণ এবং চিকিৎসার জন্য ভেষজ ওষুধ ব্যবহৃত হয়ে আসছে।