স্পোর্টস ডেস্ক : চলতি মাসেই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। তার আগে সেলেসাওরা কলম্বিয়ার বিপক্ষে আরেকটি ম্যাচ খেলবে। ম্যাচ দুটির স্কোয়াডে যে সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র ফিরছেন সেটি প্রাথমিক স্কোয়াডেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল। তাকে রেখেই আসন্ন দুই ম্যাচের জন্য ব্রাজিলের ২৩ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন কোচ দরিভাল জুনিয়র।
আজ (বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলিয়ান কোচ এই স্কোয়াড প্রকাশ করেন। যেখানে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন ২১ বছর বয়সী রাইটব্যাক ওয়েসলি। দল ঘোষণায় তরুণ এই ফুটবলারের প্রশংসাও করেছেন দরিভাল। এ ছাড়া নেইমারের দলে ফেরা নিয়েও খুশি এই সেলেসাও কোচ। তিনি বলছেন, ‘জাতীয় দলে নেইমারের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। সে যে চোট পুনর্বাসনের মধ্য দিয়ে গেছে, সেটি আমরা সবাই জানি। একইসঙ্গে তার দক্ষতা ও সামর্থ্য যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কতটা উপযুক্ত তাও অজানা নয়।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে উরুগুয়ের বিপক্ষে খেলার সময় এসিএলের ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। যার কারণে তাকে পরের বছর অক্টোবর পর্যন্ত মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে। তিনি পুনরায় মাঠে ফেরেন ২০২৪ সালের অক্টোবরে, সৌদি ক্লাব আল-হিলালের হয়ে তিনি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আল-আইনের বিপক্ষে লম্বা সময় পর ম্যাচ খেলেন। এরপর আবারও চোটের অস্বস্তিতে পড়ার পর নেইমারকে আর রাখতে চায়নি আল-হিলাল, তিনি নিজেও সান্তোসে ফিরতে মুখিয়ে ছিলেন। ফলে জানুয়ারির শীতকালীন উইন্ডোতেই তিনি বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা ফেলে প্রত্যাবর্তন করেন শৈশবের ঠিকানায়।
ব্রাজিলের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বকালের সর্বোচ্চ এই গোলদাতাকে নিয়ে দরিভাল বলেন, ‘আমরা তার অপেক্ষায় ছিলাম। আমি আশা করি সেও তার এই প্রত্যাবর্তনের খুশিই হবে। আমরা এখানে তার পুরোনো সামর্থ্য ফিরে পেতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে পারব বলে আশাবাদী। আমরা অনেক বড় প্রত্যাশার ভার ও তার কাঁধে দায়িত্ব চাপিয়ে দিতে চাই না। আসন্ন কঠিন ম্যাচে ভারসাম্য তৈরি করতে চেয়েছি, আমি তাকে দলের জন্য পুরো প্রস্তুত দেখতে চাই।’
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে ৫২ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছিলেন ব্রাজিল কোচ। তাদের মধ্য থেকে ২৩ জনকে নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়েছে। এই দল গঠনে দরিভালসহ কোচিং স্টাফের সদস্যরা ইউরোপ ও ব্রাজিলিয়ান লিগের ম্যাচে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছিলেন। পর্যবেক্ষণ করেছেন ফুটবলারদের পারফরম্যান্স। আগামী ২১ মার্চ কলম্বিয়া এবং ২৬ মার্চ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলবে সেলেসাওরা।
২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই ব্রাজিল। লাতিন অঞ্চল থেকে শীর্ষ ছয়টি দল বিশ্বকাপের টিকিট কাটবে। সপ্তম দলটিকে খেলতে হবে প্লে-অফ। ব্রাজিল হয়তো শীর্ষ ছয়ে নিজেদের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে পারবে, তবে সেটি সর্বোচ্চ বারের চ্যাম্পিয়নদের ক্ষেত্রে ঠিক মানানসই নয়। নেইমার ফেরার পর সেই পরিস্থিতি বদলাতে চাইবে সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের টেবিলে ব্রাজিলের অবস্থান পাঁচে। যথাক্রমে শীর্ষ চারে আছে– আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, ইকুয়েডর ও কলম্বিয়া।
আসন্ন দুই ম্যাচে ব্রাজিলের স্কোয়াড
গোলকিপার : আলিসন বেকার (লিভারপুল), বেন্তো ম্যাথিউস (আল-নাসর), এডারসন মোয়ারেস (ম্যানচেস্টার সিটি)
ডিফেন্ডার : ভেন্ডারসন (মোনাকো), ওয়েসলি, লিও ওরটিস, দানিলো (ফ্ল্যামেঙ্গো), গ্যাব্রিয়েল মাগালহায়েস (আর্সেনাল), মার্কিনিয়োস (পিএসজি), মুরিলো (নটিংহাম), গুইলার্মে অ্যারেনা (আতলেটিকো মিনেইরো)।
মিডফিল্ডার : আন্দ্রে (উল্ভস), ব্রুনো গুইমারেস (নিউক্যাসল), গারসন (ফ্ল্যামেঙ্গো), জোয়েলিংটন (নিউক্যাসল)
ফরোয়ার্ড : নেইমার (সান্তোস), এস্তাভো (পালমেইরা), জোয়াও পেদ্রো (ব্রাইটন), রাফিনিয়া (বার্সেলোনা), রদ্রিগো, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), স্যাভিনিও (ম্যানচেস্টার সিটি), ম্যাথিউস কুনহা (উল্ভস)।